



রীতা বিশ্বাস পান্ডে : সত্যজিৎ রায়-এর (Satyajit Ray) ‘অপুর সংসার’ অপু ত্রয়ীর তৃতীয় তথা শেষ চলচ্চিত্র, ১৯৫৯ সালে মুক্তি পায়।

এই সিনেমাটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অপরাজিত’ উপন্যাসের শেষাংশ অবলম্বনে নির্মিত। ‘পথের পাঁচালী’ এবং ‘অপরাজিত’-এর পরে এই সিনেমা অপু নামক এক তরুণের জীবনের পূর্ণতা এবং পরিণতির চিত্রায়ণ করে।

এই চলচ্চিত্রে অপু (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) একজন তরুণ, যে কলকাতার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকে এবং লেখালেখি করে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করে। অপ্রত্যাশিতভাবে তার বন্ধু পুলুর (স্বপন মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে এক গ্রামে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যায়। সেখানে এক আকস্মিক পরিস্থিতিতে, যখন বর অপ্রকৃতিস্থ বলে জানা যায়, তখন অপু কনের (শর্মিলা ঠাকুর) সন্মান রক্ষার্থে তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়।

অপু এবং অপর্ণার দাম্পত্য জীবন শুরু হয় অভাবের মধ্যে, কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গভীর ভালবাসা ও বোঝাপড়া গড়ে ওঠে। তাদের সংসারে আসে পুত্র কাজল। তবে তাদের সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয় না। অপর্ণা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়, যা অপুকে চরম শোকের সাগরে নিমজ্জিত করে। পুত্রকে সে অপর্ণার মৃত্যুর জন্য দায়ী করে এবং ঘরছাড়া হয়ে যায়।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর, পুলু অপুকে খুঁজে বের করে এবং তার পুত্র কাজলের প্রতি দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করে। অপু ফিরে আসে এবং প্রথমবার পুত্রকে দেখে তার মধ্যে গভীর স্নেহ জন্মায়। সিনেমার শেষ দৃশ্যে পিতা ও পুত্রের এক নতুন সম্পর্কের সূচনা হয়, যেখানে অপু কাজলের হাত ধরে এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়।

‘অপুর সংসার’ শুধু অপুর জীবনের সমাপ্তি নয়, এটি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং শর্মিলা ঠাকুরের চলচ্চিত্র জগতে আত্মপ্রকাশের সিনেমাও। রবিশঙ্করের সঙ্গীত এবং সুব্রত মিত্রের চিত্রগ্রহণ এই সিনেমাটিকে এক অসাধারণ শিল্পকর্মে পরিণত করেছে। এই সিনেমাটি সত্যজিৎ রায-এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং আন্তর্জাতিকভাবেও বহু প্রশংসা লাভ করেছে। ‘অপুর সংসার’ ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে।🍁
ছবি : সংগৃহীত
এক নজরে 👉 সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল-এর জন্য উপন্যাস, কবিতা (একধিক কবিতা পাঠালে ভালো হয়। সঙ্গে একটি লেখক পরিচিতি। গল্প, প্রবন্ধ, গদ্য, পুস্তক আলোচনা (আলোচনার জন্য দুই কপি বই পাঠাতে হবে), ভ্রমণ কাহিনী। লেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকতে হবে। অবশ্যই কোনও প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমনকী কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বা পোর্টালে পূর্ব প্রকাশিত লেখা পাঠাবেন না। ই-মেল করে লেখা পাঠান। ই-মেল আই ডি : editor.sasrayanews@gmail.com
বি: দ্র: সমস্ত লেখা লেখকের নিজস্ব। দায় লেখকের নিজস্ব। কোনও বিতর্কিত বিষয় হলে সংবাদ সংস্থা কোনওভাবেই দায়ী থাকবে না এবং সমর্থন করে না। কোনও আইনি জটিলতায় সাশ্রয় নিউজ চ্যানেল থাকে না। লেখক লেখিকা প্রত্যেকেই লেখার প্রতি দ্বায়িত্ববান হয়ে উঠুন। লেখা নির্বাচনে (মনোনয়ন ও অমনোনয়ন) সম্পাদকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
