



ভ্রমর সেনগুপ্ত : রাজস্থান রাজ্যের রাজপুতানা ঐতিহ্যের অন্যতম অনুপম নিদর্শন নাহারগড় দুর্গ (Nahargarh Fort)। জয়পুর শহরের একদম উপরে, আরাবল্লি পাহাড়ের কোলে গড়ে উঠা এই দুর্গটি একদম ভিন্ন অভিজ্ঞতা এনে দেয় প্রতিটি ভ্রমণপিপাসুর মনে। ১৭৩৪ সালে মহারাজা দ্বিতীয় সওয়াই জয় সিং (Maharaja Sawai Jai Singh II) এর নির্দেশে নির্মিত এই দুর্গটি মূলত ছিল জয়পুরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অঙ্গ হিসেবে। কিন্তু সময়ের স্রোতে এটি হয়ে উঠেছে ইতিহাস ও সৌন্দর্যের এক মনোহর সংমিশ্রণ।
নাহারগড় দুর্গের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অনেক কিংবদন্তী ও ইতিহাস। বলা হয়ে থাকে, দুর্গের নামকরণ হয়েছিল এক স্থানীয় শিকারীর নামে। নাহার। এছাড়া দুর্গটি অনেকবার সংস্কার করা হলেও, এর মূল সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রয়েছে। এখানকার প্রতিটি প্রাচীর, প্রতিটি কোণ যেন একটি গল্প বলে যায় পুরনো সময়ের রাজত্ব ও বীরত্বের। যারা রাজস্থান সফর করেন, তাদের কাছে নাহারগড় দুর্গ একটি অপরিহার্য দর্শনীয় স্থান। প্রতিটি বছর লক্ষ লক্ষ ভ্রমণপিপাসু এখানে আসেন ইতিহাসের সঙ্গে সময় কাটাতে। দুর্গের প্রাচীর বরাবর বসে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে গেলে বোঝা যায় কেন জয়পুরকে পিঙ্ক সিটি বলা হয়।শহরের গোলাপী রঙ আর পাহাড়ের সবুজের মিলন এক অবিস্মরণীয় অনুভূতি হয়।
নাহারগড় দুর্গের (Nahargarh Fort) সর্বপ্রথম দর্শনেই চোখ জুড়িয়ে যায় এর বিস্তৃত প্রাচীর আর পাহাড়ের কোল থেকে নেমে আসা মনোরম দৃশ্যে। জয়পুর শহরের বা পিঙ্ক সিটির পুরোপুরি চিত্র যেন এক ঝিলিক ধরা ছবির মত সামনে এসে পড়ে। দুর্গের প্রাচীর বরাবর হাঁটতে হাঁটতে নানা সময়ের রাজপরিবারের আরাধনা, যুদ্ধের স্মৃতি আর শৈল্পিক নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। সেখান থেকে শহরের রঙিন বাজার, জমকালো রাজপ্রাসাদ এবং দূরে দূরে ছড়িয়ে থাকা আরাভল্লি পাহাড়ের দৃশ্য একেবারে হৃদয় ছুঁয়ে যায়।নাহারগড় দুর্গের নির্মাণ কালে মহারাজা সওয়াই জয় সিং দ্বিতীয় লক্ষ্য করেছিলেন, “এই দুর্গের মাধ্যমে আমরা আমাদের শহরকে বাইরের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে চাই।” দুর্গের কৌশলগত অবস্থান এবং মোটা দালান প্রাচীর সত্যিই সেই কৌশলের কথা প্রমাণ করে। দুর্গের ভেতরে রয়েছে একাধিক প্রাসাদ ও ছাদ যেখানে রাজা-রানীদের আনন্দ ও বিনোদন ছিল। বিশেষ করে বারান্দা থেকে জয়পুরের সূর্যাস্ত দেখা যেন এক অপরূপ আনন্দের উৎস।
পর্যটকদের জন্য নাহারগড় একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। যেখানে ঐতিহাসিক স্মৃতির সাথে আধুনিক ভ্রমণ সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেছে। “আমার কাছে এখানে আসা মানে যেন এক ভিন্ন সময়ের যাত্রা। প্রকৃতির সান্নিধ্য আর শহরের চাঞ্চল্যের মাঝে এই দুর্গ যেন আমাদের অতীত ও বর্তমানকে একত্রিত করে,” বললেন অর্পিতা দেব (Arpita Dev), তিনি সম্প্রতি এই দুর্গ পরিদর্শন করেছেন। আর একই সঙ্গে পর্যটকরা ক্যামেরার লেন্সে বন্দী করেন দুর্গের প্রাচীর ও শহরের অসাধারণ দৃশ্য। শুধু ইতিহাস বা স্থাপত্যই নয়, নাহারগড় দুর্গ তার আশেপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্যও সুপরিচিত। আরাবল্লি পাহাড়ের স্বচ্ছ বায়ু, পাহাড়ের গায়ে ছড়ানো বৃক্ষরাজি এবং দূরত্বে শহরের আলোর ঝলক সব মিলিয়ে এক মনোরম পরিবেশ তৈরি করে। “শান্ত মন পেতে, একটু রিফ্রেশ হতে এখানে আসাটা আমার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়,” জানিয়েছেন পর্যটক রোহিত কুমার (Rohit Kumar)। যাঁরা প্রকৃতির মাঝে নিভৃতির সন্ধান চান, তাঁদের জন্য এই দুর্গ আদর্শ। নাহারগড় দুর্গের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অনেক কিংবদন্তী ও ইতিহাস। বলা হয়ে থাকে, দুর্গের নামকরণ হয়েছিল এক স্থানীয় শিকারীর নামে। নাহার। এছাড়া দুর্গটি অনেকবার সংস্কার করা হলেও, এর মূল সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রয়েছে। এখানকার প্রতিটি প্রাচীর, প্রতিটি কোণ যেন একটি গল্প বলে যায় পুরনো সময়ের রাজত্ব ও বীরত্বের। যারা রাজস্থান সফর করেন, তাদের কাছে নাহারগড় দুর্গ একটি অপরিহার্য দর্শনীয় স্থান। প্রতিটি বছর লক্ষ লক্ষ ভ্রমণপিপাসু এখানে আসেন ইতিহাসের সঙ্গে সময় কাটাতে। দুর্গের প্রাচীর বরাবর বসে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে গেলে বোঝা যায় কেন জয়পুরকে পিঙ্ক সিটি বলা হয়। শহরের গোলাপী রঙ আর পাহাড়ের সবুজের মিলন এক অবিস্মরণীয় অনুভূতি হয়। নাহারগড় দুর্গ শুধুমাত্র একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত সাক্ষী, যা আজও আমাদের অতীতকে স্পর্শ করে এবং প্রেরণা দেয়। মহারাজা দ্বিতীয় সওয়াই জয় সিং স্বপ্ন যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নের প্রতিফলন আজকের এই দুর্গের সৌন্দর্যে দেখা যায়। যাদের ভ্রমণ তালিকায় রয়েছে রাজস্থান, তাদের জন্য নাহারগড় দুর্গের সফর একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হবে। সেখানকার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির অসাধারণ সমাহার তাঁদের মুগ্ধ করবে।
ছবি: নাহারগড় দুর্গ থেকে দেখা জয়পুর শহরের মনোরম দৃশ্য।
আরও পড়ুন : Kandy Honemoon Travelog | মধুচন্দ্রিমায় ক্যান্ডি: প্রেম, প্রকৃতির আতিথেয়তায়
