



তনুজা বন্দ্যোপাধ্যায় ★ সাশ্রয় নিউজ : রাকুল প্রীত সিং জানেন (Rakul Preet Singh) যে, বলিউডের ঝলমলে দুনিয়ায় যেমন রয়েছে রঙিন পার্টি আর ঝাঁ চকচকে লুক, তেমনই রয়েছে ঘড়ির কাটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলা ব্যস্ততা। আর এই ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও নিজেকে পরিপাটি করে তোলার সহজ ও কার্যকরী উপায় নিয়ে হাজির হয়েছেন ‘দে দে পেয়ার দে’ খ্যাত অভিনেত্রী রাকুলপ্রীত সিংহ (Rakul Preet Singh)।

তাঁর মতে, সাজগোজ মানেই দীর্ঘ প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই, হাতের কাছে ব্রাশ না থাকলেও চলে, যদি থাকে সঠিক কৌশল। ইনস্টাগ্রামে প্রায়শই ফিটনেস ও রূপচর্চা নিয়ে টিপস শেয়ার করেন রাকুল। সেখানেই সম্প্রতি তিনি শিখিয়েছেন কীভাবে মাত্র পাঁচ মিনিটে পার্টি বা অফিস-লুক তৈরি করা যায়। তাঁর এই টিপস ইতিমধ্যেই ভাইরাল। বিশেষ করে যাঁরা কর্পোরেট দুনিয়ার ব্যস্ত কর্মী, তাঁদের কাছে এটি যেন সময় বাঁচানোর এক ম্যাজিক ফর্মুলা।

ফাইভ-মিনিট রুটিন শুরু হয় একেবারে বেস থেকে। রাকুলের কথায়, “একটা ভাল ফাউন্ডেশন দিয়েই সবটা শুরু হতে পারে।” তিনি নিজে তরল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করেন, তবে সেটি লাগানোর জন্য কেউ চাইলেই আঙুল বা মেকআপ স্পঞ্জ ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ত্বকে সহজে বসে যায় ফাউন্ডেশন, সময়ও লাগে কম।

পরবর্তী ধাপে রকুল গুরুত্ব দিয়েছেন কনসিলারের (Concealer) ওপর। মুখে যদি কালি, ব্রণের দাগ বা জন্মদাগ থাকে, তাহলে তা ঢাকতে কনসিলার অত্যন্ত কার্যকরী। “ব্রাশের দরকার নেই, নিজের আঙুল দিয়েই দাগের উপর আলতোভাবে লাগিয়ে ফেলুন। দরকার হলে স্পঞ্জও ব্যবহার করা যেতে পারে,” বলেন রকুল। তৃতীয় ধাপটি একটু কারুকার্যপূর্ণ, কন্ট্যুরিং (Contouring)। তবে এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ এখন কন্ট্যুরিং স্টিক সহজলভ্য। রাকুল দেখিয়েছেন কীভাবে কানের মাঝ বরাবর থেকে চোয়ালের নিচ পর্যন্ত টান দিতে হয়, নাকের দুই পাশে হালকা স্ট্রোক দিতে হয় ও আঙুল দিয়েই ব্লেন্ড করে ফেলা যায়। এই ধাপে মুখ আরও শার্প এবং ডেফিনড দেখায়। চতুর্থ ধাপে, ফাউন্ডেশন ও কন্ট্যুর করার পর আসে ফেস পাউডারের পালা। এটি মুখের অসম রঙতালকে সাম্য করতে সাহায্য করে। রাকুল জানাচ্ছেন, “ফেস পাউডার একপ্রকার ম্যাজিক। এটি এতটাই ন্যাচারাল ফিনিশ দেয় যে বোঝাও যায় না মেকআপ করা হয়েছে।” সবশেষে পঞ্চম ধাপে আসে আইশ্যাডো (Eyeshadow), ব্লাশ, লিপস্টিক ও মাস্কারা (Mascara)। রাকুল জানাচ্ছেন, “ব্রাশ হাতে না থাকলে আঙুল দিয়েই চোখের পাতায় হালকা আইশ্যাডো লাগিয়ে ফেলুন।” ব্লাশ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রয়েছে তাঁর ছোট্ট টিপ, “হালকা হেসে নিন। গালের যে অংশ উঁচু হয়ে ওঠে, ঠিক সেখানেই ব্লাশ দিন। একটুখানি ছোঁয়া নাকের ডগাতেও দিন।”

লিপস্টিক পছন্দমতো রঙের হলেও, একে শেষ মুহূর্তের টাচ বলা যায়। রাকুলের মতে, “লিপস্টিকই লুকটাকে সম্পূর্ণ করে তোলে।” তবে চোখের সাজে তিনি আইলাইনার বা কাজলের বদলে ব্যবহার করেন শুধু মাস্কারা। এতে চোখের আকৃতি বড় দেখায়, কিন্তু অতিরিক্ত ভারী মেকআপের ছাপ পড়ে না। এই গোটা রুটিনটি অভিনেত্রী রাকুলপ্রীত সিং প্র্যাকটিক্যালি দেখিয়েছেন একটি ভিডিওতে। সেখানে দেখা যায়, কীভাবে মাত্র ক’য়েক মিনিটেই একজন নিজেকে ঝটপট প্রস্তুত করতে পারেন। এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, এর কোনও অংশেই প্রফেশনাল কিট প্রয়োজন পড়ে না। যে-কোনও সাধারণ মেকআপ পাউচেই এই উপকরণগুলো পাওয়া যায়।অনেকেই মন্তব্য করেছেন, “রাকুলের এই হ্যাক সত্যিই সময় বাঁচানোর জন্য অসাধারণ।” কেউ কেউ আবার লিখেছেন, “মেকআপে এত সহজতর পথ যে থাকতে পারে, সেটা ভাবতেই পারিনি!”

সৌন্দর্য মানে কেবল জাঁকজমক নয়, আত্মবিশ্বাস ও সঠিক উপস্থাপন। আর তাড়াহুড়োর মধ্যেও যদি কেউ নিজের সেরা ভার্সনটি তুলে ধরতে পারেন, তবে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য। রকুলপ্রীত সিংহ যেন সেই আত্মবিশ্বাসের মুখ হয়ে উঠেছেন। তাঁর এই সহজ কৌশল একদিকে যেমন সময় বাঁচায়, অন্যদিকে নিজেকে গুছিয়ে রাখার নতুন মানদণ্ডও স্থাপন করে। প্রসঙ্গত, ব্যস্ত জীবনে সময়ের অভাব প্রায় সকলেরই, বিশেষ করে কর্মব্যস্ত নারীদের জন্য। তাদের জন্য রকুলের এই ফাইভ-মিনিট বিউটি রুটিন যেন এক স্বস্তির নিঃশ্বাস। “সাজগোজ মানেই যে অনেক সময়, টাকা আর প্রফেশনাল সাহায্যের প্রয়োজন, তা নয়। নিজের হাতে একটু যত্নই যথেষ্ট,” জানিয়ে দিলেন বলিউডের এই স্মার্ট ডিভা।
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Beauty Tips | রাতের ঘুমে সৌন্দর্যের চাবিকাঠি, মুখে ঘি লাগানোর সাত দিনের ম্যাজিক!
