Sasraya News

Wednesday, March 12, 2025

Sasraya News | Sunday’s Literature Special | Issue 25 | July 21, 2024 || সাশ্রয় নিউজ | রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল | সংখ্যা ২৫ | ২১ জুলাই ২০২৪

Listen

সম্পাদকীয়ের পরিবর্তে…

সকলকে গুরু পূর্ণিমার শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা। 

 

 

 

 

 

🍁কবিতা 

 

 

গৌরশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়

মৃত্যুর কাছাকাছি 

 

 

একটা মৃত্যুর কথা তোমায় বলতে চাইছি
যে মৃত্যুর কথা জানার জন্য কোনো
অভিধান দেখারও দরকার নেই
তাহলে নিরীক্ষা কিভাবে হবে
কিভাবে অগাধ জলের সচেতন ঢেউ নিয়ে
সাঁতরে পার হবো এই নদী
অথবা পাড়ের চড়াই ভাঙতে ভাঙতে
ভাবি আর কী চাইতে পারি আমি
এই মৃত্যুর কাছে
একঝাঁক নীলমাছ এপাশ থেকে ওদিকে
জলজ শ্যাওলার দিকে ভেসে চলে যায়
হোলিওট্রোপ বেগুনি গুল্মের গায়ে শুয়ে থাকি একা
আর চোখ বন্ধ
ক্রমশ অতলে যাই
যেতে থাকি মৃত্যুর খেলার কাছাকাছি

★হোলিওট্রোপ★ ঋণ: জীবনানন্দ দাশ

 

 

 

 

 

 

ফটিক চৌধুরী 

রাগ

 

এখন কোনও কিছুতেই রাগ হয় না
রাগ ভুলে গিয়েছে আমার ঠিকানা
এতসব চিঠি আসে, রাগের আসে না
আমি কি প্রতীক্ষা করব?

যেদিন এসব ভেবে রাগ হবে মনে হল
সেদিন রাগ নিজে বয়ে এসে চিঠি দিয়ে গেল।

 

 

 

 

রোকসানা রহমান 

প্রাচীন পৃথিবীর উপর দাঁড়িয়ে

 

 

কাল সারারাত অস্থির ছিলাম যদি সে আসে
কোজাগরী রাতের উষ্ণ বাতাসে দীর্ঘ আঙরাখা কৃষ্ণ পোশাকে নক্ষত্রগুচ্ছমালা নিয়ে
এসেছিল চন্দ্রভুক হাত বাড়িয়ে বললো-চল যাই অন্য কোনখানে।
সে কি এসেছিল ছায়া, পথে, সেই ছায়া খুজঁতে-খুজঁতে দেখি অমানিশা মাঠে
সৌন্দর্যের রাক্ষস, রক্তাত্ত কামনার চোখে
আগুনের লেলিহান শিখা।

ওকে তো খুজিঁনি, কল্পনার মৌনতার সোনালি স্বপ্নের সাজানো নিকেতনে
হতাশ্বাসে দীর্ঘকাল কেটে গেল তৃষিত আত্মা।

তবু আমি নিয়তির মুখোমুখি শান্ত-অবাধ্য
এ হৃদয় কাকে খুঁজে বিস্তৃত অন্ধকারে স্পর্শহীন স্পর্শের প্রাচীন পৃথিবীর উপর দাঁড়িয়ে আজও স্বপ্ন রাঙানো বসন্ত মাতাল হাওয়ায় সেই রাজহংস।

 

 

 

 

অন্তরা সরকার

জীবন প্রজাপতির ডানা

 

দিনের আলোয় কুঁড়ি ফুটেছিল ব্যালকনির টবে,
উঁচু কার্নিশে স্বপ্ন করিডোরে নিষ্পাপ মাধবীলতা,
স্মৃতি বিজড়িত শব্দেরা আদুরে আলাপনে,
বাতাসের গায়ে ভর করে প্রাণের সখ্যতা।

রাতের ক্যান্ডেললাইট মাস্কারা ছুঁয়ে চুম্বনে
পাহাড় ভেঙে ঝরনার থৈথৈ সরোবর,
সমুদ্রের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা লাইট হাউসটা জানে
আচম্বিতে বুকের মাঝে আছড়ে পড়ে ঝড়।

ঝলসানো বিদ্যুৎ থমকে দাঁড়ায় পথ,
সম্মুখে এসে দেখি আর ফিরবার পথ নাই।
যা কিছু সব উজাড় হৃদে নিজেকে ক্ষয় করে,
ধ্বংস কবলিত এলাকায় মুঠো মুঠো কালো ছাই।

এখন, ঘুলঘুলিতে চড়াইয়ের বাসা,
ক্ষীণ আলো বয়ে আসে অক্ষর উদাসীন,
ছেঁড়া ছেঁড়া পাতা, হারানো কথা হাওয়ার অন্তরালে,
সবটাই মেকি আকর্ষণ, অনুভূতিবিহীন।

যা কিছু আমার নয়, তাই নিয়ে কেন ভাবা?
কথা দিয়েও ফিরে গেছে যে, সম্পর্ক শিথিল।
রাতের দুরপাল্লার ট্রেন, অজানা প্লাটফর্ম
জীবন প্রজাপতির ডানা, বহুরুপীর মিছিল।

 

 

 

 

 

মিঠুন চক্রবর্তী

তুমি ছুঁয়ে দাও যদি

 

তোমার আঙুল ছুঁয়ে দেয় যদি আমার শরীর
বুকের ভেতরে বেজে ওঠে জলতরঙ্গ…
আকাশে মেঘ জমে গাঢ়, তুমুল বৃষ্টি নামে

তুমি ছুঁয়ে দাও যদি
এই যে এত জমে থাকা ধুলো, আশ্চর্য জাদুতে
বদলে যায় দোলের আবিরে

আমার সামনে রাত নেই- দিন নেই যেন
চোখের জানালায় অবিরাম দোল খাও
‘তুমি’ নামের আলো

ছুঁয়ে দাও যদি… ছুঁয়ে দাও আমার শরীর
আমি কবেকার পবিত্র বিশ্বাসে রাসমঞ্চ হয়ে উঠি

 

 

 

🍁গল্প 

 

 

একটা বর্ষণমুখর সন্ধ্যা

 

 

বৃষ্টি থামলে তুমি না হয় চলে যেও রতন দা?
রতন কিছুটা চিন্তা ভাবনা করে বলল, আচ্ছা ঠিক আছে, বৃষ্টি থামলেই না হয় চলে যাব।
বৃষ্টি তো আর তাড়াতাড়ি থামার লক্ষ্মণই নেই, ক্রমশঃ-ই বাড়ছে! দেখতে দেখতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, লুডুর গুটি আর দেখা যাচ্ছে না।… গল্প: একটি বর্ষণমুখর সন্ধ্যা লিখেছেন : সুশান্ত কুমার দে

 

 

 

রিমঝিম বৃষ্টি পড়ছেই। বাইরের পরিবেশটা ভ্যাপসা গরমের মাঝেই একটু হিমেল হাওয়া বইছে। উঠোনে কাদা-মাটি, আর নোংরা আবর্জনা একত্রিত হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে ঘরে একাকী ভাল লাগে না, কোথাও যেতে মন চাই না!
দু’পা বাড়ালেই তনুদের বাড়ি। তনুর মা, রতনকে ভাল চোখেই দেখে, কেননা রতন মাঝে মাঝে তনুকে অঙ্ক ইংরেজি দেখিয়ে দেয়
রতনও তনুর মা’কে শ্রদ্ধা ও সম্মান দেয়।
রতনের দুই বছরের ছোট তনু, রতন অঙ্কে এবং ইংরেজিতে বেশ ভাল। ক্লাসে প্রতিবারই ফাস্ট হয়। তনু, রতনের থেকে দুই ক্লাস নিচে পড়ে। সেই কারণেই রতনের কাছে মাঝে মাঝে অঙ্ক ইংরেজিটা শিখতে আসে।
এক জোড়া নাগরা জুতো পায়ে দিয়ে ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে তণুদের বাড়ি গেল রতন।
একটা মিষ্টি হাসি হেসে তনু চোকি পিঁড়িটা সামনে এনে রতনকে বসতে দেয়।
রতন পিঁড়ি খানা এগিয়ে নিয়ে বসে পড়ল। এদিক সেদিক তাকিয়ে রতন বলল, কাকিমা কোথায়, তাকে তো দেখছি না?
তনু বলল, মা একটু দাদুকে দেখতে জালালপুরে গেছে। এখুনি হয়ত এসে পড়বে, দাদু ভীষণ অসুস্থ!
তনু, রতনের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি লুডু খেলতে পার, রতন দা?
রতন বলল, অল্প অল্প পারি।
তনু এ কথা শোনা মাত্রই ঘর থেকে এক জোড়া লুডু বের করে আনল। এই বর্ষার সময় একা একা বসে ভাল লাগে না, এই মাদুরের উপর বোস রতন দা; এক দান লুডু খেলি!
রতন বলল, তোমার মা এসে যদি দেখে, তাহলে তোমাকে তো বকাঝকা দেবে।
তনু বলল, না- রতন দা, তুমি আমার বড় ভাই এর মতো।
তোমাকে আবার কে কী বলবে?
রতন বলল, বাড়িতে এখন কেউ-ই নেই, এই সময়ে আমার থাকাটা উচিত নয়।
রতন উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমি এখন যাই তনু; পরে না হয় আবার আসব।
তনু রতনের হাত টেনে ধরে বলল, তুমি এখন যাবে না; আমার ভীষণ ভয় করবে।
দেখতে পাচ্ছ না, কেমন জোরে বৃষ্টি হচ্ছে, বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, এই অবস্থায় আমাকে একা ফেলে চলে যাবে? তাহলে যাও!
আমার মাও বুঝি এই বৃষ্টি বাদলে আসতে পারছে না।
বৃষ্টি থামলে তুমি না হয় চলে যেও রতন দা?
রতন কিছুটা চিন্তা ভাবনা করে বলল, আচ্ছা ঠিক আছে, বৃষ্টি থামলেই না হয় চলে যাব।
বৃষ্টি তো আর তাড়াতাড়ি থামার লক্ষ্মণই নেই, ক্রমশঃ-ই বাড়ছে!
দেখতে দেখতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, লুডুর গুটি আর দেখা যাচ্ছে না।
বিদ্যুৎ নাই, সেই দুপুরে বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে। তারপর আর এখনও আসেনি।
তার মধ্যেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি, গুড়ুম গুড়ুম শব্দ।
এ অবস্থায় রতন ও বাড়ি যেতে পারছে না।
তাছাড়া তনুর ও ভীষণ ভয় করবে, ওর মা এখনও আসেনি।
এই ভরা বৃষ্টি বাদলে কী করেই বা আসে।
রতন বলল, আমি এবার বাড়ি যাই তনু…
তনু একটু মুখ ভ্যাবাচ্যাকা করে বলল, আমাকে বিপদে ফেলে তুমি চলে যাবে, রতন দা?
বিদ্যুৎ নেই, জোরে জোরে মেঘ ডাকে, আমায় বুঝি ভয় করে না?
রতন ঈষৎ আলোয় একটু তনুর দিকে তাকাল, এত সময় লজ্জায় ভাল ভাবে তাকাতে পারেনি। স্বর্ণা উজ্জ্বল মুখে, হরিণী চোখের একটা মায়াবী প্রতিচ্ছবি যেন ফুটে উঠল।
গায়ে একটা সাদামাটা পাতলা সিনথেটিকের সালোয়ার কামিজ পরে আছে।
রতনের দৃষ্টিটা হঠাৎ করেই তনুর বক্ষ যুগলের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পদার্পণ করেছে। হয়ত এই প্রথম কোনও মেয়ের সুডৌল ফুলে ফেঁপে ওঠা একটা গোলাকৃতি পয়োধর নজরে পড়ল। আবছা আঁধারের আলোয় পাতলা কামিজের ভেতর থেকে যেন উঁকি দিচ্ছে, অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা একটা পাহাড়ের টিলা। রতনের বুকের ভেতরটা যেন একটা ছোট-খাটো ভূকম্পন অনুভূত হয়। তনু বুঝতে পারে, রতন তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তনু তার বুকের উপরের কামিজটা একটু টেনে টুনে সোজা করে দেয়। রতন চোখ টা ফিরিয়ে অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
ঠিক সেই মুহূর্তেই বিদ্যুৎ চমকানোর প্রচণ্ড আলো ছড়িয়ে বিকট শব্দে ঘরের আসবাবপত্র কেঁপে উঠল। তনু ভয়ে থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে রতনের শরীরটাকে জাপটে ধরল। রতনও ওই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে, তনুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। সম্ভবত ঘরের পিছনে তাল গাছে বাজ পড়েছে।
রতন তনুকে জড়িয়ে ধরে আছে। তনুর বক্ষের গোলাকৃতি মাংসপিণ্ডটা রতনের বুকের উপর লেপ্টে যায়।
সঙ্গে সঙ্গেই রতনের হৃদ কম্পনে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ধমণি শিরা-উপশিরাগুলো।
এমন সুখানুভূতির ছোঁয়া আগে কখনও-ই অনুভূত হয়নি! রতনের হাত দু’টো তনুর পৃষ্ঠদেশ দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে রইল। তনু তার চন্দ্র মুখের কাজল-কালো চোখে রতনের বুকের উপর মাথা ঠেকাল।
তনুর দেহে ও তখন মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হচ্ছে।
কেউ কাউকে দৃঢ় বন্ধন থেকে শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছে না। রতন আলতভাবে তনুর মুখে, কপালে, গালে নিজের মুখখানি বুলিয়ে দেয়।
তনু, রতনকে আরও জোরে চেপে ধরে, আহ্ কি সুখ!
জীবনের সকল ভয়-ভীতি, দুঃখ-কষ্টটা কোথায় যেন এক মুহূর্তেই হারিয়ে গেল। কোনও কিছুর একটা ধৈর্য্য সহ্যের সীমা থাকে, অথচ যৌবনের সাগর যদি একবার ক্ষেপে যায়, তাহলে চারদিকে প্লাবনের সৃষ্টি হয়। অন্তরের দূষিত পদার্থগুলো সহজেই নিষ্পেষিত হয় না। দানবীয় মাংসাশী প্রাণীরা যেমন এক টুকরো মাংসের ঘ্রাণে পাগল হয়ে যায়, ঠিক তেমনিই যৌবনের জৈবিক চাহিদার কাছে কোনও অপরাধ, অপ্রীতিকর পরিস্থিতিও রেহাই পায় না। হঠাৎ বৃষ্টি থেমে আসে, বিদ্যুতের বাতিগুলো জ্বলে উঠল। বাড়ির আশেপাশে লোকজন চেঁচামেচি, হৈচৈ করছে।
কোথায়, কোথায় বাজ পড়ল, সবাই তাকিয়ে-তাকিয়ে, ঘুরে ফিরে দেখছে!
ওই নারকেল গাছের মাথাটা দুমড়ে-মুচড়ে গেছে, হয়ত নারকেল গাছের মাথায় বাজ পড়েছে! এমন সময় তনুদের ঘরের দরজায় ঠকাস্-ঠকাস্
শব্দ হল। এই ঝড় বাদলে ভিজতে ভিজতে হয়ত তনুর মা এসেছে। তনু ও রতনের নিগূঢ় প্রেমের বেষ্টনী সহসা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।
রতন পালাবার পথ খুঁজছে, তনু পিছনের দরজাটা দেখিয়ে দেয়।
ওদিকে তনুর মা, জোরে, জোরে তনু, তনু বলে ডাকতে লাগল। ভাবছে মেয়েটা একা একা নিশ্চয়ই ভয়-টয় পেয়েছে।
আরে, তনু মা, তাড়াতাড়ি দরজা টা খোল…
তনু দরজা খুলেই দেখল, মা, ঝড় বাদলে কাপড়-চোপড় ভিজে ছপছপ অবস্থায় দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
ততক্ষণে রতন পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেল। তনুর মা আবছা আলোয় দেখতে পেল, কে যেন বাড়ির পিছন দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে।
তনুর মা, চিৎকার করে বলে উঠল, আরে তনু, পিছনের লাইটটা তাড়াতাড়ি জ্বেলে দে তো। মনে হয় বাড়ির আশেপাশে চোর ঢুকেছে। তনু বুঝতে পারে, রতন দা, হয়ত পালিয়ে যাচ্ছে।
তনু বলল, মা, তুমি আগে ভিজে কাপড়টা পাল্টে ফেলো, পরে চোর-ঠোর দেখা যাবে।🦋

 

 

 

🍁কবিতা 

 

 

 

 

বিশ্বজিৎ মণ্ডল 

গ্রহান্তর

 

প্রাসঙ্গিক ছিল তবুও বলিনি
বলাটা জরুরি ছিল তোমাদেরকে
বুক পকেটে ভুল ওষুধের স্ট্রিপ্ট নিয়ে আমাকে আজ হাঁটতে হয়
শরীরে দুর্গন্ধময় সস্তা জামাটা শহরের গন্ধকে চেনে
তাই স্বভাব বসত ছাড়তে পারিনি তাকে
কিন্তু যাকে ছাড়তে চাইনি সেই ছেড়ে গেল অবলীলায়
এভাবেই সমাপ্ত অরণ্যের মধ্যে হয়ে গেছি,বনচারি

বুকের মধ্যে গজিয়ে ওঠা অদৃশ্য ছত্রাকে
প্রতিদিন খেলছে পরজন্মের আহবান
চাতুর্য ছেড়ে কত দিন নেমেছি রাস্তায়,পথ শূন্য
ব্যভিচারী হাটুরের মত ছুটে গেছি ভিন্ন বাইপাসে
যেখানে আমার না বলা কথারা,ঘুমিয়ে পড়েছে
কোন ভিখারির সস্তা ঝোলায়…

প্রাসঙ্গিক বলে এখন বলছি,
এইবার নেমেছি রাস্তায় ভিন্ন গ্রহের খোঁজে

 

 

 

 

 

রঞ্জনা রায়

মন ছোটে অজানায়

 

 

সম্পর্কের মাঝে ধুলো জমে
চন্দন কাঠ জীর্ণ হয়
দু’টো শালিকের অবান্তর কিচিমিচি।
মন দেওয়া নেওয়ার নৌকাটি টলমল
বানে ভেসে যায় উত্তাল রাতবাসর
সহজিয়া মৃদুল খেলায় চাপা দীর্ঘশ্বাস
একাকী তারা কাঁদে অজানা অন্ধকার।
দুদিনের এক্কাদোক্কা, দুদিনের মনস্তাপ
পায়রার সাদা ডানায় মেঘের অঙ্গীকার।
তোমাকে পাবো বলে গড়েছি বালিঘর
জ্যোৎস্নার টিপছাপে ওঠে যে শুধুই ঝড়।
তার ছেঁড়া দোতারায় সুরগুলি থমকায়
মন আজ নিরুপায়-
মন ছোটে অজানায়!

 

 

 

 

দীপান্বিতা রায় সরকার

বিষাদ সারেঙ্গী

 

তখনও ঝুম কুয়াশার লক্ষ্য ভ্রমে,
বিষাদে সারঙ্গীটা বাজায় কে?

যে এসেছে, জোয়ারের নীরবতায়
অবাধ্য অন্ধকারে মানিয়েছে।

গোপনে সব দরজার গল্প ঘরে,
থেমেছে আশপরশির শব্দ তাগা।

যে শুধু রোদ চেয়েছে সঙ্গোপনে
তাকে কি আর কিছুক্ষণ যায় না রাখা?

এই যে প্রজ্ঞা চিতা, আসলে তো লেলিহান,
যদিও বাঁচার লড়াই আগুনের সমান সমান।

তবুও ভাটার সময়, সেতুটার অমেঘ মায়া
ফুলের সজ্জায় তখন আমায় সাজায় কে?

বিষাদময় সারেঙ্গী তার আভোগ ভাগে
সবকটা সুর অন্ধকারে হারায় যে।

 

 

 

 

সুমিত্রা পাল

সংহত প্রেরণা

 

জাগরী চেতনা আর
স্বপ্নের মাঝামাঝি মিনারে
নীলাভ নিরালা,
গাঢ় নিঃশ্বাসে উত্তাল জলরাশি
নির্মাণ এবং বিনির্মাণের অস্থির কারুকাজ;

আঁধারে জমে আরও আঁধার। আঁধারের গভীর হতে
ধীরে, দু’দণ্ডের তরে
বালুচরি রাত্রিকে দূরের আলোকবর্তিকা পাঠায়
সংহত প্রেরণা।

প্রবহমান জীবন তিরতির করে কাঁপে প্রগাঢ় ছন্দে,
অমৃতময় ভালোবাসার ব্যঞ্জনায়।

 

 

 

 

 

 

বাবলি সূত্রধর সাহা

প্রান্তিক প্রশাখা

 

কিছুটা মন খারাপের আলো লেপটে আছে
বিবর্ণ মেঘের মতো!
ছাইরঙা আকাশের গায়ে
আর কতটা সময় পেলে
তাকে ছেড়ে দেওয়া যাবে
বরাবরের মতো…
সুবিন্যস্ত সুখের সীমানা অতিক্রান্ত হলেই
ঝেঁপে আসবে অনাত্মীয় কোন দুঃখ!
আর যন্ত্রণার শাখা-প্রশাখারা আঁকড়ে ধরে প্রান্তিক কোন জন্মকথা।

 

 

 

 

 

মমতা রায় চৌধুরী

ইচ্ছেরা মরে ইচ্ছেরা জাগে

 

 

ভাঙা-গড়ার জীবন তটে
মনের গভীরে ইচ্ছেরা জাগে
চেতনার স্তর রঙিন হয়
আর ধর্ষণের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে
মিথ্যে আশ্বাস মাথা মাথাচাড়া দেয়
ভালবাসা হয় রক্তাক্ত

এখন বন্ধুত্ব বিশ্বাস কফিনে পরিণত
ইচ্ছেরা মরে অবিরত
বাঁচার অনন্ত চাহিদায়
বারবার ইচ্ছেরা জাগে
প্রভাতী সূর্যের আলোয়
ভেসে ওঠে রূপ রস গন্ধ…

এই দ্বাদশীর চাঁদ উঁকি দেয় আকাশে
মনের ভেতরের স্বপ্নরা হামাগুড়ি দেয়…
ইচ্ছেরা জাগে আকাশটাকে ছুঁতে

 

 

 

 

 

 

আতিয়ার রহমান 

বর্ষা

 

 

শীতল চুমোয় রাত্রি ঘুমোয়
বর্ষা ঝরা নির্ঝরে
খোলস ছেড়ে শামুক হাঁটে
সরস মাটির নির্ভরে।

মন নাচানো রুমঝুমাঝুম
পাতার নাচন দলবলে
সুর তুলে গায় ডাহুক কেকা
স্রোত বয়ে যায় কলকলে।

উজান ছোটে টেংরা চেলি
নতুন শাড়ির লাল বেশে
মুচকি হেসে প্রেম সোহাগির
অধর বসে গাল ঘেঁষে।

ব্যাঙের পিঠে ব্যাঙ সওয়ারী
কোরাস গানের ঢং তালে
বৃষ্টি ভেজায় ইঁটের পাঁজর
ভূতের গলি, বংশালে।

বর্ষা স্বরূপ ঢাকায় কী রূপ!
ধুম বরষণ যদি হয়
ময়লা জলের ডুব সাঁতারে
সড়কগুলোই নদী হয়।

বর্ষা তবু কাল অপরূপ
কদম কেয়ার হাসিতে
গ্লানির কাব্য ধুয়ে দিতে
সচল জলরাশিতে।

 

 

 

 

 

🍁ধারাবাহিক উপন্যাস || পর্ব : ৮ 

 

 

অনেকটা গল্পের মতো 

 

 

প্রভাবতী দেবী অমৃতর হাতটা ধরে নিয়ে বলেছিলেন, ‘কই যাবা? অমু আইজ তমার কোথাও যাওন লাগবো না। বসো! আইজ তোমারে কইতেই অইবো, তুমি আমার থিকা কি লুকাইতাসো? মনে করো আমি কিসু বুঝি না?’ অমৃত মায়ের তুমি সম্বোধনেই বুঝেছিলেন, ‘সামনে সমূহ বিপদ’ তবুও শেষ চেষ্টা করেছিলেন, ‘কি লুকামু তোমার থিক্যা?… সুজিত চট্টোপাধ্যায় -এর ধারাবাহিক উপন্যাস ‘অনেকটা গল্পের মতো’। আজ অষ্টম পর্ব। 

 

 

 

 

নেকদিন পর বাড়িতে আবার একটা শিশুর আগমনে প্রভাবতী দেবী যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেলেন। অনিন্দ্য দত্ত তাঁর পরিবার নিয়ে বালিগঞ্জ প্লেসে উঠে যাবার পর যে শারীরিক স্থবিরতা ও মানসিক অবসাদ একটু একটু করে ঘিরে ধরছিল, অভাবনীয়ভাবে সেসব কোথায় হারিয়ে গেল। গুচ্ছের কাঁথা, জামা, সোয়েটার তৈরি করতে এবং মেজোর ঘরের নাতিকে দু’চোখ ভরে দেখতেই কখন সকাল, দুপুর, বিকেল রাত্রি গড়িয়ে যায়, বুঝতে পারেন না প্রভাবতী। গোপালের যত্ন-আত্তিতে কি কিছু ফাঁকিবাজি হচ্ছে? প্রভাবতী দেবী স্বপক্ষ যুক্তি খুঁজে নেন। তিনবেলা গোপালের নিত্য সেবা দেবার সময় নিজেই বলেন, ‘ও গোপাল! রাগ করসো নি! রাগে না বাপ! তমার ভাই হইসে, দেখো নাই! তুমি তো হক্কলই জানো, তয় এমনে মুখ গোমড়া কইরা থাও ক্যান?’ প্রভাবতী তাঁর গোপালের সঙ্গে বড় একাত্ম বোধ করেন। পরিবারিক সদস্যের মতোই তাঁকে বোঝাতে চান কি প্রচণ্ড সময়াভাবে ভুগছেন উনি!
প্রতিমা দেবী ঠাকুরঘরের বাইরে থেকে শোনেন আর হেসে কুটোপাটি হন। সেই হাসির রেশ নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে অমর্ত্য কলেজ হোস্টেল থেকে বাড়ি এলে।
জানো অমু! (হ্যাঁ, এখানেও দু-চার কথা না বললে ঠিক খোলসা করে বলা হয় না। উত্তর কলকাতার শোভাবাজারের মেয়ে প্রতিমা প্রথম দিকে ‘ছোট ঠাকুরপো’ সম্মোধনেই ডাকতেন অমর্ত্যকে। সেখানেও প্রভাবতী দেবীই বলেছিলেন, ‘অ বৌমা! অমু তো তোমার ভাইয়েরই লাখান, অরে তুমি নাম ধইরাই ডাকবা।’ প্রতিমা ও অমর্ত্যর মধ্যে চোখে চোখে দুষ্টুমির আভাস দেখা গিয়েছিল। কারণ, অমর্ত্য তার কিছুদিন আগেই প্রতিমাকে বলেছিলেন, তুমি সাদা কালো ছবির যুগের মতো এমন ‘ছোট ঠাকুরপো’ বলে ডাকো কেন? নাম ধরে ডাকতে পারো না?’ প্রতিমা সেইসময় অমর্ত্যর হাতে একটা মৃদু চিমটি কেটে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে কখনও অমর্ত্যর ঘরের দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে মৃদু স্বরে, ‘অমুউ টুউকি’ বলে পালিয়ে এসেছেন। দুই পরিবারের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির মধ্যে কিছু অন্তর থাকায় প্রতিমা খুবই সন্তর্পণে থাকতেন তাঁর চলা বলায়। প্রভাবতী দেবী বলার পর দু’জনেরই যেন “প্রাণে খুশীর তুফান” উঠেছিল) তোমাদের গোপালের বোধহয় ‘এঁড়ে’ লেগেছে, এতদিন একা মায়ের আদর যত্ন পেয়ে আসছিল তো, এখন তোমার ভাইপোকে সহ্য করতে পারছে না। দু’জনের মধ্যে প্রভাবতী দেবী ও তার গোপাল নিয়ে, ছেলে প্রীতমকে নিয়ে অহেতুক গল্পে অনেক সময় কেটে যেত। প্রভাবতী দেবীর নকল করে কথা বলতেন প্রতিমা তাঁর ও অমুর অবসরে, ‘অ গোপাল! দ্যাখসো নি আমার নাতিডারে? কতা কও না ক্যা? রাগ করসো নি?’ তারপর দু’জনেই হেসে গড়িয়ে পড়তেন।
একটু একটু করে বেড়ে উঠছিল প্রতিমা ও অমৃতর সন্তান প্রীতম। কালেভদ্রে অমৃত বাড়ি আসতেন। প্রভাবতী দেবীর চোখে পড়েছিল অমৃতর চোখের অস্থিরতা। মায়ের চোখকে ফাঁকি দিতে পারেননি অমৃত দত্ত। মুখে ও অবয়বে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেও অক্ষম হয়েছিলেন অমৃত দত্ত। এছাড়াও, বাড়িতে আসা-যাওয়া এবং থাকার সময় ক্রমশঃ কমে আসছিল। কখনও ব্যবসার মন্দা, কখনও শরীরের খারাপের অছিলায় প্রভাবতী দেবীর সামনে থেকে সরে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন অমৃত। পেরেছিলেন হয়ত প্রতিমার কাছে নিজেকে আড়াল করতে, আদপেই পেরেছিলেন কী, অমৃত নিজেকে আড়াল করতে প্রতিমার কাছে? নাকি প্রতিমাই ছেড়ে দিয়েছিলেন অমৃতকে, তাঁর পরিবর্তে প্রীতম ও অমর্ত্যকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন তার নতুন খেলনাবাটির সংসার। অমৃত পারেননি মায়ের কাছে নিজেকে আড়াল করতে। এভাবেই একদিন নিয়মিত মায়ের কাছে বিদায় নিতে যাবার সময় শুনেছিলেন প্রভাবতী দেবীর বজ্র নির্ঘোষ কণ্ঠের ডাক, ‘মা আসছি’ বলে প্রণাম করে উঠে দাঁড়াতেই প্রভাবতী দেবী অমৃতর হাতটা ধরে নিয়ে বলেছিলেন, ‘কই যাবা? অমু আইজ তমার কোথাও যাওন লাগবো না। বসো! আইজ তোমারে কইতেই অইবো, তুমি আমার থিকা কি লুকাইতাসো? মনে করো আমি কিসু বুঝি না?’ অমৃত মায়ের তুমি সম্বোধনেই বুঝেছিলেন, ‘সামনে সমূহ বিপদ’ তবুও শেষ চেষ্টা করেছিলেন, ‘কি লুকামু তোমার থিক্যা? মজার স্বরে বলেছিলেন, ‘তোমার গোপাল সেবা দিসো?’ প্রভাবতী দেবী বলেছিলেন, ‘অমু! কথার প্যাচাল পাইড়ো না। মনে রাইখো তুমি আমার প্যাটে হইসো, আমি তমার প্যাটে হই নাই। কিসের ব্যবসা করতাসো? হ্যার আগা মাথা কিসুই বুঝি না। তমার ঘরে থাওনের সময় নাই, বৌমার সাথে কথা কইতে দেহি না, পোলাটারে আদর করসো আইসা অবধি? ব্যবসা কইরা কি করতাসো হ্যার কুনো হোদ বোধ নাই। সংসারে এই কয়মাসে কয়ডা ট্যাহা দিসো? কয়ডা খেলনা আনসো পোলাডার লেইগা?’ বউডারে কি দিসো তুমি? সরম লাগে না? হ! তমার লাগে না, কিন্তু আমার লাগে। বউডার মুখের দিকে তাকাইতে পারি না। ক্যান জানো? হ্যারে আমি দেইখা আনসি। হ্যায় বালো ঘরের মাইয়া, তাই অহনও মুখ বুইজ্যা পইড়া আসে।’
একসঙ্গে অনেক অভিযোগের গুলি ছোঁড়ার পর যেন আবার তাঁর রিভলবারে ম্যাগাজিন থেকে গুলি ভরে নেন প্রভাবতী দেবী। বলেন, ‘কথা কও অমু, চুপ কইরা থাইকো না।’ অমৃত তার ছেলেবেলায় যেমন মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে মায়ের বকুনি শুনতেন, তেমনই শুনতে থাকেন (ক্রমশঃ) 🦋

 

 

 

🍁কবিতা 

 

 

 

 

 

জাহানারা বুলা 

উপেক্ষা

 

আমাকে উপেক্ষা করার সাধ্য নেই বলেই-
এ আর এক উপেক্ষা তোমার
চোরা চাহনিতে নিসর্গ শোভা দেখার ছলে-
আমাকে-ই যে দেখ সেও তো জানি।

অভিমান, ক্রোধ যতো যা-ই থাকুক না কেন
চলে যে যাবে না তা বিশ্বাস করি
তাই দূরত্বে ভয় নেই আর
মাঝখানে যে নদী বয়ে চলেছে বিভক্তির
তার সমস্ত দেহ জুড়ে ঢেউয়ের লহর-
আমাদের বরং বেঁধে’ই রেখেছে এ যাবৎকাল।

ভুলে যাওয়া কঠিন
আমার প্রতিটি বলা কথা তোমাকে যেভাবে-
আন্দোলিত করেছিলো শুরুতে-
তা এখন চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে চলেছে
অযথা-ই ভান কোরে আছো অপ্রেমিকের!

তোমার প্রসিদ্ধ প্রেম একদিন আমাকে উত্তীর্ণ  করেছিল
নক্ষত্র থেকে আলো পেড়ে আনতে
চেয়ে দেখ আমার মুঠো থেকে জ্যোৎস্না গলে পড়ে
এই উজ্জ্বলতায় পথ ভুল করি না তুমি অবধি পৌঁছে যেতে
এ’ভাবেই প্রতিটি মুহূর্ত ছুঁয়ে থাকি তোমাকে।

দূরে’ই থাকো
অনুভূতির তরঙ্গ দিয়ে সংযুক্ত করে নেবো প্রত্যহ
আমার ভালোবাসা অপটিক্যাল ফাইবারকেও হার মানায়
দূরত্ব ছুঁয়ে দেয় অনায়াসে
তার’ই স্পর্শে অহর্নিশ ভেসে উঠো তুমি
লাজুক সব অনুভবে।

 

 

 

 

গোলাম কবির

আবারও স্বপ্ন দেখে মন

 

 

বিষণ্ণ মেঘের দল ডানা মেলে
ধেয়ে চলে সে কোন সুদূরে, কে জানে!

একটা নির্ঘুম পুরো জ্যোৎস্নাময় রাতের
স্নিগ্ধতা বিশাল অজগরের মতো
গিলে খেয়ে প্রগাঢ় অমাবস্যার রূপ দিয়ে
হৃদয়ে ফোটায় বেদনার নীল ভাটফুল!

তারপর রাতজাগা পলাশ রঙা চোখে
তাকিয়ে দেখি আবার সূর্য পুবের আকাশে
উঁকি দিয়ে মেঘের দাপট ছিন্ন করে
তেজদীপ্ত ভাবে নতুন জেগে ওঠা
চরের মতো তার অস্তিত্ব ঘোষণা করছে।

জীবন নদীর ঢেউয়ে ভেসে যায়
রাতজাগা ক্লান্তি ও অবসন্নতা!
বেঁচে থাকার যুদ্ধে বিজয়ী সৈনিকের
মতো দৃপ্ত পদচ্ছাপ রেখে যাই
কবিতার নরম শরীরে, মেধার মননে।

যদিও জীবন আমার সাথে সাপলুডু
খেলা করে কখনো কখনো একদমই
খেয়ে ফেলতে চায় তবুও
সেই খেলার মইয়ে চড়বে বলে
আবারও স্বপ্ন দেখে মন!

 

 

 

 

শারাবান তহুরা 
কষ্টের গহীনে 

 

আমি তোমার চোখে এঁকেছিলাম সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ
সূচে সুতো ভরে সেলাই করেছি শব্দহীন কষ্ট জাদুকরি তোমার উপলব্ধি পেইন্ট করেছি তোমার বুকের মানচিত্রে,
কবিতার গল্পে অভিমানী প্রেম বোঝেনি শরৎ
জোছনা প্লাবিত মন আমার
তোমার ভাষাহীন শহরে
খোঁজে হারিয়ে যাওয়া বসন্ত
আমার নক্ষত্র চোখ ছুঁয়ে গেলো
সবুজ প্রান্তর।
মধ্যে রাতে জোনাক জ্বলে
ঘোর লাগা চোখে
পোড়া মাটির মায়ায় দীর্ঘঃশ্বাস আমার।
যতই কাছে টানি, ততই নদীর
স্রোতের মতো দূরে হারিয়ে যা-ও
প্রকৃতির চেয়েও সুন্দর তোমার
ভালবাসা!
এখনও ভাসিয়ে নেয়, আমায়।

 

 

 

 

সানি সরকার 

শ্মশান 

 

এখন শ্মশানের লাইনে আমার দেহ
আরেকটু পরেই চুল্লির আগুনে মিশে যাব

বাইরে একদল শ্মশানযাত্রী
আমার প্রাণশূন্য দেহটিকে
করতালি দিয়ে বিদায় জানাবেন

প্রতিদিন এখানে এমনই কত মরদেহ আসে
পঞ্চভূতে মিশে যায়

 

 

অঙ্কন : প্রীতি দেব ও আন্তর্জালিক

 

 

এক নজরে 👉 সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল-এর জন্য উপন্যাস, কবিতা (একধিক কবিতা পাঠালে ভালো হয়। সঙ্গে একটি লেখক পরিচিতি। গল্প, প্রবন্ধ, গদ্য, পুস্তক আলোচনা (আলোচনার জন্য দুই কপি বই পাঠাতে হবে), ভ্রমণ কাহিনী। লেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকতে হবে। অবশ্যই কোনও প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমনকী কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বা পোর্টালে পূর্ব প্রকাশিত লেখা পাঠাবেন না। ই-মেল করে লেখা পাঠান। ই-মেল আই ডি : editor.sasrayanews@gmail.com

 

বাংলা সাহিত্যের আরেক ঠিকানা 

সাশ্রয় নিউজ 

সবার জন্য সবসময় 

 

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment