



সাশ্রয় নিউজ ★ কলকাতা : যেখানে যাদবপুরে মিমি চক্রবর্তীকে সরিয়ে নতুন মুখ সায়নী ঘোষকে প্রার্থী করল তৃণমূল (TMC)। আবার তমলুকেও নতুন মুখ দেবাংশু ঘোষ। এছাড়াও রাজনীতির পাঠ না জেনেও হুগলি লোকসভায় বিজেপি’র অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্টো দিকে, বছরের পর বছর গলা চিরে দলের হয়ে বিশেষ সংবাদ মাধ্যমে এমনকী কোনও ভয়ঙ্কর দলীয় পরিস্থিতির সামনে মোকাবেলা করতে পিছু পা হননি। অথচ দলের এই মুখ্য নির্বাচনের সময় ব্রাত্য রাখা হল একনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখপাত্র শান্তনু সেনকে। এহেন শান্তনু সেন লোকসভায় টিকিট পাননি। এটা বুদ্ধিজীবী মহলে হাস্যকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের কথায়, বহরমপুরে বাইরে থেকে এসে অধীর চৌধুরীর বিপক্ষে ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। অনেকেই পথেঘাটে গুঞ্জন তুলছেন, ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা দাদাগিরি’র রাজা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের যুক্তিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউসুফকে ব্যাট বল ছেড়ে রাজনীতির পাঠ-পড়াতে চলেছেন।
লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পাওয়ায় চাপা ক্ষোভ শান্তনু সেন-এর। তিনি এ-ও বলেন, “১০ মার্চ ব্রিগেডে লোকসভার প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমি যত ডেডিকেশন, যত এনার্জি দিয়ে কাজ করতাম দলের জন্যে, আমি মমতা ব্যানার্জী ও অভিষেক ব্যানার্জী’র নেতৃত্বে তার থেকে দ্বিগুণ এনার্জি দিয়ে কাজ করব। এটা আমার অঙ্গীকার। এটা আমার শপথ। এটা আমার প্রতিজ্ঞা।” শান্তনু বাবু ওই বিশেষ সংবাদমাধ্যমকে আরও জানান, ছাত্র জীবন থেকে তিনি রাজনীতি করেন। সিঁথি অঞ্চলে একদা লাল দূর্গের ভেতরে থেকে তৃণমূল কংগ্রেস শুরু করেন তিনি। শান্তনু বাবু জানান- “আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয় আমি অন্তত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করি। রাজ্যসভায় আমার পার্টিসিপেশন কোনও অংশে কম ছিল না। এবং দল যা বলেছে, এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে আগ্রাসী ভূমিকায় বিরোধিতায় আমি কোনও দিন অগ্র পশ্চাৎ ভাবিনি। সেটা মন্ত্রীর হাত থেকে কাগজ ছিঁড়ে ফেলা বা যাই বলুন, দলের যা নির্দেশ… তার জন্য সাসপেন্ড হয়েছি তাতে কিছু যায় আসে না। আমি দলের অনুগত সৈনিক। আমায় দল যদি বলে চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে দাও, আমি ঝাঁপ দিয়ে দেব।” ড.শান্তনু সেন ক্ষোভ প্রকাশ করেন, রাজ্যসভায় তাঁকে পুনরায় নমিনেশন না দেওয়ায়। যদিও তিনি বলেন, “আমি সেটা মেনে নিয়েছি।” ওই সংবাদ মাধ্যমে তিনি জানান, “১০ মার্চ বিগ্রেডে প্রার্থী ঘোষণা হল। কোনও কারণে দল করতে (প্রার্থী) পারল না।… আমি প্রথম দিন থেকে দল করা একজন অনুগত সৈনিক হিসেবে বলতে পারি, হয়ত রাতে শুয়ে কেঁদেছি, বিছানা ভিজিয়েছি, হয়ত বুকের ভেতরটা উথাল-পাথাল হয়েছে, হয়ত অত্যন্ত কষ্ট লেগেছে। কিন্তু আমি কখনও জ্ঞানত এরকম কোনও কথা বলব না, বা এরকম কোনও কাজ করব না। যাতে এক মুহূর্তের জন্য আমার দল বিব্রত হয়। বা বিরোধীরা অক্সিজেন পায়। আমি… আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হ্যাঁ, আমি পাইনি আমার খারাপ লেগেছে। কিন্তু যেটুকু পেয়েছি সেটাও তো দলের জন্যই পেয়েছি। সুতরাং তার জন্য তো অকৃতজ্ঞ হতে পারব না।” শান্তনু সেন জানান, “দলের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে যেভাবে কাজে লাগাচ্ছেন আমি তখন সেভাবে কাজ করছি। আগামীদিনেও একইভাবে আমি কাজ করে যাব মনে যতই কষ্ট থাকুক। এই বিশ্বাস নিয়ে কাজ করব, এবারে হয়নি, হয়ত সামনেবারে নিশ্চয় দল মূল্যায়ন করবে।”
লাগাও যুদ্ধ ভোটে লাগাচ্ছে আগুন। তৃণমূল প্রকাশ্যে নিজের জঙ্গলেই ভাই বোনের দাবানল। রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে বলেই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন। উল্টো দিকে শান্তনু, সন্দেশখালি, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় -এর সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা সহ একাধিক দলীয় ঘটনা ভোটের আগে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল। -সংগৃহীত ছবি
আরও খবর : Mamata Banerjee : মমতার অনুভব ‘পেছন থেকে ধাক্কা’
