Sasraya News

Netherlands to Tehatta, Nadia | সাতহাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে এলেন নেদারল্যান্ডসের যুবক

Listen

সাশ্রয় নিউজ ★সূর্য মিত্র, নদীয়া: নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) অ্যামস্টারডাম (Amsterdam) থেকে সরাসরি নদিয়ার (Nadia) তেহট্ট (Tehatta)। দূরত্ব প্রায় সাত হাজার কিলোমিটার। সেই দূরত্বকে তুচ্ছ করে, শুধু একঝলক দেখার আশায় এখানে হাজির হয়েছিল ২০ বছরের যুবক হেনরিক (Henrik)। সে এসেছে একাদশ শ্রেণির এক বাঙালি স্কুলছাত্রী বান্ধবীর (girlfriend) সঙ্গে দেখা করতে, যাকে সে চিনেছিল সমাজমাধ্যমের দৌলতে। দুই ভিন্ন দেশের দুই তরুণ-তরুণীর এই বন্ধুত্বের গল্পে যেমন রোমাঞ্চ আছে, তেমনই মিশে গেল বাস্তবের কঠোরতা।

একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকালে প্রথমে ইসকনের মায়াপুরে পৌঁছয় হেনরিক। সেখান থেকে সোজা রওনা দেয় তেহট্টের দিকে। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পৌঁছে যায় স্কুলের সামনে। তখন স্কুল চলছিল। দূর থেকে জানলার পাশে দাঁড়ানো মেয়েটিকে দেখে সে আবেগ সামলাতে পারেনি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্কুলছাত্রীটি জানলা দিয়ে হাত নাড়ে। তাতেই যেন তার মন ভরে যায়। স্কুল ছুটির পর রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা হয় দু’জনের। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে গল্প করেন তারা। সেই সময়েই হেনরিক তার ছোট্ট বান্ধবীর হাতে উপহার হিসেবে দেয় একটি সুন্দর পুতুল। মেয়েটির চোখে-মুখে ছিল লাজুক হাসি। তবে দু’জনের এই দেখা আর কথোপকথন বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কারণ তাদের দিকে নজর পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলপড়ুয়া ওই ছাত্রী এখনও নাবালিকা। তাই এক বিদেশি যুবকের সঙ্গে তার এই দেখা-সাক্ষাতে আপত্তি ওঠে। সঙ্গে সঙ্গেই তেহট্ট থানার পুলিশ এসে পৌঁছয়। হেনরিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা হয়। পুলিশ তাকে জানায়, নাবালিকার সঙ্গে একান্তে থাকার অনুমতি তারা দিতে পারবে না। পাশাপাশি পরামর্শ দেওয়া হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সে যেন দেশে ফিরে যায়। পুলিশের পরামর্শে হতাশ হলেও মুখভার করেনি হেনরিক। স্থানীয়দের কথায়, সে বলেছে, ‘‘আমি ওকে শুধু একবার দেখতে চেয়েছিলাম। আমরা বন্ধু। সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলি। কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নেই।’’ তবে পুলিশের কড়াকড়ির জন্য তেহট্টে আর ও বেশিক্ষণ থাকেনি। সেদিনই রাতে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং সেখান থেকে বিমানে ফিরে যায় নেদারল্যান্ডসে।

এই ঘটনা এলাকায় রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ছেলেটির ব্যবহার অত্যন্ত ভদ্র ছিল। কিন্তু মেয়েটি নাবালিকা, তাই পুলিশ আসতেই বাধ্য হয়েছে।’’ অন্যদিকে, স্কুলের সহপাঠীরাও চমকে গিয়েছে হেনরিকের এই সাহসে। এক সহপাঠী বলল, ‘‘ও সত্যিই খুব সাহসী। এত দূর থেকে শুধু একবার দেখার জন্য এসেছে!’’ হেনরিকের এই সফর যেমন আবেগঘন, তেমনই বাস্তবের দেওয়ালও তুলে দিয়েছে কঠোর বার্তা, বয়স, দেশের আইন ও সামাজিক দায়িত্বের সীমারেখা কখনও কখনও বন্ধুত্বের আবেগকেও আটকে দেয়। তবে মাটির কাদা পেরিয়ে, বাঁশবাগানের ছায়া পেরিয়ে, বিদেশি যুবকের এই দেখা করার প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে গল্প হয়ে থেকে যাবে তেহট্টের স্মৃতিতে।

ছবি: প্রতীকী 
আরও পড়ুন : Rinku-Priya Love story : রিঙ্কু-প্রিয়ার প্রেমকাহিনি, ক্রিকেট মাঠ থেকে সংসদের অন্দরমহল

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read