



ডাচদের কাছে লজ্জার হার প্রোটিয়াদের
সাশ্রয় নিউজ ★ ধরমশালা : ডাচদের কাছে লজ্জার হার প্রোটিয়াদের। দক্ষিণ আফ্রিকার এই দলটিই আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রেকর্ড সংখ্যার রান করে। সেই দলটিরই আজকে এ বিশ্বকাপে লজ্জার হার হল তুলনায় ছোট দলের কাছে। খেলার শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের নেদারল্যান্ডসের বোলারদের অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে নিতে দেখা যায়। ক্রিকেটেই বোধহয় সম্ভব এটা! এবিষয়ে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত, প্রোটিয়া ও ডাচদের মঙ্গলবারের ম্যাচ থেকে এই বিশ্বকাপের পরবর্তী ম্যাচগুলিতে অংশগ্রহণকারী দলগুলিকে ভাবা উচিৎ বিষয়টি!
ক্রিকেটে যা কিছু হতে পারে! এই ভাবনা থেকে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সটা সবসময় খেলার মাঠে উজাড় করে দেওয়াই ক্রিকেটারদের ধর্ম। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার এই বিশ্বকাপ দলের অনেকটাই ভাববার অবকাশ থাকল। সেদিন শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচটির সঙ্গে মঙ্গলবার ধরমশালায় নেদারল্যান্ডস ম্যাচে নিজেদের পারফরম্যান্স মিলিয়ে নেওয়ার জায়গাটাও হয়ত থাকল। এতটা ল্যাক অব এনার্জি, ক্রিকেটে বড় দেখা যায় না!
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নেদারল্যান্ডস হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। গ্রুপ পর্বে ডাচরা তাঁদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায় দিয়েছিল। কিন্তু এই বিশ্বকাপে প্রোটিয়ারা দুর্দান্ত ফর্মে। আলোচনায় এখানে আবার শ্রীলঙ্কা ম্যাচ এসে যাচ্ছে, সেই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের মনে থাকবে এ দলটিকে দেখে মনে হাওয়ারই কথা ছিল না এমন হতশ্রীভাবে হারবে। কাসিগো রাবাডা ও কেশব মহারাজ আপ্রাণ ক্রিজ কামড়ে ছিলেন, অবশ্যই দলের সম্মান রাখতে। বাস ডিলিড রাবাডাকে প্যাভিলিয়নে পাঠান। কিন্তু কেশব মহারাজ ক্রিজ থেকে নড়ার নামটি করছিলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকাকে অল আউট করার জন্য নেদারল্যান্ডসের দরকার ছিল একটি মাত্র উইকেট। এদিনের ম্যাচের আর মাত্র এক বল বাকী! মাত্র ২০৭ রানে ডাচরা প্রোটিয়াদের অল আউট করে দিলেন। এরপরেই ডাচ ড্রেসিংরুমে শুরু হল জয়ের আনন্দ।
বৃষ্টি এদিনের ম্যাচে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। খেলা শুরু হতেও দেরি হয়। খেলা শুরুর পরেও ধরমশালায় বৃষ্টি চোখ রাঙাতে ছাড়েনি। টস জিতে প্রোটিয়া ক্যাপ্টেন তেম্ভা বামুভা ফিল্ডিং নেন। ডাচরা নিঃসন্দেহে এই ম্যাচে বড় স্কোর দাঁড় করানোর লক্ষ্যে স্থির ছিলেন। কিন্তু বামুভার বোলিং স্কোয়াড লুনগি এনগিডি, কাগিসো রাবাডা, মার্কো জানসেনরা বোলিং দাপটে আটকে দিলেন ডাচদের ব্যাটারদের। স্লগ ওভারে মাঠ কাঁপল ডাচদের ব্যাটে। রোরেফ ভ্যান ডার মারওয়েই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে মূল হোতা হয়ে রইলেন। তাঁর জন্মও দক্ষিণ আফ্রিকায়। এ যেন ইতিহাসের গল্প! তিনি ওই দেশের হয়ে ক্রিকেটও খেলেছেন। অথচ এখন তিনি নেদারল্যান্ডস দলের নির্ভরশীল ক্রিকেটার। কিন্তু কী দুর্ভাগ্য! তাঁর দক্ষতাতেই হার হল প্রোটিয়াদের। এইদিনের ম্যাচে কিপিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যায় ডাচ ক্যাপ্টেন স্কট এডওয়ার্ডসকে। ব্যাট হাতেও যথেষ্ট পরিপূর্ণ। ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন। এদিন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও নিলেন এডওয়ার্ডস। জয়ের প্রতিক্রিয়ায় নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক ও উইকেট কিপার-ব্যাটার জানান, ‘আমরা প্রচুর প্রত্যাশা নিয়ে এসেছিলাম। আমাদের দলে দক্ষ ক্রিকেটারের অভাব নেই। অবশেষে প্রথম জয় পেয়ে খুশি। আশা করি এই সফরে আরও ম্যাচ জিততে পারব।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার ম্যাচটিই তাঁদের এই বিশ্বকাপে প্রথম জয়। প্রোটিয়াদের ৩৮ রানে হারিয়ে জয়ের আনন্দ স্ফূর্তিতে ভাসল ডাচদের বিশ্বকাপ স্কোয়াড। এটাও হয়ত ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি আলোচ্য অংশ হয়ে থাকল!
