



শর্মিষ্ঠা সাহা মৈত্র ★ সাশ্রয় নিউজ ::কলকাতা : যৌনতা (Sex) নিয়ে মানুষের মনে কৌতুহলের শেষ নেই। তা নারী ও পুরুষ হোক বা যে কোনও প্রাণী। ইদানীং সমাজ মাধ্যমের দৌলতে নানাজন নানানমত জানিয়ে থাকেন। কিন্তু যৌনতা কী শুধু দু’টো শরীরের বিনিময়? না।

যৌনতা বা Sex নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, উপলব্ধি ও ব্যবহার বিভিন্ন। এর মধ্যে রয়েছে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন মাত্রা। যৌনতা কেবল একে-অপরের দু’টো শরীরের বিনিময় করা নয়, আছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক!

প্রথমেই মনে রাখতে হবে, প্রজননের বা সৃষ্টিকে অব্যাহত রাখার জন্য যৌনতা। এখানে
প্রজনন বা সন্তান উৎপাদন হল যৌনতার সবচেয়ে প্রাথমিক ও মৌলিক উদ্দেশ্য। মানুষের মধ্যে বংশবিস্তার ঘটানোর জন্য যৌন মিলনের মাধ্যমে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর সংযোগ ঘটে।

কিন্তু জেনে রাখতে হবে যে শুধু যৌনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভালবাসা ও মানসিক সংযোগ। অনেকের কাছে যৌনতা হল ভালবাসার প্রকাশ। আবার একে অপরের প্রতি অনুভূতি প্রকাশের একটি উপায়। শারীরিক সম্পর্ক (Sexual attachment) মানসিক ঘনিষ্ঠতা ও সম্পর্কের দৃঢ়তা বাড়াতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।

এছাড়াও আনন্দ ও তৃপ্তির জন্যও। যৌনতা মানুষের জীবনে শারীরিক আনন্দ ও মস্তিষ্কের আনন্দদায়ক হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় (যেমন: অক্সিটোসিন, ডোপামিন ইত্যাদি)। এটি খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু যৌনতা মানসিক চাপ কমাতে, ভাল ঘুমতে ভাল অনুভূতি সৃষ্টিতে সাহায্য করে। আবার আত্ম-অন্বেষণ ও আত্ম-প্রকাশেও জুড়ি মেলা ভার।
অনেক মানুষ যৌনতার ভেতরে নিজেদের শারীরিক ও মানসিক চাহিদাকেও আবিষ্কার করে ফেলেন। এটি অবশ্যই আত্মপরিচয়ের অংশ হতে পারে। বিশেষ করে যৌন পরিচয় ও যৌন অভিব্যক্তি প্রকাশের ক্ষেত্রে তো অবশ্যই। অন্যদিকে, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট দেখলে দেখা যায়— যৌনতা আমাদের সমাজে নৈতিকতা, সাংস্কৃতিক পরিবেশ ও আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত। এবং সমাজে যৌনতা বিবাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আবার বৈদেশিক কিছু সমাজে উন্মুক্ত যৌন সম্পর্কের হদিস মেলে।
চিকিৎসা ও থেরাপির অংশ হিসেবেও দেখা হয় যৌনতাকে। যৌনতার ভেতর দিয়ে মানুষের অনেক সমস্যার সমাধান হয়। এক্ষেত্রে যৌনশিক্ষা, যৌন চিকিৎসা এবং থেরাপি সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল না। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যৌন সমস্যা চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

তবে মনে রাখতে হবে যৌনতা শুধু শারীরিক সম্পর্ক নয়। বরং এটি মানুষের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা প্রজনন, সম্পর্ক, আনন্দ, পরিচয় এবং সমাজের নিয়ম-নীতির সঙ্গে এক সুতোয় বাঁধা। তবে যৌনতা নিয়ে সচেতনতা, সম্মতি, নিরাপত্তা, এবং দায়িত্ববোধ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যৌনতা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি হলে সমাজে ধর্ষণ নারী ও পুরুষ নির্যাতন অনেকটাই প্রশমিত হতে পারে বলে মত সমাজবিজ্ঞানীদের।
সবছবি : প্রতিনিধিত্বমূলক ও সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Love, sex and Ancient India : প্রাচীন ভারতে প্রেম যৌনতায় ধর্মীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপট
