



আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
সাশ্রয় নিউজ ★ কলকাতা : আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ভারতেও এই দিনটি স্মরণ করা হচ্ছে।
সারাদিন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় স্কুলে, সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে এই দিনটিতে ভাষা শহীদদের গভীর সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করছেন আপামর সাধারণ মানুষ। নিজের ভাষায় নিজের মতন করে এই দিনটিতে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। কলকাতার দেশপ্রিয়পার্কে একটি মনোজ্ঞা অনুষ্ঠান হয়। জেলায় জেলায় প্রভাতফেরি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন স্কুল কলেজ পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়-এও ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়।
উল্লখ্য, ভাষা আন্দোলন ফিরে দেখলে আমরা দেখব, দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক চক্রান্তের ফলে ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় নতুন দেশ পাকিস্তানের। আজকের বাংলাদেশ (তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান) পাকিস্তানের ভেতর পড়ে।
পাকিস্তানি শাসক উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এ একটি সভা থেকে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ‘উর্দুভাষা’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তার পরবর্তীতে বাংলা ভাষাভাষী যুবক-যুবতী, ছাত্রছাত্রী, তীব্র প্রতিবাদ করেন। পূর্বপাকিস্তানে ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীরা উর্দুকে মাতৃভাষা হিসেবে গ্রহণ করেননি।
স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, হোস্টেলে, মেসে পথে-প্রান্তরে যুবক-যুবতীরা গর্জে ওঠেন, উর্দু নয়, বাংলা ভাষাকেই মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ২৬ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে উর্দুভাষাকেই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেন। তখন তার প্রতিবাদে আরও জোরদার আন্দোলন শুরু করেন বাঙালি। গর্জে ওঠেন।বাংলাভাষাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ভাষাচক্রান্ত ব্যর্থ করতে রাজপথে নামেন ভাষা আন্দোলনকারীরা।২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনকারীদের ওপর পাকিস্তানি শাসক নির্মমভাবে গুলি চালায়। বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ভাষার জন্য শহীদ হোন রফিক, সালাম, বরকত, জাব্বার। এবং আরও অনেকে।
তারওপর দীর্ঘ ২ দশক পর ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পাকিস্তানিদের থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। ভাষার জন্য পথ দেখিয়েছিল বাঙালিরা তারপর, ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ ইউনেস্কো ‘২১ শে ফেব্রুয়ারি’ -কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
