



পিনাকী চৌধুরী★কলকাতা : সত্যি, কালের নিয়মে কত কিছুই না পাল্টে যায় ! কিন্তু বদলায় না হাওড়া স্টেশনে সেই প্রাচীন ‘বড় ঘড়ি’-এর কৌলিন্য। আজও তার সময়জ্ঞান অসাধারণ! অতীতের একসময় অনেকেই তাঁর প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনেছেন এই বড় ঘড়ির তলায়! হাওয়া বদল করতে কলকাতার দু’প্রান্ত থেকে দু’টি পরিবার হয়তো পুরীর জন্য ট্রেন ধরবেন, তাহলে সেই সুবিখ্যাত বড় ঘড়ির তলায় হতো মিট পয়েন্ট! লন্ডনের এডওয়ার্ড জন ডেন্টের সংস্থার তৈরি এই ঘড়িটি হাওড়া স্টেশনে স্থান পায় ১৯২৬ সালে। ৩ ফুট ৯ ইঞ্চির ডায়ালে বড় কাঁটাটি দু’ফুটের এবং ছোট কাঁটা টি দেড় ফুটের! ১৯৭৫ সালে এই ‘বড় ঘড়ি’ ইলেকট্রো মেকানিক্যাল হয়। যদিও বর্তমানে রিচার্জেবল ব্যাটারি চালিত স্বয়ংক্রিয় ঘড়ি হয়ে গেছে। আদতে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করলেও হাওড়া স্টেশনে এই বড় ঘড়ি লাগিয়েছিলেন কিন্তু কলকাতার বিখ্যাত ঘড়ি ব্যবসায়ী দেবপ্রসাদ রায়ের সংস্থা রায় ব্রাদার্স কোম্পানি। দেখতে দেখতে ৯৮ বছর পার করে দিয়েছে বড় ঘড়ি। ভারতের স্বাধীনতা সহ অনেক উত্থান পতন, ঘাত প্রতিঘাতের সাক্ষী হয়ে আজও সঠিক সময় দিয়ে চলছে এই বড় ঘড়ি। সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ উপন্যাসে চার শহুরে যুবককে এই বড় ঘড়ির তলায় মিলিয়েছিলেন। যদিও এখন হাতে হাতে স্মার্টফোন। কিন্তু আজও অনেকেরই হাওড়া স্টেশন থেকে সুদূর গন্তব্যে যাওয়ার আগে একমাত্র মিট পয়েন্ট হল ‘বড় ঘড়ি’।
ছবি : সংগৃহীত
