



সাশ্রয় নিউজ ★ মথুরা : মথুরা (Mathura) শহরের একজন অটোচালকের নামে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। সূত্রের খবর, ওই অটোচালক নিজেকে হিন্দু পরিচয় দিয়ে হিন্দু মেয়েদের টার্গেট করত সে। বিনা পয়সায় অটোতে ঘোরার লোভ দেখিয়ে সম্পর্ক গড়ে তুলত। এবং তারপর সেই বিশ্বাসভঙ্গ করত ভয়ানক কৌশলে। স্থানীয় কোটওয়ালি (Kotwali) থানার অন্তর্গত মাছলি মহল্লা (Machhli Mohalla) এলাকার বাসিন্দা ইমরান (Imran) নামের ওই যুবককে শেষমেশ পুলিশ গ্রেফতার করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি-প্রচারের অভিযোগে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ইমরান ছিল পুরোদস্তুর পরিকল্পিত ছকে চলা এক অপরাধী। দীর্ঘদিন ধরেই সে তার অটোচালকের পরিচয়কে ঢাল করে মথুরা শহরে মেয়েদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার উপায় খুঁজছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সে হিন্দু নাম বলে নিজেকে পরিচয় দিত, যাতে মেয়েদের সন্দেহ না হয়। এরপর অটোতে বিনা ভাড়ায় যাত্রী পরিবহণের ছুতোয় সে মেয়েদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করত। একবার নম্বর পেয়ে গেলে শুরু হত নিয়মিত যোগাযোগ এবং বন্ধুত্ব তৈরির চেষ্টা। সূত্রের খবর, পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য, ইমরানের পরিকল্পনা ছিল অন্তত ৫০ জন হিন্দু মেয়েকে এই প্রতারণার ফাঁদে ফেলার। ইতিমধ্যে ২৩ জন মেয়েকে তার জালে ফাঁসিয়েও ফেলেছে বলে মথুরা পুলিশ জানিয়েছে। অভিযুক্ত কৌশলে মেয়েদের বিশ্বাস অর্জন করে, সময়ের সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় করত এবং পরে গোপনে আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি তুলত। এসব ছবি এবং ভিডিওকে সে ব্যবহার করত ব্ল্যাকমেল করার অস্ত্র হিসেবে।তবে তার অপরাধ থেমে থাকেনি ব্যক্তিগত স্তরেই। নিজের ‘সাফল্যে’ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ইমরান শেষপর্যন্ত নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে মেয়েদের সঙ্গে তোলা আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করা শুরু করে। সেখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে এই বিষয়টি। ভিডিওগুলি ভাইরাল হতে থাকে ও কিছু পোস্ট স্থানীয় হিন্দু সংগঠনের নজরে আসে। তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর সংগঠনের পক্ষ থেকে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। এরপর, মথুরার (Mathura) পুলিশ প্রশাসনও দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নেয়। এসপি শ্লোক কুমার (Shlok Kumar) জানিয়েছেন, “মহিলাদের ছবি বিকৃতভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এই অপরাধকে হালকাভাবে দেখা হবে না।”
বর্তমানে অটো চালক অভিযুক্ত ইমরান জেলে রয়েছে। এবং পুলিশ আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য তদন্ত চালাচ্ছে বলে জানা যায়। সূত্রের খবর, পুলিশ খতিয়ে দেখছে, ইমরানের সঙ্গে কোনও সংঘবদ্ধ চক্র বা স্যোশাল মিডিয়া মাফিয়া জড়িত আছে কি না। পাশাপাশি, যেসব মেয়েরা তার ফাঁদে পড়েছিল, তাদের কাউন্সেলিং এবং আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। অন্যদিকে, এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তোলে শহরাঞ্চলে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে। যেখানে বিশ্বাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে এমন ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র। ইমরানের মতো অপরাধীরা সমাজে কতটা ছদ্মবেশে চলাফেরা করছে, তা জানতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও সচেতন হওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন বহু অভিভাবক। এই ঘটনার পর মথুরার সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চরম উদ্বেগ এবং ক্ষোভ। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতেই ইমরানের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে অনুরোধ করা হচ্ছে প্রশাসনের প্রতি, অ্যাপ ভিত্তিক অটো বা রিকশাচালকদের তথ্য যাচাই আরও জোরালো করা হোক, যাতে সাধারণ যাত্রীরা নিরাপদ বোধ করেন। উল্লেখ্য যে, অপরাধ যত পরিকল্পিতই হোক, অবশেষে সোশ্যাল মিডিয়ার ভুল ব্যবহারে নিজের ফাঁদে নিজেই ধরা পড়েছে ইমরান। এই ঘটনা সমাজকে সতর্ক করে একটিই বার্তা—বিশ্বাস করবার আগে যাচাই করা প্রয়োজন, আর অপরাধ যত সূক্ষ্মই হোক, কোনও না কোনও ছিদ্রপথ দিয়ে তা প্রকাশ পাবেই।
ছবি : প্রতীকী
আরও খবর : Amir Khan : আবার পর্দায় আবেগের ছোঁয়া, ‘সিতারে জমিন পর’ ছবিতে জীবনের দুই নারীকে সঙ্গে নিয়ে ফিরছেন আমির খান
