



প্রসঙ্গ নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি : এরপর কে?
সাশ্রয় নিউজ : মাঝে মাঝেই ‘নিখোজ’ রাজনৈতিক নেতাদের নামে পোস্টার পড়ছে রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্তে। সাধারণ শিক্ষিত মানুষদের দাবী, রাজনীতির ময়দানটিকে রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ ভোটে জেতার জন্য ব্যহহার করেন। ভোটে জেতার পরে তাঁদের কাউকে কাউকে আর নিজস্ব সাংসদ এলাকা বা বিধায়ক এলাকায় টিঁকিটিও দেখতে পাওয়া যায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক এবিষয়ে আরও সংযোজন করেন, এটা বড় লজ্জায় ঘটনা। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বর্তমান সময়ের মানুষ মাথায় তুলে রাখেন। অথচ তাঁরা নির্বাচন জিতে নিজের এলাকাকেই চিনতে পারেন না। এটার একটা বড় কারণ হল, রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য স্থানীয় প্রার্থীদের প্রার্থীপদে দাঁড়ানোর টিকিট না দিয়ে এলাকার বাইরের কোনও ব্যক্তিকে টিকিট দেন। তাঁদের কেউ নির্বাচনে জয়লাভ করার পরেই নিজের জিতে আসা এলাকার মানুষকে ভুলে যান। ভুলে যান, নির্বাচনের ময়দানে গিয়ে সাধারণ মানুষদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলিও। এলাকা উন্নয়নের তাঁদের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ উঠে। কারণ ওঁরা থাকেন একজায়গায় আর তাঁর নির্বাচনে জেতা এলাকা আরেকটি জায়গায়। সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয় সাধারণ মানুষকেই। একটা বড় অংশের সাধারণ মানুষ মনে করেন, রাজনৈতিক দলের প্রার্থী করা উচিত এলাকা থেকে। এবং রাজনৈতিক দলগুলি থেকেই। কারণ কেউ কেউ নির্বাচনে লড়তে আসেন শীতের পাখির মতো আবার শীত ফুরলেই চলে যান নিজের কুটিরেই। ব্যাপারটা এমন, রইল, রাজপাট চল্লুম বৃন্দাবন।
এটা একদমই অনভিপ্রেত। সত্যি, ভরসা ও আস্থা মানবজাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ।
বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের ‘নিখোঁজ’ পোস্টার পড়ছে যেভাবে, সেখানে সেইসব জনপ্রতিনিধিদের তাহলে খুঁত আছে কিছু? নাকি বিরোধী রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক অভিসন্ধি? সাম্প্রতিক অতীতে, বিধায়ক ও অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক, অভিনেতা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, অগ্নিমিত্রা পলের নামে নিখোঁজ পোস্টার পড়েছিল। এবার বর্ধমানের সাংসদ এস এস আলুয়ালিয়ার নামের পাশে ছবি দিয়ে পোস্টার পড়ল তাঁর সাংসদ এলাকায়। এলাকার বড় অংশের মানুষের বক্তব্য লোকসভা নির্বাচনের প্রায় আড়াই বছর হতে চলল। এলাকায় আসেননি এমপি। সময়ে-অসময়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশেও থাকেন না। এমনকী দলের কোনও কর্মসূচিতেও হাজির থাকেন না। স্থানীয় মানুষরা জানান কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছেন তাঁরা জানেন না। এই পোস্টার বিতর্ক নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলা তথা রাজ্য রাজনীতিতে। তৃণমূল জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “এটা নতুন কিছু নয়। যেখানেই জেতেন, মানুষ তাঁকে পান না। এটা মানুষের ক্ষোভ। সাধারণ মানুষ হয়ত ক্ষোভ প্রকাশ করে এই পোস্টার দিয়েছেন। ওনার কর্মীরাই ওনাকে নানা সময়ে পান না। তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে ওনাদের দলেই। তাঁরাও পোস্টার দিয়ে থাকতে পারেন। তৃণমূল এসব কাজ করে না।”
বিজেপির যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুধীরকুমার সাউ এ প্রসঙ্গে স্পষ্ট বলেন, “এ কাজ তৃণমূলের হতে পারে। একেবারেই মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। সাংসদ হিসেবে নানা কাজে আলুয়ালিয়াজিকে দিল্লিতেই থাকতে হয়। উনি এলাকায় নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। এমনকী অন্যদলের লোকজনও উপকার পেয়েছেন।” রাজনৈতিক তর্জায় চিরকালই সরগরম দেশ। তার মাঝেই দেওয়ালে ফুটে উঠেছে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি। ‘সন্ধান চাই।’ এরপর কে? তাতে খেটে খাওয়া আমজনতা কী! যাঁরা খোঁজার খুঁজুন। ভোট আসলে দেখা যাবে। এই ভেবে, নিজেদের মনে একচোট মনভরে হাসি! এই সময় হাসি ছাড়া নিজেদের আর কী দিতে পারেন!
