



পিনাকী চৌধুরী ★ কলকাতা : হ্যাঁ, রসিক নাগর ঠিক এই নামেই অভিহিত করে থাকেন পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ম্যাসেজিং অ্যাপকে। সমীক্ষা বলছে উন্নয়নশীল দেশ ভারতে বর্তমানে প্রায় ৪০ কোটিরও বেশি মানুষ এই হোয়াটস অ্যাপ ( Whats App) ব্যবহার করেন! আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে ১৯০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে হোয়াটস অ্যাপকে কিনে নেয় মেটা ( meta )। প্রথমে শুধুমাত্র চ্যাট করা যেত। তারপর একে একে ইমোজি (emoji ) এবং স্টিকার স্থান পায়।
_____________________________________________
শিশুদের কথা যদি বলেন তাহলে তো সিংহভাগ শিশুর হাতেই এখন স্মার্টফোন, বিশেষত যখন কোভিড পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে তারা ক্লাস করতে বাধ্য হয়েছিল। বাস্তবে আজ সত্যিই হয়ত উন্নত প্রযুক্তির দৌলতে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়!
_____________________________________________
শুধু কী তাই? Whats app pay -এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা যায় এখানে। হোয়াটসঅ্যাপে রয়েছে শুধুমাত্র দু’জনের মধ্যে কথোপকথন, অর্থাৎ সুরক্ষিত থাকে চ্যাট অথবা ভিডিও কলিং। এমনকী হোয়াটস অ্যাপ নিজেও জানতে পারে না সেই কথোপকথন।
রয়েছে এন্ড টু এন্ড এন্ডক্রিপশন। যদিও বিতর্কের অবকাশ রয়েছে যথেষ্ট। মুহূর্তের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান করতে এই হোয়াটস অ্যাপের জুড়ি মেলা ভার! আর সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষে নাকি সবথেকে বেশি মানুষ এই হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহার করেন। এখানে কোনও ওয়াচ টাওয়ার নেই, নেই নিরাপত্তার কড়াকড়ি! তাই বোধহয় এই হোয়াটস অ্যাপ এক সবপেয়েছির দেশ, বিশেষত বাঙালিদের কাছে ! এখানে যেমন বার্তা আদান-প্রদান করা যায়, ঠিক তেমনই রয়েছে ভিডিও কলিং এর সুবিধা। বস্তুতঃ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ রীতিমত তোলপাড় করেন জনপ্রিয় এই ম্যাসেজিং অ্যাপে। সত্যিই মুহূর্তের মধ্যেই একটি খবর অসংখ্য মানুষকে জানানোর জন্য এই হোয়াটস অ্যাপ অতুলনীয়। কিন্তু গোল বাঁধে তখনই যখন আপনি বা আমি কোনও একটি ফরওয়ার্ডেড ম্যাসেজের সত্যাসত্য যাচাই না করেই পুনরায় ফরওয়ার্ড করে বসি! হ্যাঁ, অসংখ্য মিথ্যা সংবাদ (ফেক নিউজ) এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবং একশ্রেণীর অসাধু মানুষ উদ্দ্যশ্যপ্রণদিতভাবে এই কাজটি করে থাকেন। অতীতে বহুবার দেখা গেছে যে, একজন স্বনামধন্য ব্যক্তির (সেলিব্রেটি) মৃত্যু সংবাদ তাঁর জীবিতকালে সুকৌশলে রটিয়ে দেওয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা সংবাদ। তবে ইদানিং নগ্নতার অনেক কুরুচিকর ভিডিও ঘুরে বেড়ায় এখানে! বাস্তবে হোয়াটস অ্যাপে সেই অর্থে কোনও অনুশাসন নেই। এছাড়াও এই হোয়াটস অ্যাপে অসংখ্য সেলিব্রেটিদের সুপার ইম্পোজ করা ছবি ঘুরে বেড়ায়। অসংখ্য বিকৃত রুচির রঙ্গ রসিকতায় সমৃদ্ধ জোকস্ এখানে প্রাধান্য পেয়ে থাকে। কিন্তু এখানে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের গ্রুপের বার্তা এবং বাণীগুলো যথেষ্ট দৃষ্টিনন্দন ! ইদানিং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং নির্বাচনের সময় তাদের ইস্তেহার এই হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। একবিংশ শতাব্দীর চরম ব্যস্ততার যুগে এখন হাতে হাতে স্মার্টফোন। আর তাই বোধহয় এই ২০২৪ সালে আপনার বা আমার গৃহ পরিচারিকাদের হাতেও রয়েছে স্মার্টফোন! আর শিশুদের কথা যদি বলেন তাহলে তো সিংহভাগ শিশুর হাতেই এখন স্মার্টফোন, বিশেষত যখন কোভিড পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে তারা ক্লাস করতে বাধ্য হয়েছিল। বাস্তবে আজ সত্যিই হয়ত উন্নত প্রযুক্তির দৌলতে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়! আজও হয়ত এই হোয়াটস অ্যাপে গভীর রাতে প্রেম সম্পাদিত হয়! কিন্তু তা পদ্ম পাতায় শিশির বিন্দুর মত ক্ষণস্থায়ী! হ্যাঁ, স্বার্থ ফুরোলেই ’ব্লক’ করে দেওয়াটাই এখন রেওয়াজ। বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, আজও কিন্তু সব তীর্থের সেরা তীর্থ আমাদের এই হোয়াটস অ্যাপ।
ছবি : প্রতীকী
