Sasraya News

Saturday, March 15, 2025

Poet Haimanti Bandopadhyay | কবি হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় -এর কবিতাগুচ্ছ

Listen

🍂কবিতাগুচ্ছ 

 

বি হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় -এর জন্ম ১৯৭৪ সালের ২২ আগস্ট। কবি সংস্কৃত পরে বাংলায় এম.এ, বি.এড করেন। তাঁর কর্মজীবন প্রান্তিক শিশুদের নিয়ে গঙ্গার ওপারে নীলিমা শিশু বিকাশ কেন্দ্র নামক একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে। তার আগে‌ একটা ইউনিভার্সিটির আণ্ডারে অফিসিয়াল কাজকর্মের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবেও কাজ করেছেন। হৈমন্তীর লেখালেখি শুরু প্রথম স্কুল,কলেজ জীবনের বিভিন্ন ম্যাগাজিন, এরপর আনন্দবাজার পত্রিকার জেলার পাতায় একটানা সাতবছর ধরে। তাঁর প্রকাশিত মোট কাব্যগ্রন্থ তিনটি। যথাক্রমে : “প্রথম বৃষ্টির পর” ২০২২ রবি প্রকাশ প্রকাশনী থেকে। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “শূন্যতা ও চন্দ্রবিন্দু” কলকাতার বইওয়ালা প্রকাশনী থেকে। ও ২০২৪ এ প্রকাশিত হয় তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ – “অশনিসংকেত”। আরাত্রিকা প্রকাশনী থেকে। তাঁর নিজস্ব সম্পাদনায় প্রকাশিত “পর্জন্য” নামে একটি লিটিল ম্যাগাজিন। এছাড়াও কবি “আশাবরী ” নামে একটি সামাজিক কাজের কর্ণধার। যেখানে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো হয় কিন্তু খুব গোপনে। কবি হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কথায়, ‘আমি বিশ্বাস করি ভালো কাজ লোককে জানিয়ে করা উচিত নয়।
আমি শুধু অক্ষরকর্মী না গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস সব লেখাতেই আগ্রহী।’ প্রসঙ্গত, তাঁর লেখা কৃত্তিবাস সহ জেলার বিভিন্ন বিশিষ্ট পত্রিকায় এবং বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে। সাশ্রয় নিউজ-এর আজকের পাতায় রইল কবির কবিতাগুচ্ছ। 🍁

 

 

 

 

হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রেম ও পিদিম

 

দুপুরগুলোয় আড়ষ্টতা এলে
মনের কথা শোনো, বলেছিলে তুমি।
দুপুরগুলোয় আড়ষ্টতা এলে
মুষলধারার স্পর্শ মনে কোরো।

স্পর্শ ইঙ্গিত দেয়,
ইঙ্গিতে ইঙ্গিতে জেগে উঠলে মন
মনের ভেতরে যে স্রোত সংগীত হয়ে ওঠে
তার কথায় বানভাসি হও।

স্রোতই তো বিশল্যকরণী,
স্রোতই তো সকল সমাধান
ব্যবধানে দী…র্ঘ দূরত্ব এসে গেলে
সেই হয় স্তব আর স্তুতি।

সকালগুলো নিষ্প্রাণ মনে হলে
বিকেলগুলো-দুপুরগুলো-রাত্রিগুলো
নিষ্প্রভ মনে হলে, আলগা হয়ে
বাগানবেলায় বোসো।

বাগানকথায় আগুন থাকে না,
ঝলসে যাওয়ার ভয়ও থাকে না,
তোমার কাছে পদ্যকথা যারা
তোমার কেন কথা শোনে না?

মনের ঘরে মাদল জেগে গেলে
একলা তুমি আগল তোলো কেন?
যাক না ভেসে মনের যত জমা ধুলোবালি
প্রশ্ন আর কারণসকল আলগা কোরো না।

মনের ঘরে আড়ষ্টতা এলে
আর কিছুতেই এড়িয়ে যেও না
ফন্দি ফিকির ওরাই নিয়ে আসে
ওরাই আনে দূরত্বে সংযম।

ঘনিয়ে এলে ঘোর সান্ধ্যকাল
মনের ঘরে পিদিমটুকু দিও
মনেই যত আড়ষ্টতা তোমার
আগুন কোনো দহন দেয় না জেনো।

 

 

 

 

মতিভ্রম…

 

গাঢ়তম অন্ধকার ছুঁয়ে ফিরে আসা রক্তাক্ত মন ভ্রান্তমতি নক্ষত্রের মতো নির্লজ্জ হয়
মাঝরাতে…

…মাঝরাতে জেগে উঠলে আদিম উদ্দাম
কেউ কেউ জন্ম ভোলে, অনেকেই ভুলে
যায় শেকড় মন্থন…

 

 

 

ভোরকথা…

 

ধবধবে তমসায় কে লিখেছে জ্যোৎস্না বিনির্মাণ, তুমি যাকে ভুল ভেবে সরে যাও
সেই রাখে সত্য শুদ্ধিস্নান…

যেখানে হিমের পরশ মৃদুমন্দ কাঁপন উছলি
কারা যেন অনিচ্ছা দেখায়,কেউ কেউ
খুঁজে নেয় সারকথা–জীবন দু’কলি…

আজও যারা শেকড়ের ঘ্রাণে জলতলে
দেখা পায় পদ্মপাতা ঘোর, অন্ধ তামসজুড়ে
তারাই জন্ম লেখে, তারাই খুঁজে পায় ভোর…

 

 

 

 

মানববন্ধন…

 

আমিও তো জন্ম লিখেছি প্রিয়
যেমন তোমার কলম,

তবু দ্যাখো অনীহা কেমন

আমরাই ভুল করি বারবার
আমরাই ভুলে যাই মানববন্ধন…

 

 

 

 

তবু দ্যাখো!...

 

তিরস্কারের আয়ু বড় কম
ফুলেরা আজও সৌন্দর্য্য বোঝে
আমরাই ভুলি কীরকম!

রঙ্ সে তো জীবনদেবতা
হীনজন্মে গাঢ় করে ক্ষণ,
সব জানি,তবু দ্যাখো আমরাই

ভুলি কীরকম !…

 

 

 

তীর্যকরশ্মি…

 

জলতলে কে রেখেছে জীবনের গোপন আলাপ?
কে রেখেছে জ্যোৎস্নার উদাত্ত
আহ্বান?…

তলদেশে মৃত্তিকা কাঁপে তিরতির

উড়োখইয়ে জেগে গেলে আতপের ঘ্রাণ
গোপন কুলুঙ্গি থেকে মস্করারা দপ্ করে
ক্ষুধার্ত হায়েনা হয়ে যায়…

 

 

 

প্রবাল ও প্রাবল্য…

 

অন্ধনীড়ে কোন্ সে অস্মিতা লেখে
তুষের আগুন !

নীড় ধ্বংস হয়ে যায়…

নীড় প্রমাণ হারায়…

অন্ধনীড়ে কোন্ সে প্রবাল লেখে
প্রাবল্য সারাদিন !…

 

 

 

রেণু…

 

মুকুলের মায়াপথে তৃপ্তি বারোমাস্যা
তৃপ্তিতে বিস্ময় জাগে, বিস্ময়ে ঘোর
চিরস্রষ্টা…

মাঝখানে দহনের তীব্র মহাভার

এইটুকু আয়ুষ্কালে ঘাম যদি অনীহা সরায়
প্রতিটি ফুলকি তবে জীবনবান্ধব,
প্রতিটি মুহূর্তে জাগে পরাগের রেণু…

 

 

 

 

আবির…

 

অতিদূ…র নক্ষত্রের দেশে
যে পরাগ ধুলো হাত্ড়ায়,
ঘাম হাত্ড়ায়,

অথবা নিকটতম বিস্ময়ে যদি
আলপথে চোখে চোখে আলো
ছলকায়, ভালো ছলকায়

ধুলোও নক্ষত্র হয়, নক্ষত্র আবির লাগায়…

 

 

 

 

🍁অলঙ্করণ : প্রীতি দেব ও আন্তর্জালিক 

 

 

 

এক নজরে 👉 সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল-এর জন্য উপন্যাস, কবিতা (একধিক কবিতা পাঠালে ভালো হয়। সঙ্গে একটি লেখক পরিচিতি। গল্প, প্রবন্ধ, গদ্য, পুস্তক আলোচনা (আলোচনার জন্য দুই কপি বই পাঠাতে হবে), ভ্রমণ কাহিনী। লেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকতে হবে। অবশ্যই কোনও প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমনকী কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বা পোর্টালে পূর্ব প্রকাশিত লেখা পাঠাবেন না। ই-মেল করে লেখা পাঠান। ই-মেল আই ডি : editor.sasrayanews@gmail.com

 

বি: দ্র: সমস্ত লেখা লেখকের নিজস্ব। দায় লেখকের নিজস্ব। কোনও বিতর্কিত বিষয় হলে সংবাদ সংস্থা কোনওভাবেই দায়ী থাকবে না এবং সমর্থন করে না। কোনও আইনি জটিলতায় সাশ্রয় নিউজ চ্যানেল থাকে না। লেখক লেখিকা প্রত্যেকেই লেখার প্রতি দ্বায়িত্ববান হয়ে উঠুন। লেখা নির্বাচনে (মনোনয়ন ও অমনোনয়ন) সম্পাদকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment