



‘পশ্চিমবঙ্গের ভোট রাজনীতির কড়চা’ -এর, চতুর্দশ পর্ব। কলম ধরলেন বাংলার রাজ্য রাজনীতি নিয়ে সাশ্রয় নিউজ এর পক্ষে প্রতিবেদক অগ্নি প্রতাপ
জয়নগর লোকসভা কেন্দ্র
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত অন্যতম জয়নগর লোকসভা কেন্দ্র। ১৯৬২ সালে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্র গঠিত হয়। প্রথমে কংগ্রেস পরে ১৯৮০ সাল থেকে ২০০৪ পর্যন্ত আরএসপি (বামফ্রন্টের শরিক দল) একটানা জয় লাভ করে।
জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতি ৪১ শতাংশ। সংখ্যালঘু মুসলিম ৩৫.৫৭ শতাংশ।
২০১৯ জয়নগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল ৫৬.১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন। বিজেপি প্রার্থী অশোক কান্ডারী ৩২.৭৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় রাজ্যের শাসকের দখলে।
নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি, কয়লা, গরু পাচার, কাট মানি শাসক নেতা মন্ত্রীদের নাম জড়িয়ে পড়ায় ও জেলে থাকায় শাসকের অস্বস্তি দিন দিন বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ১লা জুন ২০২৪ জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে দুবারের জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল এবং বিজেপি প্রার্থী ভূমিপুত্র ডাক্তার অশোক কান্ডারী মধ্যে মূলত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এবং এই লড়াইয়ে যে-কোনও প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে আইএসএফ নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে।
মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্র
মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত একটি লোকসভা। ১৯৬২ সালে মথুরাপুর লোকসভা গঠিত হয়। এটি তপশিলি সংরক্ষিত আসন। মথুরাপুর লোকসভা সুন্দরবনের লাগোয়া হওয়ায় বাঘ হামলায় মৃত্যু, কর্মসংস্থানের অভাব ইত্যাদি, প্রধান ইস্যু। এই কেন্দ্রের প্রধান জীবিকা হল কৃষি। এছাড়া প্রচুর মানুষ মৎস্যজীবী।
শাসক তৃণমূলের দাবি হল, বিগত বছর গুলিতে কৃষি ও মৎস্য জীবীদের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সঙ্গে সঙ্গে এলাকার উন্নয়ন করা হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, উন্নয়নের নাম করে নেতা-মন্ত্রীরা সাধারণ মানুষের টাকা সব কাঠমানি খেয়েছে সাধারণ। বর্তমানে শাসক দুর্নীতিতে সম্পূর্ণরূপে ডুবে গেছে। বর্তমানে এই শাসক মানুষের কথা আর ভাবে না তারা শুধু নিজেদের ভোট ব্যাংকের কথা ভাবে তাই তারা অন্য ধর্মকে আঘাত করতেও দ্বিধা করে না। সন্দেশখালি কোন মিথ্যা ঘটনা নয়। সন্দেশখালি প্রমাণ করে দিয়েছে নারী শক্তির উত্থান।
২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী চৌধুরী মোহন জাটুয়া সিপিএম প্রার্থীকে পরাজিত করে প্রথমবার জয়লাভ করেন ২০১৪ ও ২০১৯ সালে পরপর তিনবার নির্বাচিত হন। বার্ধক্য জনিত কারণের জন্য তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
গত ১ জুন ২০২৪ সপ্তম দফা মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রে মূলত লড়াই হবে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বাপি হালদার ও বিজেপি প্রার্থী অশোক পুরকাইতের মধ্যে। জলে, জঙ্গলে ঘেরা ও সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এই কেন্দ্রে আই এস এফ নির্ণায়ক হতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়ী হবার সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ।
ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র
ডায়মন্ড হারবার লোকসভা দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্তর্গত অন্যতম লোকসভা কেন্দ্র। এই লোকসভা কেন্দ্রটি রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবার কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ মাননীয় অভিষেক ব্যানার্জি। বিগত ১০ বছরের তিনি এখানকার সাংসদ।
ডায়মন্ড হারবার মডেল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চর্চায় উঠে এসেছে। বিরোধীরা সব সময় লাগামহীন সন্ত্রাসের অভিযোগে ডায়মন্ড হারবার মডেলকে আক্রমণ করে চলেছে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রীয় এর অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস দখল করে।
২০০৯ সালে দক্ষ সংগঠক তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌমেন মিত্র প্রথমবার এই ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে ঘাসফুল ফোটান। ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতি ২২ শতাংশ। সংখ্যালঘু ৫০ শতাংশের বেশি। ২০১৯ সালে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস ৫৬.১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন। বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায় ৩৩.৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন।
২০২৪ ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ভূমিপুত্র অভিজিৎ দাস (ববি)। ২০০৯ এবং ২০১৪ লোকসভায় তিনি প্রার্থী ছিলেন।
২০২৪ ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অভিষেক ব্যানার্জি নির্বাচিত হবার সম্ভাবনা প্রবল।
ছবি : আন্তর্জালিক
আরও পড়ুন : Loksabha Election 2024 : পশ্চিমবঙ্গের ভোট রাজনীতির কড়চা ১৩
