



সম্পাদকীয়…
কবিতা মানব জন্মের একটি বৃহ্ত্তম অধ্যায়। এর মাধ্যমেই প্রেমের প্রকাশ। সঙ্গীতের প্রকাশ। ভালোবাসার আর এক নাম যদি মানুষ হয় তাহলে এটাও ঠিক শত্রুর আরো এক নাম মানুষ।
ধর্ম গতি খোঁজে। স্তগিত নয়। তাই মহাকাশের ধর্ম মহাকাশ পালন করে। তারও একজন রক্ষাকর্তা আছে। তেমনি প্রতিটি মুহূর্ত, চক্র, সঙ্গ, প্রতিষ্ঠানের সফলতম রক্ষাকর্তা আছে। প্রতিটি জীবনেরও রক্ষাকর্তা আছে। প্রতিটি অনু পরমাণুরও রক্ষাকর্তা আছে। এখানেই কোন বিপরীত মুখী ক্রিয়া কাজ করলে সমস্যা সৃষ্টি হয় ফলে গতি হারায় এবং ধ্বংস বা মৃত্যু ঘটে।
প্রতিটি প্রাণের শ্বাসের গতি রয়েছে। গতি ভিন্ন রকম। অর্থাৎ আলোচনার অর্থ ভিন্ন। যদি আমরা মানব সমাজের উপর জোর দিয়ে বলি তাহলে দেখা যাবে যে মানুষ একটি প্রাণী। তার শ্বাস প্রশ্বাসের গতি প্রকৃতি ভিন্ন। এই শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্রিয়া সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারলে মৃত্যুর ঘরে ঢোলে পড়া থেকেও দ্রুত সুস্থতা কামনা করা যায়।
তো কবিতারও নিজস্ব গতি রয়েছে। সংগঠন নয় মনমিশ্রণ দ্বারা গঠিত কল্পনা শক্তির উৎস হয়ে মানব মস্তিষ্ক দ্বারা একটি মানব হৃদয়ের বিশেষ কলা। তাহলে গতিকে প্রবাহিত করতে হলে প্রতিটি সম্পর্কের মধ্যে একটি শক্তি কাজ করে। সে নেগেটিভ বা পজেটিভ হতে পারে। 🍁
🌱কবিতা
অরুণ কুমার চক্রবর্তী
দিতে পারি, তুমি নেবে
দিতে পারি, অনন্ত প্রেমের সুধা
বিশ্বকালীন টান
শেকড়ের তীব্র আকর্ষণ
মধুমতী বালিকা-বিলাস
মাতৃত্বর অমোঘ সম্মান
অথবা
মাতৃত্ব নয়
অনন্ত প্রেমলীলারসে জারিত প্লাবিত রাধিকার হ্লাদিনী স্বরূপে অপরূপা, তুমি নেবে, অনুপমা
তুমি কি সক্ষম
তুমিই কি শেষ যোগ্যতমা !!!
শঙ্খ মিত্র
দুপুর
কথারা উপেক্ষিত নীরবে ভাব বিনিময়,
প্রস্থান জুড়ে ছিল অপলক বিস্ময়।
হাতে ধরা অভিমান টেবিলে ছড়ানো,
এত ভিড়ে অলক্ষ্যে স্মৃতিটুকু কুড়ানো।
পড়ে পড়ে ধুলো জমে ছেঁড়া ডাকটিকিটে,
বোধহয় নামটা রয়ে গেছে বাদামি খামের পিঠে।
প্রচ্ছদ কথা বলে, মলাটেরও আছে ভূমিকা,
অপেক্ষায় নখ খোঁটে ফরাসি নায়কের প্রেমিকা।
স্টেশন চত্বরে কবিতা আলাপ বড় ঝক্কি,
বৃষ্টিতে ভেজা দিন, বর্ষাতি দেবে কি সাক্ষী!
কত দিন, কত মাস, বছরের অঙ্ক পেরলো,
সে হিসাব তোলা থাক, বেহিসাবি হওয়া ভালো।
গোলাম কবির
এখন সেই নদীও নেই বলে
এখন সেই নদীও নেই বলে
তার কাকচক্ষু জলও নেই!
নদীটার চওড়া বুকে এখন সবুজ ধানের
চারাগাছ বাতাসে দোল খায়
ঢেউ এর মতো, কোথাও আবার
তরমুজ ক্ষেতে ভরে গেছে –
যেখানে এখন একটু দূরত্ব বজায় রেখে
ট্রাফিক পুলিশের মতো একঠাঁই
দাঁড়িয়ে আছে কিছু কাকতাড়ুয়া!
আহা! এখন সেই নদীও নেই বলে
তার পাড়ে খেয়াঘাটের ব্যস্ততা নেই!
সেখানে এখন ভীষণ শূন্যতার
শোকসভায় সভাপতির আসনে
বসে আছে ষণ্ডামার্কা একটা সারমেয়!
এখন সেই নদীও নেই বলে
সেখানে কলসি কাঁখে জল আনতে
দেখাই যায় না গাঁয়ের লাজুক বধুকে !
সেখানে এখন কচুরিপানা ভর্তি
স্বল্প জলের ওপরে কাদামাটি
গায়ে মেখে জিয়লমাছ ধরতে
বৃথাই চেষ্টা করে যাচ্ছে কিছু উদোম
লিকলিকে শরীরের কিশোরেরা।
ওদের চোখে মুখে একরাশ হতাশাসহ
তীব্র ক্ষুধার্তের ভাব প্রতীয়মান হচ্ছে!
আহা! এখন সেই নদীও নেই বলে
আমারও মন ভালো নেই!
এখন আমার স্মৃতির অ্যালবামে কেবলিই
মরে যাওয়া সেই নদীটার দীর্ঘশ্বাস
তোলপাড় করছে ওর বিগতযৌবনের
রমরমা দিনগুলো নিয়ে!
আমার হৃদয়ে এখন
সেই নদীটার জন্য হু হু কান্নার জল
থৈ থৈ করছে বানভাসি শ্রাবণদিনের মতো!
অর্পিতা আচার্য
অপেক্ষা
জানি না কেন এভাবে দাঁড় করিয়ে রেখেছ আমাকে। এই খচ্চর সম্পৃক্ত শহরে বৃষ্টির জলে ধুয়ে যায় স্মৃতি। এখনও কোকিল ডাকে কামাক্রান্ত, তোমার নীলচোখে এখনও আহ্লাদ? মৃতবোধি আলোর বলয়ে কবিতার আয়ু তেরাত্র মাত্র, এই কথা জেনে প্রতিরাতে ট্রেন ছোটে দিগন্তের দিকে। গুটিকয় মানুষের সম্মিলিত উষ্ণঘন শ্বাস। কেঁপে ওঠে পায়রা বুক। প্রতিবার নিশান নাড়িয়ে তবু বিদায় জানাই।
মাতৃসম্ভবা আমি অপেক্ষায় থাকি
দুই হাতে মুঠো করে শ্লোকবীজ নিয়ে
আমাদের সন্তানেরা কোনোদিন ফিরে আসে যদি
উম্মে ফারহিন
মোহনার চরে
কে যেন উপন্যাস লেখে অযাচিত অরন্যে
খেলে যায় হালকা ঢেউ মোহনার চরে
কে যেন রাস্তা খোঁজে ভেসে যায় সুখ
জলেতেই কল্প লেখা তীরেরই ফসল
শৌভিক রায়
শখ আর সখ্যতার পর
শখ আর সখ্যতার পর
থেকে যায় কিছু মুগ্ধ হরিণ,
নবীন সবুজ কচি ঘাস,
ব্যান্ডমাস্টার আর একটেরে চিল!
তবু তুমি অসীম ভাবো…
ভাবো ওপারে রয়েছে সব,
বাকি শুধু যাওয়া
আবদুস সালাম
লোনা হাওয়ায় পাল তুলে মানবিক নৌকা
একঢেরী শীত পেরিয়ে হলুদ চাদরের স্বপ্ন দেখি
হাঁটি দীর্ঘ কুয়াশা মাড়িয়ে সমুদ্রের দিকে
লোনা জলে চুবিয়ে নিই নিজেকে
সোনালী ডানার চিলের চোখে জীবনানন্দের জীবন সংগ্রাম ভীড় করে
ধর্মের রাস্তায় খেলা করে মায়া
আর
মায়ারক্তের ফোয়ারায় ভিজে যুগের হৃদয় অবলম্বনহীন ছায়া পাহারা দেয় বিবেকের ঘরবাড়ি
লোনা হাওয়ায় পাল তুলে দেয় মানবিক নৌকা-
প্রেম
বিকেল রঙের রোদ ছায়া ফেলে পাথুরে চাতালে
স্বপ্নেরা প্রজাপতি উড়লে বেজে উঠে বিরোধী নূপুর
চুপিসারে পরিচয় মাখা হাত ছুঁয়ে দেয় আত্মহারা নৌকা
আত্মপক্ষ সমর্থন ছুটে যায় ভাটার টানে
পড়ে থাকে অস্তিত্ব সংকটের ক্রিয়াশীল নিঃসঙ্গ মেঘ
🌻ধারাবাহিক উপন্যাস /৩
অনেকটা গল্পের মতো
বাইরে তাকিয়ে দেখলেন ঝড় উঠেছে। সেই ঝড়ের কিছু অনুসঙ্গস্বরূপ জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েছে দক্ষিণের নিম ও বেলগাছে এখনো রয়ে যাওয়া কিছু শুকনো পাতা আর ধূলিকণা। অনঙ্গ উঠে জানালা বন্ধ করবেন নাকি বছরের প্রথম কালবৈশাখীর ঠাণ্ডা হাওয়া গায়ে মেখে আনন্দ নেবেন, সেটা ভাবার সুযোগটুকুও পেলেন না। আজ ধারাবাহিক উপন্যাসের তৃতীয় পর্ব। লিখলেন : সুজিত চট্টোপাধ্যায়
৩.
গল্প যখন বলতেই বসেছেন তখন গল্পের চরিত্রগুলোর একটা পেন্সিল স্কেচ এঁকে দেওয়া উচিৎ, এমন বোধে উনি প্রথমেই পরিচয় করিয়ে দিতে বসলেন ছোটকাকা অমর্ত্য দত্ত এবং প্রভাবতী দেবীর সঙ্গে…। সময়ে সব চরিত্রের সঙ্গেই পরিচয় করাবেন। এটাও কি তার অবচেতনের নির্দেশ? নিজে পরিবারের ছোটো হওয়া সত্ত্বেও সেইভাবে কোনওদিন গুরুত্ব পাননি, কিন্তু কর্তব্যের ক্ষেত্রে তাঁকেই সংসারের জন্য অনেক বেশি মূল্য দিতে হয়েছে। যাক সেসব কথা। সেসব এখন ইতিহাসের ছেঁড়া পাতার মতো, চৈত্রের ঝরা পাতার মতোই অর্থহীন। শাস্ত্রের আপ্তবাক্য … “শনৈঃ শনৈঃ পর্বত লঙ্ঘন ” মাথায় রেখে তিনি তাঁর মতো করে লিখতে শুরু করলেন।
ছোটকাকা অমর্ত্য দত্তের মধ্যে একটা অসম্ভব ভালো গুণ ছিল। মানুষের বয়স অনুযায়ী বন্ধুত্ব করতে পারতেন, দু’পক্ষেরই ব্যক্তিত্বের এতটুকু ক্ষতি না করেই। খুব ছোটবেলায়, তার কৈশোরে কাগজ দিয়ে ফুল পাখি জীব জন্তু তৈরি। করা শেখা এই ছোট কাকার কাছেই। অনঙ্গ শিখেছেন অরিগ্যমি, দাবা খেলা খুব ছোট বয়সে এই অমর্ত্য দত্তের কাছেই। মানুষের মনের মধ্যে একটা পাকাপাকি আসন করে নেবার অদ্ভুত ক্ষমতা দেখেছেন অনঙ্গ ওঁর মধ্যে। শিবপুর থেকে পাশ করা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অমর্ত্যের মধ্যে অনঙ্গ দেখেছিলেন একজন সত্যিকারের শিক্ষিত মানুষকে। কার সঙ্গে কী বিষয়ে কথা বলা উচিৎ, সেই ঔচিত্যবোধ অনঙ্গও বোধহয় শিখেছিলেন তাঁর কাছ থেকেই। প্রতিবার এসে বাড়ির কাজের মাসীর সঙ্গেও সম্ভ্রম রেখে তার পরিবারের কথা জিজ্ঞাসা করতেন। দিদিকে বলতেন… “কই রে পেঁচি! দাদা যে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা তোর গান শেখার জন্য খরচ করছে, কি শিখলি আয় দেখি “! অনিচ্ছাসত্ত্বেও হয়তো ভর দুপুরে দিদিকে হারমোনিয়াম বের করে বসতে হতো। তবলা টেনে নিয়ে গানের সঙ্গে বেশ দক্ষতার সাথে ঠেকা দিতেন। এইভাবেই একটা সম্ভ্রমপূর্ণ সখ্যতা গড়ে উঠেছিল দু’টি অসমবয়সী মানুষের মধ্যে। সেই কৈশোরে অমর্ত্য দত্ত হয়ে উঠেছিলেন অনঙ্গ সেনের আইডল। সেদিন তাঁর গুনের প্রতি শ্রদ্ধা থেকে তাঁর গুণগ্রাহী হয়ে উঠলেও পরে অনঙ্গ বুঝেছিলেন…আসলে তার অবচেতনে একটা ক্ষিধে ছিল, তার বাবার বৈমাত্রেয় ভাইয়েরা কোনওদিনই তাকে ভাইপোর ভালবাসা বা স্বীকৃতি দেয়নি বলেই হয়ত জ্ঞান হতেই অমর্ত্যকে সামনে পেয়ে তাঁকেই পরজীবী লতার মতো জড়িয়ে ধরে বেড়ে উঠছিলেন অনঙ্গ।
তাই যখন অনঙ্গ সেনকে ছোটকাকা কাছে ডেকে বলেছিলেন…” তোকে পাশে পাবো তো “! তখন ফিতে দিয়ে মাপলে বুকের ছাতির মাপ যে কিঞ্চিৎ বেড়ে থাকবে, সেটা সহজেই বুঝেছিলেন অনঙ্গ। একটা শ্লাঘাবোধ কি উঁকি মেরেছিল তার নিজেরই অজান্তে? কারণ, না-হলে আর মা পরে কথায় কথায় বলবেন কেন… “ছোটকাকা একটু দায়িত্ব দিয়েছে বলে ভেবো না, মাতব্বর হয়ে পড়েছো “!
হঠাৎ একটা দমকা হাওয়া ঘরের মধ্যে ঢুকে সব এলোমেলো করে দিল। অনঙ্গ সেন এতক্ষণ ডুবেছিলেন তাঁর শৈশবে, কৈশোরে এবং যৌবনের দ্বারপ্রান্তে। বর্তমানে ফিরতে একটু কি দেরী হয়ে গেল? বাইরে তাকিয়ে দেখলেন ঝড় উঠেছে। সেই ঝড়ের কিছু অনুসঙ্গস্বরূপ জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েছে দক্ষিণের নিম ও বেলগাছে এখনও রয়ে যাওয়া কিছু শুকনো পাতা আর ধূলিকণা। অনঙ্গ উঠে জানালা বন্ধ করবেন নাকি বছরের প্রথম কালবৈশাখীর ঠাণ্ডা হাওয়া গায়ে মেখে আনন্দ নেবেন, সেটা ভাবার সুযোগটুকুও পেলেন না। শুনতে পেলেন মাঝের ঘর থেকে সোমা বিরক্তির সঙ্গে গজগজ করছেন…” উঠে জানলাটাও তো একটু বন্ধ করতে পারো “… তার স্বরধ্বনি ক্রমশঃ কাছে আসছে শুনে অনঙ্গ আবার চেয়ারে গা এলিয়ে দিলেন। সোমা ঘরে ঢুকে একইভাবে চেয়ারে বসে থাকতে দেখে জানলার দিকে এগিয়ে যেতে যেতেই বাক্যবাণে বিদ্ধ করতে থাকলেন…” ঘরের জানলা গুলো বন্ধ করার জন্যও কি তোমাকে বলতে হবে? দেখছ, ঘরে নোংরা ঢুকছে, তবুও কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। অদ্ভুত মানুষ তুমি। রিটায়ার হওয়া থেকে দেখছি এই এক চেয়ার টেবিল চিনেছো। সত্যি তুমি একাই রিটায়ার করেছ! পাশাপাশি তোমার বন্ধুদের তো দ্যাখো, সেসব দেখেও কি তোমার কোনো হেলদোল হয় না “?
অনঙ্গ বুঝলেন সত্যিই তাঁর ভুল হয়েছে, বাইরের দিকে তাকালেই হয়ত বুঝতে পারতেন আকাশে মেঘ করেছে, ঝড়ের পূর্বাভাষ। তখন যে তিনি নিজের অতীতের ভিতরে ঢুকে একটার পর একটা ঘরের দরজা পেরিয়ে অনেক দুরে চলে গেছেন। ফিরতে সময় লাগবে বৈকি। কিন্তু মুখ থেকে তাঁর নিজের অজান্তেই বেরিয়ে এলো…” হ্যাঁ, ঠিক বলেছো। রিটায়ার করেছি তো জানলা বন্ধ করা, ছাদ থেকে কাচা জামা কাপড় তোলা, বাথরুমের দরজার ছিটকিনি সারানো এসবের জন্যই “। বলেই বুঝলেন, বড়ো ভুল হয়ে গ্যাছে।
অনঙ্গ সেনের এখন এই হয়েছে এক মুশকিল… যখন যেখানে যেটা বলার নয়, সেটাই বলে ফেলেন, যদিও বোঝেন তিনি সবসময়ই ঠিক বলছেন না। সোমার দিকে তাকাতেই দেখলেন, সোমা অবাক দৃষ্টিতে তাঁর দিকে হতভম্বের মতো তাকিয়ে আছে। সে দৃষ্টিতে কি নেই! ভর্ৎসনা, কিছু বলতে না পারার কষ্ট, অনঙ্গ সেনের প্রতি তার ফল্গুধারার মতো ভালবাসা! পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি সোমার দিকে তাকিয়ে এক কলি গান গেয়ে উঠলেন….
“যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙলো ঝড়ে,
জানি নাই কি তুমি এলে আমার ঘরে। যে রাতে… “।
তারপরই বললেন…
“সখী! দেবে কি
এক কাপ চায়ে
আমার গলাটা ভিজিয়ে “…। 🍁 (ক্রমশঃ)
🌻কবিতা
উত্তম চৌধুরী
কার্যক্রম
আমার যাবার আগে বোধ ও বুদ্ধি যায়।
অজস্র পাহারায় জেগে থাকে বিগত দিনের
কার্যক্রম। যেন কেউ দুর্যোগের রাত কাটিয়ে
ছুটছে প্রসন্ন আলোর দিকে। একে একে
খুলতে চায় চোখ বোজা বিবেকের
গিঁট।
চোরকাঁটা মাঠের এক কোণ টেনে বসে আছি।
তাঁবুর মতো জীবন। শুধু দরকারেই এ-পথ
মাড়ানো। না হলে থোড় বড়ি খাড়া,
খাড়া বড়ি থোড়।
বর্ণশ্রী বকসী
গণতন্ত্র
পুজোর আমেজে সেজে ওঠে দেশ ও দশ
ভোটের মাঠে সকলেই প্রতিদ্বন্দ্বী-
কৃষকের লাঙলের আঁচড়ে মাটির ঊর্বরতা
কিছুটা কল্পবৃক্ষের আদলে দর্শনের প্রভাব।
অজন্মা শিশুটির জন্য অপেক্ষমাণ যে জীবন
গণতন্ত্রের সাধকেরা তার সীমানা বোঝে না,
আভূমি প্রণত সূর্যের রশ্মিরেখায় আঁকা
অনন্ত তমসা ছিন্ন করার সূত্রাবলী আর
নবীন ফসলের আঘ্রাণ, তবু সাজোয়া শেষে
আনত মুখমণ্ডলে জেগে থাকে ধ্বংসের চিহ্ন।
জনগণ এগিয়ে যায় সংকট এড়িয়ে সংঘবদ্ধ
আলোর বিচ্ছুরণ আর বিদ্যুতের ঝলসানি
প্রতিকারহীন টুকরো কোলাজে নতুন রঙ ঢালে
আগন্তুক সময়ের অবয়বে বোহেমিয়ান রূপ।
অরুণাভ ভৌমিক
দাও
কে যেন কবিতা ছুঁড়ে দিচ্ছে সাদা মেঘের পর্যটন বৃত্তান্তে
মেঘের স্তব্ধতা চাইছে উৎসব পরিক্রমা
নিথর ছিটকিনি খুলে বেরিয়ে আসছে নতুন কবিতা
পাখির বাসার অন্ধকার হাতে নিয়ে
টুকি তো মলয়ের বউয়ের নাম
তার ব্রিফকেসে সামুদ্রিক ভালবাসা
সে কেন আমাকে দেবে
মিনিটে মিনিটে মিসড কল
যখন জীবন রচিত হচ্ছে অনুপ্রাস ছন্দে
এতসব দেখে শুনে অতিথি বৎসল একজন
পেরিয়ে যাচ্ছে তিনশ পঁয়ষট্টি দিন
পেরিয়ে যাচ্ছে নম্রগর্ভ এবড়ো থেবড়ো এপিসোড
নোটেশনে চুমুক আছে তার, এপিটাফে সমুদ্দুর
শব্দ করে গড়িয়ে দেওয়া চুমু
অঙ্কন : প্রীতি দেব ও আন্তর্জালিক
এক নজরে 👉 সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল-এর জন্য উপন্যাস, কবিতা (একধিক কবিতা পাঠালে ভালো হয়। সঙ্গে একটি লেখক পরিচিতি। গল্প, প্রবন্ধ, গদ্য, পুস্তক আলোচনা (আলোচনার জন্য দুই কপি বই পাঠাতে হবে), ভ্রমণ কাহিনী। লেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকতে হবে। অবশ্যই কোনও প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমনকী কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বা পোর্টালে পূর্ব প্রকাশিত লেখা পাঠাবেন না। ই-মেল করে লেখা পাঠান। ই-মেল আই ডি : editor.sasrayanews@gmail.com
