কে এই মিস্ট্রি গার্ল
সাশ্রয় নিউজ ★ কলকাতা : আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপ জ্বর উত্তাপ বাড়াচ্ছে প্রতিদিনই। ৪৮ দিনের এই বিশ্বকাপের এবারের আয়োজক দেশ ভারত। ভারতের একাধিক শহরে পর্যায়ক্রমে চলেছে বিশ্বকাপের আসর। একটি ম্যাচ ইডেন গার্ডেনেও পড়েছে। এরই ভেতর বিশ্বকাপের বেশ কিছু রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। জয় পরাজয়ের নিরিখে এবারের বিশ্বকাপের আসর থেকে বিদায় ঘন্টাও প্রায় বেজে গিয়েছে ক’য়েকটি দলের। তাঁদের ম্যাচ এখন প্রায় নিয়ম রক্ষার ম্যাচ বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে।
এই বিশ্বকাপের আসরে এক মিস্ট্রি গার্লের উপস্থিতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বলা ভাল, শুধু বিশ্বকাপই না, এশিয়া কাপের আসরে ওই রহস্যময়ীর উপস্থিতি মিডিয়ার দৃষ্টি এড়ায়নি। তাঁকে চলতি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে নিয়ে দেশের জাতীয় পতাকা হাতে গলা ফাটাতেও দেখা যায়। আফগানিস্তান পরাজিত হলেও সেই ম্যাচেও আফগান দলকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সমর্থন করতে দেখা যায়। অনেকেরই মত, এটিই একজন প্রকৃত ক্রীড়াপ্রেমীর বৈশিষ্ট্য।
এশিয়া কাপ-এর সব ক’টি ম্যাচে ওঁকে গ্যালারিতে দেখা গিয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরেও তারিয়ে তারিয়েই সেই রহস্যময়ী ক্রিকেট উপভোগ করেছেন।
এখন প্রশ্ন ওঠে, কে সেই রহস্যময়ী? যে ক্রিকেটকে প্রাণ থেকে উপভোগ করেন! টি-টোয়েন্টি বা এশিয়া কাপ, কিংংবা বিশ্বকাপ! সবেতেই ওঁর উপস্থিতি দেখা যায়। শুধু ক্রিকেটই না, তাঁকে দেখা গিয়েছিল ফুটবল বিশ্বকাপের গ্যালারিতেও।
জানা যায়, ক্রিকেটকে তিনি অত্যন্ত ভালবাসেন। তাঁর নাম, ওয়াজমা আইয়ুবী। বছর আঠাশের তরুণী ওয়াজমা একজন সমাজকর্মী হিসেবে জনপ্রিয়। ইন্সটাগ্রামে তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ৬ লক্ষ ৪০ হাজার। জন্ম আফগানিস্তানে। কর্মসূত্রে থাকেন দুবাইয়ে। আফগান নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে ওয়াজমা অত্যন্ত সক্রিয়। কাজ করেন নারী শিক্ষা নিয়ে। জন্মসূত্রে আফগান ওয়াজমা ভারতকে তাঁর নিজের দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে মনে করেন বলে জানান একটি সাক্ষাৎকারে।
ওয়াজমা আইয়ুবী চাকরির জন্যই আফগানিস্তান থেকে সুদূর দুবাইয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন। ওঁর আত্মসম্মান, নিজস্ব স্বাধীনতার পরিচয় পাওয়া যায় এখানেও। ওয়াজমা চাকরি করতে দুবাই গিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু ঠিক করেন, কারও অধীনে তিনি চাকরি করবেন না! ওঁর কাজ হবে স্বাধীন। এবং আরও কিছু মানুষের কর্মসংস্থান করবেন নিজস্ব কাজের জায়গা থেকেই। ওয়াজমা আইয়ুবী ওঁর সেই ভাবনা থেকেই খোলেন একটি প্রশাধনী সংস্থা। ২৮ বছর বয়সী ওয়াজমা স্বাধীন ব্যবসার পাশাপশি, ওঁর পড়াশোনার ব্যাপারেও কর্তব্য বিমূঢ় নন! অব্যাহত রেখেছেন পড়াশোনাও।
এশিয়া কাপ-এর আগে ওয়াজমা আইয়ুবীর একটি এক্স হ্যাণ্ডলে পোস্ট ঝড় তোলে। সেখানে ও-ক’য়েকটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। বিরাট কোহলি-এর নাম লেখা একটি জার্সি পরে ও-লেখেন, ‘যে জার্সি পরে আমি প্রিয় দেশকে সমর্থন করছি, সেই জার্সি কিং কোহলি পরেছিলেন। তিনিই সই করে দিয়েছিলেন। যখন আবার জার্সিতে সই দেবেন, তখনই আমি এই জার্সি বদলাব।’ আসলে ওয়াজমা প্রাক্তন ভারতীয় ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি-এর একজন ডাই হার্ট ফ্যান। আইপিএল-এ ওঁর প্রিয় দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। এখানেই শেষ না, সিনেমার মতো হলেও সত্যি যে, ভারতীয় জাতীয় দলের সদস্য ও আইপিএল তারকা রিঙ্কু সিং-এর খেলা মিস করবেন না বলেই পৌঁছে যান গ্যালারিতে। গ্যালারিতে ওঁর হাতে থাকে নিজের দেশের জাতীয় পতাকা। ভারতীয় বিশেষ করে হিন্দি সিনেমা পাগল ওই আফগান তরুণী।
ওয়াজমার শিক্ষা ও সমাজ নিয়ে কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ক্রিকেট তথা ক্রীড়া নিয়ে আত্মমগ্নতা সকলের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, খেলা নিয়ে এই ভালবাসা খুব কম মানুষের ভেতর দেখা যায়।
ছবি : সংগৃহীত
