



অষ্টমীতে ঘুরে এলাম মাওয়া পদ্মার পারে
রু ক সা না র হ মা ন
অষ্টমিতে আমরা চার বান্ধবী বেলা বারোটার দিকে রওনা হলাম ধানমন্ডি থেকে মাওয়ার পথে। বৃষ্টি ভেজা দুপুর, প্রায় আসা-যাওয়া ৫৩.১২ কিলোমিটার পথ।
ঢাকা শহর পার হয়ে হাইওয়ে শেষ প্রান্তের রোডে দুপাশে সারি বাঁধা মহিরুহদের আহব্বানের সবুজের ডানা মেলেছে সবুজের সমারোহ মসৃণ পিচঢালা পথে কখনও বা কাশফুলেরা টানছে মায়াবী আর্কষণে ডাকছে দুলছে বৃষ্টি ও বাতাসের ছন্দে। অপরূপ এই দৃশ্য শহরের যান্ত্রিক জীবনের কোলাহলে থেকে বেরিয়ে আমরা কখনও গল্প কখনও গান গাইতে গাইতে পৌঁছে গেলাম মাওয়া। পদ্মার পারে খাবারের রেষ্টুরেন্ট-এ এসে বসলাম।
আমার উপর দায়িত্ব চাপিয়ে দিল ইলিশ মাছ কেনার। আজ খাওয়াবে সিগমা, গাড়ি শেলী, সেনের যাওয়া, আসা, টোল ভাড়া আমি ও আফরোজা দিব। এক কেজি ওজনের হালকা ডিম ওয়ালা পদ্মার ইলিশ
দাম চাইল পনরোশো টাকা, অবশেষে এগারোশো
টাকায় মাছ কিনে দাঁড়িয়ে থেকে কাটালাম। ওদের খাবার অর্ডার দিয়ে ছবি তোলার পালা শেষ
করলাম। ইতিমধ্যে টেবিলে খাবার এসে গেলে
ওরা মাছ, ভেজে দিল, ইলিশের লেজ ভর্তা বেগুন ভাজি ও ডাল শুকনো লঙ্কা ভাজা দিয়ে আমরা, ড্রাইভার সহ পাঁচজন খেলাম। বিল আসলো মাত্র মাছ সহ সতেরশো টাকা। নদীর বুকে নৌকা বৈঠার ছলাৎছল শব্দ ও ঢেউয়ের মাতনে তার আপন খেয়ালে ছুটে চলছে মুন্সিগঞ্জের দিকে, ইঞ্জিন চালিত নৌকার বিকট, শব্দ কখনও বা তরঙ্গের সুরকে কেড়ে নিচ্ছে।
নদীর পারে ট্রলারে করে এলো রূপালী ইলিশের ঝাঁক সে-এক অদ্ভুত আনন্দের মন-মুগ্ধকর দৃশ্য।
নদীর পার জুড়ে আরও অনেক রুচিসম্মত রেষ্টুরেন্ট
ছোট ছোট টং-এর দোকানে খাটি গরুর দুধের মালাই চা অপূর্ব স্বাদ।
এবার বাড়ি ফেরার পালা মনে হতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। আবার ফিরে আসতে হবে প্রকৃতিহীন এই পদ্মা নদী কাশফুলের সম্মোহন এতটা সময় কাটানোর পর যান্ত্রিক শহরে। আসার সময় আবার আমরা ইলিশ মাছ কিনলাম। এবার বারোশো টাকায় সবাই দুটো করে কিনলাম। ঢাকায় তো এমন টাটকা পদ্মার ইলিশ পাব না, যেগুলো আসে কুমিল্লার মেঘনার ইলিশ হাইওয়েতে উঠে ড্রাইভার গাড়ির গতি বাড়ানোর জন্য গাড়ি থামিয়ে, ফাইন নিয়ে নিল। তবুও বাঁচা গেল কেস করেনি বলে। অবশেষে সন্ধ্যার পর ফিরে এলাম যে যার যান্ত্রিক জীবনে।
