



আবদুস সালাম। মূলত ৯০দশকের কবি ! প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘নিস্তব্ধতা এসে কথা কয় ‘ (২০১৭) ‘হলুদ পাতার মতো মৃত্যু ঝরে’ (২০১৮) ‘অলীক রঙের বিশ্বাস ২০২০’ যৌথ কাব্যগ্রন্থ মেঘের ‘রঙশীত’ প্রথম খণ্ড দ্বিতীয় খণ্ড ২০১৯ ও ২০২০ সালে প্রকাশিত। নেশা : বইপড়া আর লেখা। একটু আধটু কাছে পিঠে ঘুরতে যাওয়া। পূষন পত্রিকার তরফে পুরস্কার (নিস্তব্ধতা এসে কথা কয়) কাব্যগ্রন্থের জন্য সম্মাননা এছাড়াও অনেক জায়গায় সংবর্ধনা ও সম্মাননা। লেখেন এ সময়ের বহু পত্র-পত্রিকায়। সাশ্রয় নিউজ-এর আজকের পাতায় তাঁর গদ্য…
মাহে রমজান শেষে খুশির ঈদ
আবদুস সালাম
রমজান শব্দটি বাংলা নয় আবার আরবী ভাষাতেও এর অস্তিত্ব নেই। তবে এটি প্রাধান্য পেল কেমন করে সন্দেহ জাগে। এটি সম্ভবত ফার্সী কিংবা উর্দু ভাষা থেকে এর উৎপত্তি। আরবি রমাদান থেকেই মূলত রমজানের জন্ম। সমুচ্চারিত শব্দটি রূপ পাল্টে পাল্টে রমজানে রূপান্তরিত হয়েছে এটা নিশ্চিত রূপে বলা যেতে পারে। রমজানের আরবি শব্দ সিয়াম।আর সিয়াম মানে নিজেকে পোড়ানো , শুদ্ধ করা।এর সঙ্গে আরও একটা শব্দ এর সঙ্গে উচ্চারিত হয়,(মাহে রমজান)। মাহে শব্দের অর্থ মাস, অতএব মাহে রমজান হলো রমজান মাস।
______________________________________________
আসলে রোজা মানে দেহের রোজা, মনের রোজা, মাসব্যাপী কঠিন অনুশীলনে নিজেকে নিযুক্ত রাখা। বেশি বেশি করে ইবাদত করা, কোরআন পড়া,ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা।কম কথা বলার অভ্যাস গড়ে তোলা, খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকা।
______________________________________________
রমজান শব্দটি এসেছে আরবী রময ধাতু থেকে ।রময অর্থ দহন বা পোড়ানো।এমাসে রোজা রাখলে মানুষের মাঝে যে সকল অমনুষ্যত্ব,পাপ আছে তাকে পুড়িয়ে শেষ করে দিতে পারি। নিস্পাপ মানুষে পরিণত হওয়ার শিক্ষা এমাসের রোজা পালনে অর্জিত হয়। সারা মাসের উপবাস পালনকেই রোজা বলা হয়ে থাকে।এ মাসে রোজা রাখলে সৃষ্টিকর্তার নিকট থেকে অনেক অনেক বরকত আমাদের উপর নেমে আসে।
পুরো মুসলিম বিশ্বে একে যে নামেই ডাকি না কেন এটা অত্যন্ত বরকতের মাস ফজিলতের মাস, সংযম ও ত্যাগের মাস, ইবাদতের মাস। সারা পৃথিবী জুড়ে পালিত হয় এই মাসের উৎসব। এই উৎসব একান্তে নিজের। লোক দেখানোর কোনো অবকাশ এখানে নাই। ঘরের ভেতরে ঢুকে খাবার খেয়ে নিলেও কেউ দেখার নাই, স্নানের সময় এক কুল্লী পানি গিলে নিলেও কেউ দেখার নাই। একান্তে ব্যাক্তিগত ভাবে আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে পরীক্ষা দিই। শতরকম অসুবিধা মাথায় নিয়ে রোজা পালন করি হাসিমুখে।
এমাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই মাসে পবিত্র জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহান্নামের দরজা। পবিত্র কোরআন এবং হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে এ মাসেই কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে পৃথিবীতে ,আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। এই মাসেই রোজা আমাদের উপর অবশ্যই করনীয় বলে ফরমান জারি হয়েছে (ফরজ)। এমাসে একটি ভালো (জনহিতকর) করলে সত্তরটি ভালো কাজের সমান নেকি পাওয়া যায়। বহু হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ (আয়াত পর পর ধাপে ধাপে ) এমাসের থেকেই অবতীর্ণ হওয়া শুরু হয়েছিল।
প্রতিটি রমজানের সূচনা হয় সেহেরী খাওয়া র মাধ্যমে আর শেষ হয় ইফতারের মাধ্যমে। সুরা বাকারার ১৮৭নম্বর আয়াতে বলা আছে আর (তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিস্কার না দেখা যায় । অতঃপর রাত পর্যন্ত রোজা রাখো )।রোজা কে ইংরেজিতে বলে fasting করা। ইফতার কে বলে. Fasting break । এ মাসে আমরা দু’টো কথার বেশ প্রচলন দেখি। একটা সাহরী বা সেহেরী অপরটি ইফতার বা এফ তার। সকালের (ফজরের) আজান শুরু হলেই সব রকমের পানাহার থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে হয়, তার মানে সেহেরী খাওয়া আজকের মতো বন্ধ। মাগরিবের আজানের সাথে সাথেই শুরু হয় রোজা ভঙ্গের পালা মানে ইফতার করা। ইফতার করাটা বেশ মজার।সবাই, বিশেষ করে বাড়ির সকলের মিলে উপবাস (রোজা) ভঙ্গ করে আবার ফিরে আসি নতুন ছন্দে। সারা রাত ধরে আর কোনো বাধা নিষেধ রইল না স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে।
রোজা মানে সেহেরীতে পেটপুরে চব্যচষ্য করে, আর ইফতার -এর সময় বিভিন্ন রকমের ফলমূল সহযোগে পেট পুরে খাওয়ার একটা উৎসব বলা যেতে পারে। এর নাম রোজা রাখা নয়। আমরা যদি নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামানায় রোজার সেহেরী দেখি তবে দুটো খেজুর খেয়ে সেহেরী সমাপ্ত করেছেন। কখনও কখনও একটি খেজুরকে দু’জনে ভাগাভাগি করে খেয়ে পানি (জল) পান করে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ পড়েছেন। এমাস হল পুরোপুরি সংযমের মাস,ত্যাগের মাস। অথচ আমরা দেখি এমাসে খাওয়া দাওয়ার উপরই জোর দিচ্ছি বেশি বেশি করে। আমরা দিন দিন রোজা রাখার মূল স্পিরিট থেকে সরে যাচ্ছি। আসলে রোজা মানে দেহের রোজা, মনের রোজা, মাসব্যাপী কঠিন অনুশীলনে নিজেকে নিযুক্ত রাখা। বেশি বেশি করে ইবাদত করা, কোরআন পড়া, ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা। কম কথা বলার অভ্যাস গড়ে তোলা, খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকা। সারা বছরের অর্জিত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া (প্রার্থনা) করা, আগামী দিনগুলো যাতে নিস্পাপ হয়ে অতিবাহিত করতে পারি তার জন্য কড়োজোড়ে সৃষ্টিকর্তার ( আল্লাহর) কাছে দোয়া করা। এমাসের আরও একটি জরুরি করনীয় বিষয় হলো তারাবীর নামায আদায় করা। ফিতরা আদায় করা । রমজানের শেষে সওয়ালের চাঁদ উঠলে (ঈদের চাঁদ) ঈদগাহ ময়দানে জামায়াতের সঙ্গে নামাজ পড়া। ঈদ মোবারক জানানো। অলঙ্করণ : প্রীতি দেব
এক নজরে 👉 সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল-এর জন্য উপন্যাস, কবিতা (একধিক কবিতা পাঠালে ভালো হয়। সঙ্গে একটি লেখক পরিচিতি। গল্প, প্রবন্ধ, গদ্য, পুস্তক আলোচনা (আলোচনার জন্য দুই কপি বই পাঠাতে হবে), ভ্রমণ কাহিনী। লেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকতে হবে। অবশ্যই কোনও প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমনকী কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বা পোর্টালে পূর্ব প্রকাশিত লেখা পাঠাবেন না। ই-মেল করে লেখা পাঠান। ই-মেল আই ডি : editor.sasrayanews@gmail.com
