



হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় : এরমধ্যেই জেগে থাকবে বাংলা, অথই সাগরে তাঁর ডিঙা ভাসালেন প্রতুল মুখোপাধ্যায় (Pratul Mukhopadhyay)। অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি, সালটা ছিল ১৯৪২ এর ২৫ শে জুন। বাবা প্রভাতচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। ছোট থেকেই গান লিখে সুর দিয়ে গাওয়া ছিল ঝোঁকের মতন। পাদপ্রদীপের আলোয় প্রজ্জ্বলিত হলেন প্রতুল, তাঁর গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’ এর মধ্য দিয়ে। এছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি “গোঁসাই বাগানের ভূত” ছবির নেপথ্যে কণ্ঠশিল্পী ছিলেন তিনি।
“পাথরে পাথরে নাচে আগুন” (১৯৮৮) তাঁর জীবনের প্রথম অ্যালবাম। তবে এটি তার একক অ্যালবাম নয় , অন্যান্য শিল্পীদের সঙ্গে মিলিত কাজ। তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম এরপর ১৯৯৪ সালে “যেতে হবে”, তাঁর বেশ অ্যালবাম “ভোর” (২০২২)।
দেশভাগের পর এপার বাংলায় এসে চুঁচুড়ায় বসবাস করেন তাঁরা। কবি মঙ্গলচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি ধান কাটার গান গাই’ কবিতায় সুর দেন। যদিও প্রথাগত সংগীত শিক্ষা ছিল না কোনদিনই। তিনি তাঁর নিজের আবেগকেই সুর ও কথার জালে বেঁধে ফেলতে পারতেন।
অন্যান্য অ্যালবাম গুলির মধ্যে ‘ চক্র চাঁদ ‘ ‘জোওয়ান চাঁদ’ বর্ণনা সহ ‘লাল কমলা হলুদ হলদে সবুজ’ ‘ দারুন গভীর থেকে’ বর্ণনার সাথে গেয়েছিলেন। ‘লোহার ঘৃণা’ ,’কিআমাদের জাত’ , ‘ভালোবাসার মানুষ’, ‘ কাঁচের বাসনের ঘ্যান ঘ্যান শব্দ’, ‘মা সেলাই করে’ , ‘মেয়ে ছোট দুটি পা,’ ‘আমার ধান কাটার গান গায়’ , ‘ নাকোসি স্কেলে আফ্রিকা ‘ , ‘তুমি ছেঁড়া মাটির বুকে আদিম’, ‘কুট্টুস কাট্টুস’, ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ , ‘তোমাকে দেখেছিলাম’, ‘স্বপনপুরে’।
পড়ে রইলো সমাজসংসার, পরিবার। দীর্ঘ রোগভোগের পর অবশেষে পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে। এই দীর্ঘ সময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সহজিয়া সুরে গান বাঁধলেন, গাইলেন। বাংলা আমার জীবনানন্দ, বাংলা প্রাণের সুর , আমি একবার দেখি বারবার দেখি এই বাংলার মুখ। ঠিক যেন মিলে গেল জীবনানন্দ দাশের ছন্দে… আবার আসিব ফিরে… আপামর বাঙালি রইল অপেক্ষায়।
ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Leh – Ladakh | লেহ, লাদাখ : প্রকৃতির সঙ্গে ভ্রমণ
