Sasraya News

Shefali Jariwala | রাস্তায় দেখা থেকেই শুরু হয়েছিল জার্নি কাঁদছে গোটা বলিউড, বিনয় সাপরুর স্মৃতিচারণ

Listen

শ্রেয়সী মজুমদার ★সাশ্রয় নিউজ, মুম্বই: একদিন হঠাৎ রাস্তায় দেখা, সেখান থেকেই শুরু এক স্বপ্নের যাত্রা। আজ সেই যাত্রার পথিক শেফালি জরিওয়ালা (Shefali Jariwala) আর নেই। এমন খবর যখন ছড়িয়ে পড়ল, তখন এক সঙ্গে স্তব্ধ হয়ে গেল বলিউড, থেমে গেল অজস্র স্মৃতি। তবে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছেন যিনি, তিনি পরিচালক বিনয় সাপরু (Vinay Sapru)। যে মানুষটা শেফালিকে একরাশ স্বপ্ন আর সাফল্যের আলোয় পৌঁছে দিয়েছিলেন। সেই মানুষটার কণ্ঠেই আজ শোকের কান্না। শেফালিকে নিয়ে ফিরে গেছেন দুই দশকের বেশি পুরনো এক গল্পে। বিনয়ের স্মৃতিতে আজও অমলিন সেই মুহূর্ত “একদিন রাধিকা (Radhika Rao) আর আমি গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছি মুম্বইয়ের লিঙ্কিং রোড দিয়ে। হঠাৎই চোখে পড়ে, স্কুটারে মা-মেয়ে যাচ্ছেন। মেয়েটিকে দেখেই রাধিকা বলল, ‘ও কী সুন্দর দেখতে।’ আমি বললাম, ‘চল, খুঁজে দেখি।’ আমরা গাড়ি থামিয়ে ওদের সঙ্গে কথা বলি, কার্ড দিই, বলি, একবার অডিশনে এসো।” সেই পথচলার শুরুতেই লেখা হয় এক ইতিহাসের প্রথম পৃষ্ঠা, মিউজিক ভিডিও ‘কাঁটা লাগা’-র (Kaanta Laga) চিত্রনাট্যে ঢুকে পড়ে শেফালির নাম। বিনয়ের কথায়, “ওর কোনও অভিনয়ের অভিজ্ঞতা ছিল না, নাচও শেখেনি। তবুও কলেজ শেষে পরিশ্রম করে প্রতিদিন মহড়ায় আসত। জন্মদিনে সাদা জিনস উপহার পেয়েছিল দিদির কাছ থেকে, তাতেই রিহার্সালে চলে আসে। পরে দেখলাম জিনসে দাগ লেগে গেছে, চোখে জল কিন্তু মুখে একটাও অভিযোগ নেই।” আরও একবার থেমে গিয়ে তিনি বলেন, “ওর লুক ঠিক করতে পারছিলাম না। তখনই হঠাৎ মনে হল, আমার মেয়ের একটা জাপানি পুতুল আছে, ওর হেয়ারস্টাইলটাই দিয়ে দিই শেফালিকে। সেখান থেকেই ওর সিগনেচার লুক তৈরি হল। বাকি তো ইতিহাস।” শেফালি হয়ে ওঠেন দেশের ‘বম্বশেল গার্ল’। কিন্তু তার বাইরেও ছিল এক নিখাদ, সরল হৃদয়। বিনয় জানাচ্ছেন, “ও কখনও অভিযোগ করেনি যে ওর হাতে কাজ নেই। সবসময় পজিটিভ থাকত। যখন জিজ্ঞেস করেছিলাম ‘তুমি কীভাবে চাইবে মানুষ তোমাকে মনে রাখুক?’ ও বলেছিল, ‘একজন ভাল মানুষ হিসেবে।’ আমি আজ এতদিন পরে বলছি, ও সত্যিই ভাল মানুষ ছিল।” মাত্র কুড়ি দিন আগেই শেফালি এসেছিলেন বিনয়দের অফিসে। সঙ্গে এনেছিলেন প্রিয় জাপানি বেকারির কুকিজ। হাসিমুখে বলেছিলেন, “শেষ কুড়ি বছর তো ভালই কেটেছে। এবার চল, পরের কুড়ি বছরের প্ল্যান করি।” কারও ধারণা ছিল না, এই কথাগুলোই হবে তাঁর শেষ কিছু স্মৃতি।

তাঁর হঠাৎ মৃত্যু ঘিরে নানা রকম গুজব ছড়াতে শুরু করেছে সমাজমাধ্যমে। কেউ কেউ বলছেন অ্যান্টি-এজিং ওষুধ বা কোনও ডায়েট সাপ্লিমেন্টই হয়ত হয়ে উঠল মৃত্যুর কারণ। এই প্রসঙ্গে রীতিমতো বিরক্ত বিনয়। তিনি স্পষ্ট বলেন, “শেফালি খুবই স্বাস্থ্যসচেতন ছিল। ডায়েট ফলো করত, নিয়ম করে জিমে যেত। আজকের দিনে কেউ প্ল্যান্ট-বেসড সাপ্লিমেন্ট নিলেই কি তাকে দোষী ভাবা যায়? একটুও নয়। এইসব গুজব নির্মম ও ভিত্তিহীন।” একটা রাস্তার পাশে চলতে থাকা স্কুটারে দেখা হয়েছিল এক মেয়েকে। সেই মেয়েটিই হয়ে উঠেছিল এক প্রজন্মের হৃদয়জয়ী মুখ। আজ সেই মেয়েটির চলে যাওয়া শুধু একটি গানের মুখ হারিয়ে যাওয়া নয়, একটি সময়, একটি অ্যালবামের, একটি অধ্যায়ের শেষ। বিনয়ের গলায় কাঁপা সুরে যেন থেমে আসে কথার ধারা, “কেউ যদি জানতে চায়, কে ছিল শেফালি? আমি বলব, ও ছিল এক ঝলক রোদ্দুর, যা কাঁটা লাগার মতোই চিরকাল মনে থেকে যাবে।”

ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন :

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read