



সাশ্রয় নিউজ ডেস্ক : এক বিংশ শতাব্দীতে শিক্ষায় বিশ্ব এগিয়ে চলেছে। দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে শিক্ষার হার। শিক্ষার আধুনিক পদ্ধতিতে আকৃষ্ঠ হচ্ছেন শিক্ষানুরাগীরা। উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে আগ্রহীদের জন্য দেশ ও বিদেশের দরজাও খোলা। দেশ থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য প্রতি বছর বহু শিক্ষার্থীই পাড়ি দিয়ে থাকেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।
অথচ, কিছুটা শতাব্দী পিছিয়ে যাই চলুন! আমাদের এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটুখানি ফ্ল্যাশব্যাকে দেখি। ভারতবর্ষ বিশ্বকে প্রাচীনকাল থেকে পথ দেখিয়ে এসেছে। এবং সেই পথেই আজও বিশ্ব এগিয়ে চলেছে। প্রাচীন ভারতের শিক্ষার সূত্র ধরেই তাবৎ বিশ্ব শিক্ষাক্ষেত্রে যুগ-যুগান্তর ধরে পুষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন : Sasraya News, Eid Special, April 7, 2024।। সাশ্রয় নিউজ, ঈদ স্পেশাল।। ৭ এপ্রিল, ২০২৪
এক্ষেত্রে প্রাচীনকালে এদেশকে-ই আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে বেছে নিতেন শিক্ষানুরাগীরা। এবং তাঁদের শিক্ষার্জনের সেই চেষ্টা ছিল যারপরনাই দুঃসাহসিক। একবিংশ শতাব্দীতে যানবাহন ও তথ্যপ্রযুক্তি হাতের মুঠোয় বিশ্বকে এনে দিয়েছে। যা সেই সময় ভাবাই ছিল বাতুলতা বৈকী! কিন্তু যাঁর বা যাঁদের ভেতর প্রকৃত শিক্ষার্জনের খিদের যন্ত্রণা ওঠে, তাঁদের কাছে কোনও কষ্ট-ই কষ্ট না। তাঁদের কাছে শিক্ষা দেখানোর কোনও বস্তু নয়, বরং অর্জনের জন্য নিরন্তর সাধনা। তেমনি সেই সময় বিদেশ থেকে ভারতে শিক্ষাগ্রহণ করতে আসাটাও! এখানে বলা যায় যে, অনেকটা-ই চাঁদ পেড়ে হাতে ধরার মতনই! ভারতের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় (Nalanda University) ছিল তেমনি একটি মহামূল্য জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রস্থান। বা জ্ঞানসাধনালয়।
ইতিহাস বলছে, বৌদ্ধ জ্ঞানচর্চার অন্যতম পীঠস্থান ছিল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। ঐতিহাসিকদের মতে, ৪২৭ খ্রীস্টাব্দে তৈরি হয় ভারতের উজ্জ্বলতর বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ (দশ) হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীদের থাকার সুবিধা ছিল। এমনকী নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়-এর শিক্ষার আলো এতটাই তীর্যক ছিল যে, সমগ্র বিশ্বে তা বিকিরিত হয়।
হয়ত আধুনিক ভারতবর্ষের মানুষের কাছে বিষয়টি কিছুই নয়! কারণ যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি জুড়ে দিয়েছে সর্বক্ষেত্রকে! চাইলে বিজ্ঞানের দৌতলে ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে পড়ে ফেলা যায় হাজারও পুস্তক। পৌঁছে যাওয়া যায় পৃথিবীর কোণে-কোণে। তা নিজের ঘরে বসেই। আসলে, এসবই আধুনিকতার ফসল। ভাল বা মন্দ তা তার্কিকদের আলোচ্য বিষয়। তাঁরা ভাবুন। তবে এটা ভেবে পুস্তক পড়ুয়ারা চমকে উঠবেন যে, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুস্তকের সংগ্রহ ছিল ৯০ লক্ষ। যদিও তা ঐতিহাসিকদের তথ্যসূত্র থেকে উল্লেখ। কিন্তু এটিও ভেবে দেখার বিষয়, আমরা যে সময়ের একটি শিক্ষাঙ্গনের কথা উল্লেখ করলাম, সেই সময়ে একটি শিক্ষাঙ্গনে ৯০ (নব্বই) লক্ষ পুস্তকের সংগ্রহ নেহাত কথার কথা নয়! কারণ সময়ের ব্যবধানে শিক্ষাক্ষেত্র বৃদ্ধি পেয়েছে, পুস্তক বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রকৃত শিক্ষারমান কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে? এ প্রশ্ন কিন্তু শিক্ষাপ্রেমীদেরই! বিহারের রাজগীরে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচীন ভারতের শিক্ষার ও শিক্ষা-সাধকদের স্মৃতি আঁকড়ে আজও নিজেকে মেলে রেখেছে। হ্যাঁ ভগ্নস্তূপ হয়ে, লাল ইটের ভাঙাচোরার ভেতর। এখনও সেখানে জ্ঞানপিপাসুরা মানসচক্ষে দেখতে পান, শিক্ষার্থীদের নিমগ্নতা, গুরুমশাইদের চলাফেরা…
ছবি : সংগৃহীত
