



পিনাকী চৌধুরী ★ কলকাতা : শ্রাবণে শোকস্তব্ধ পশ্চিমবঙ্গ! ৮ আগষ্ট প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) জীবনাবসান হল। একজন সৎ, আদর্শবান রাজনৈতিক হিসেবে মানুষের মণিকোঠায় রয়ে যাবেন তিনি! অত্যন্ত মৃদুভাষী আপাদমস্তক ভদ্রলোক ছিলেন বুদ্ধ বাবু। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে (২০০০ – ২০১১ সাল) তিনি গাম্ভীর্য বজায় রাখতেন তিনি, কিন্তু তাঁর অপছন্দের কোনও আইপিএস অফিসার কে ভর্ৎসনা করতেন না। তাঁর দু’চোখে ছিল শিল্পের স্বপ্ন! তাঁর আমলে শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে হয়তবা পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি ছিল, কিন্তু সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা হলে পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রীক চরিত্রটাই পাল্টে যেত! কিন্তু বিধি বাম! পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি এতটুকুও ক্ষুণ্ন হয়নি, যদিও বিতর্কের অবকাশ ছিল। কিন্তু তাঁর সাদা পাঞ্জাবিতে কেউ কোনওদিন কালির ছিটিয়ে কলঙ্কের ভাগীদার করতে পারেননি! আসলে তিনি রাজনীতির ঘোলাজলে মাছ ধরতে চাননি। বরং অনাড়ম্বর জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুরের সেই ‘বাচ্চু’ থেকে ধীরে ধীরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হয়ে একজন পরিশীলিত রাজনীতিবিদ হয়ে দীর্ঘ যাত্রাপথটা মোটেও মসৃণ ছিল না! তবে বামপন্থী মানুষটি (পড়ুন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) এতটাই সমাজের প্রতি নিবেদিত প্রাণ ছিলেন এবং এক মহান আদর্শকে সামনে রেখে তিনি মরণোত্তর চক্ষুদান ও দেহদান করে গেছেন যাতে পরবর্তীতে চিকিৎসাশাস্ত্রের আরও অগ্রগতি হয়! হ্যাঁ , বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মূল্যবোধের রাজনীতি করতেই অভ্যস্ত ছিলেন। তবে মেলালেন তিনি মেলালেন! তাঁর মৃত্যুর পরেই ডান-বাম সবাই মিলেমিশে একাকার! তাই বোধহয় চায়ের দোকানে অথবা কফি শপে এখন একটাই চর্চার বিষয়- বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে WB 06 0002 এই নাম্বারপ্লেট লাগানো গাড়িতে করেই সুস্থ থাকাকালীন সময়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিয়মিত যাতায়াত করতেন রাজনৈতিক সমাবেশে অথবা পার্টির মিটিং-এ! তবে সেই দুধসাদা অ্যাম্বাসেডরে আর চাপবেন না তিনি! চিরবিদায় নিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাই তো সেই ‘৯১ সাল থেকে দেখে আসা তাঁর গাড়ির চালক সত্য ঘোষের চোখে জল! -ফাইল চিত্র
