



কবি ফাল্গুনী চক্রবর্ত্তী -এর জন্ম ত্রিপুরার কৈলাসহরে। শিলং নর্থ ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটি থেকে দর্শন ও হিন্দিতে এম.এ। মেঘালয় রাজ্য সরকার পরিচালিত একটি স্কুলের শিক্ষকতা করেন। বাংলা, হিন্দি ও উর্দু ভাষায় লেখালেখি করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ‘লেডি আফ হোপ’, শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে ‘সংঘমি দ্য এজ’ প্রভৃতি নানা পুরস্কারে কবি ফাল্গুনী সম্মানিত হয়েছেন। ওঁর সংকলিত কাব্যগ্রন্থ : ম্যাগনোলিয়া (বাংলা কবিতার বই), আলবেলী (উর্দু হিন্দী গজলের বই), মেঘ উড়াল (বাংলা কবিতার বই) ও খুবলেই শিলং (কবিতার বই)। সাশ্রয় নিউজ-এর আজকের পাতায় রইল কবির গুচ্ছ কবিতা। 🍁
ফাল্গুনী চক্রবর্ত্তী
অন্য বসন্ত
আজ আরেকটি বসন্ত
বাগানে ফুলের সুবাস ম ম করছে
আবীর ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রকৃতির অ্যালবাম
নিছক সময়ের সাইক্লিং দাবি রাখছে ভালবাসায়
ঘন ক্ষিরের পাতিল, আমরা কেউ-ই অক্ষত নই
অথবা চিরন্তন
তাই হয়ত বসন্তের প্রতিটি চিঠি যত্নে রাখা
যত্নে রাখা উৎসবে হারিয়ে যাওয়া মিছিলের মুখ
বাতাসের পোট্রেট মেজেণ্ডা রং
ঘুড়ির মতন জীবনের উড়ান
মেহগনি রঙের পৃষ্ঠা জুড়ে কবিতা
কবিতায় অনুভূতির পাগলপণ একদিন
একদিন চলে যেতে হয়
জার জার হয় জীবনের সব আয়োজন
রঙের পিচকারি ভরা উন্মুক্ত খেলার মাঠ
কিশোর-কিশোরীর স্বপ্নে ভাপা উত্তাল সমুদ্র-সৈকতে জলখেলা
আর ছেলেবেলায়
শিশির ভেজা ঘাসের উপর পায়ের শিহরণ
দিনের শেষে পাইন গাছের তলায়
চুপিচুপি নিবিড় আলিঙ্গনে বন্ধ চোখ মিটমিট
ছাতায় বৃষ্টির টপটপ
আকাশী রঙের-আকাশে তারাদের অবাধ বিচরণ
জীবন খুঁজে জীবনের লমহাত
কিন্তু তাই যদি অবধারিত
তবে ফিরে না আসার বসন্ত
যেন নিয়ে আসে ফাগুনের আঝোর
কবর হয়ে উঠুক রঙের পীঠস্থান
অস্তরাগ
একটি সাদা তুলতুলে পায়রার
কথা ভাবছি ধোয়াশার স্রোতে উড়াল
লেইটলুমের ছলকিয়া ঘিরে
স্টিয়ারিংএ হাত ঝড় তুলে
খামোশির কুয়াশা লেনে চোখডুবি অজানা
পাখির কলরবে পাহাড়তলির রহস্য
আঁকে জংলী পাতার ছাউনি ঘিরে
কাঠের ঘর বাড়ি আমায় ডাকে
নদী পাড়ায় বর্ষা জলের উপচে পড়া
যেন নাচ শিখায়
বেলাশেষে রোদের
কুঁড়েঘরে সন্ধ্যা নামে
নিয়মের ফেরারীতে সহজ নয় পোষ মানা
আলতো আদরে জড়িয়ে পড়া
পাহাড়ী ছলকিয়া
ভাঁজে নীল জুড়োয় পশ্চিমের আকাশ
মন রেকাবীতে পশমিনা হয় আদিবাসী
রস জরিদার সীতাহারে রোদ
কুয়াশার বুটিক মেলায় মিলায় দিনের
কোরিওগ্রাফ
চাষ
ফেরার কোন প্রতিশ্রুতি নেই
ঘুংঘরালো রাস্তার বুনোফুলে
চাষ হয় মনমাস
বৃষ্টির রোজ নতুন পোষাক রেকাবিতে পাইন ঢালছে শিলং
সাদা পরীর লিবাস ছুঁয়ে
মিলিয়ামে রোদের ক্ষীণ ও
বুজে আনে মেঘালি চমক
সন্ধ্যা নামে প্রকৃতির নিয়ম
পাখি উড়ে যায় ঘরে
অন্ধকারের কোন ভাষা নেই
ভাসা ভাসা
ভাষা তোমার দু’টি চোখ
অদৃশ্য এলিফেন্টের সোঁ সোঁ চিরে
বেলা শুরুর অনুরোধ লিখে
সংগ্রাম
বরফগুলো শিলং পাহাড় সাজায়
আর শূন্যতার ঝাঁপি একটি
সবুজ মাঠের প্রান্তে একা দাঁড়িয়ে
চারপাশে ঘাসফুলগুলোও বেজান
বেলা জড়িয়ে এলে স্বপ্নের
হাট তুলে আগামী দিনের কোন
প্রতিশ্রুতি নেই সংরক্ষণের স্রোতে
অল্পসংখ্যকের সাঁতার থেমে আছে
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চোখে সময়ের
রিফুতে কোন শ্রাবণ মেঘজিৎ এর
কথা বলে না
তবু নিঃশ্বাসের সরগম গেয়ে
যায় প্রীতি রাগ গুলে গুলজার
প্রকৃতির অনন্ত ছমছম
অলঙ্করণ : প্রীতি দেব
🦋সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী। আলোচনার জন্য পাঠাতে হবে দুই কপি বই। ই-মেল : editor.sasrayanews@gmail.com
