Sasraya News

Saturday, February 8, 2025

American Indian Folktale : আমেরিকান ইন্ডিয়ান লোককাহিনী

Listen

লোক-কথা 🦋

ইনুইট আমেরিকান ইন্ডিয়ান লোক-কথা – উত্তর আমেরিকার আলাস্কা, গ্রীনল্যান্ড এবং কানাডার মেরু অঞ্চল এবং উপ মেরু অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসীদের একটি জাতিভাষাগত গোষ্ঠী হল ইনুইট। দীর্ঘ অন্ধকার শীতের মাস, প্রবল ঠান্ডায় খাদ্য সংগ্রহের জন্য দিনের পর দিন বলগা হরিণ বা সীল শিকারের জন্য অপেক্ষা করে থাকা, মাথার ওপরে রহস্যময় সুমেরু প্রভার রঙিন গতিচঞ্চলতা… এই সমস্ত মিলিয়ে ইনুইটরা এমন এক পরিবেশে বাস করে, যা তাদের মধ্যে বিভিন্ন রোমাঞ্চকর, অতিপ্রাকৃতিক ও রহস্যাবৃত লোক-কথার জন্ম দিয়েছে। ইনুইট উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে ‘অ্যানিমিজমে’র ধারণা। তারা বিশ্বাস করে, পৃথিবীতে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা নদনদী, খালবিল, পাহাড়, মাটি, পাথর সমেত সমস্ত বস্তু, স্থান এবং সমস্ত প্রাণী – সবকিছুরই প্রাণ রয়েছে, অনুভব করার ক্ষমতা রয়েছে, রয়েছে চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতাও! আজ ধারাবাহিক লোক-কথার দ্বিতীয় পর্ব। লিখেছেন : রাখী নাথ কর্মকার

 

 

 

 

নিশীথ সূর্যের দেশে আলোর উৎস-কথা

 

(প্রথম পর্বের পরে) 

আহা, গ্রাম প্রধানের স্নো-লজের ভিতরটা কী উষ্ণ আর উজ্জ্বল! বৃদ্ধ কাক চুপি চুপি দেখল, লজের ভিতর আগুনের সামনে বসে গ্রাম প্রধান আপনমনে নিজের কাজ করছেন। আর একটি ছোট্ট শিশু … গ্রাম প্রধানের নাতি তখন আপনমনে লজের মেঝেতে খেলছে। প্রধানের মেয়ে এবার তার গায়ের পশমের কোটটি খুলে ফেলতেই কোটে লেগে থাকা ধুলোর ছিটে প্রধানের নাতির কানে ঢুকে সুড়সুড়ি দিয়ে দিল! আর তাতেই শিশুটি ভয়ানক ঘাবড়ে গিয়ে কাঁদতে শুরু করে দিল।

-“কী হয়েছে সোনা? কাঁদছো কেন?” গ্রাম প্রধান অবাক হয়ে তার নাতিকে জিজ্ঞেস করলেন।
-“দাদুকে বলো তুমি ‘দিনের আলো’র বল নিয়ে খেলতে চাও!” ধুলোর কণা ফিসফিস করে শিশুটির কানে কানে বলল।
শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে তাই বলল- “আমার ‘দিনের আলো’র বল চাই!”
প্রিয় নাতির কান্না থামানোর জন্য প্রধান তার মেয়েকে ডেকে বললেন- “যা তো মা, ‘দিনের আলো’র বল রাখা থাকে যে বাক্সে, সেটি এখানে নিয়ে আয়।”
মেয়ে বাক্সটি নিয়ে আসতে অতি সাবধানে তা থেকে একটি ছোট উজ্জ্বল বল বের করে গ্রাম প্রধান তাতে একটা দড়ি বেঁধে নাতির হাতে তুলে দিলেন।
সঙ্গে সঙ্গেই ধুলোর কণা শিশুটির কানে সজোরে আঁচড় দিয়ে আবার তাকে কাঁদিয়ে দিল!
-“আবার কী হল, বাছা?” গ্রাম প্রধান এবার উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
-“দাদুকে বলো তুমি বাইরে বেরিয়ে খেলতে চাও!” ফিসফিস করে ধুলোর কণা থুড়ি বৃদ্ধ কাক শিশুটির কানে কানে বলল।
শিশুটি তাই করল, কাঁদতে কাঁদতে বায়না করল সে বাইরে বেরিয়ে খেলতে চায়। অগত্যা প্রধান এবং তার মেয়ে শিশুটিকে শান্ত করার জন্যে বাইরে বরফের মধ্যে খেলতে নিয়ে গেল!
কিন্তু যেই না তারা তাদের স্নো-লজ থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছে, সঙ্গে সঙ্গে ধুলোর কণা কাকে রূপান্তরিত হয়ে গেল। আর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে তড়িঘড়ি তার তীক্ষ্ণ নখরে ‘দিনের আলো’র বলের দড়িটি আঁকড়ে শিশুটির হাত থেকে তা ছিনিয়ে নিয়ে ঝড়ের গতিতে উত্তর দিকে মুখ করে আকাশে উড়তে শুরু করল।
উড়তে উড়তে অবশেষে কাক যখন আবার ইনুইটদের দেশে এসে পৌছল, তখন তার শরীরে আর এতটুকুও জোর অবশিষ্ট নেই। ক্লান্ত, শ্রান্ত, বিধ্বস্ত শরীরে বৃদ্ধ কাক একটা তাঁবুর ওপরে গিয়ে বসতে গিয়েই তার নখর থেকে পিছলে সেই আলোর বলটি মাটিতে পড়ে গেল। আর পড়েই সঙ্গে সঙ্গে তা টুকরো টুকরো হয়ে গেল! আর তারপর সেই টুকরো টুকরো আলোতেই মুহূর্তের মধ্যে ইনুইটদের প্রতিটি ঘর আলোকিত হয়ে উঠল, এমনকি ওদের মাথার ওপরের চির অন্ধকার আকাশও যেন আলোর ছোঁয়া পেয়ে নীল রঙে সেজে উঠে খিলখিলিয়ে হেসে উঠল! (বাকী অংশ আগামী পর্বে)

 

আরও পড়ুন : American Indian Folktale : আমেরিকান ইন্ডিয়ান লোককাহিনী

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment