Sasraya News

Samik Bhattacharya| শমীক ভট্টাচার্যকে নিয়ে ঐক্যের সুর বিজেপিতে, তবু দিলীপ ঘোষকে এড়িয়ে গেলেন শুভেন্দু

Listen

সাশ্রয় নিউজ ✪ কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি হিসাবে শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)-এর নাম ঘোষণা হতেই সায়েন্স সিটিতে আয়োজন করা হয়েছিল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও বিদায়ী সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) দু’জনেই এক সুরে শমীকের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। তবে এদিনের ঐক্যের ছবিতে সামান্য হলেও তাল কেটেছে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) প্রসঙ্গ ঘিরে। অনুষ্ঠানে রাজ্যের প্রাক্তন সভাপতি অসীম ঘোষ (Asim Ghosh), রাহুল সিনহা (Rahul Sinha)-সহ অনেকেই উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh)। বিজেপির অন্দরে কানাঘুষো, দলীয় নেতৃত্বের একাংশের অনিচ্ছাতেই তাঁকে ডাকা হয়নি। এক নেতার কথায়, “দলের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে দিলীপদাকে না ডাকায় অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে।” তবে অপর অংশের দাবি, “এতে কোনও সমস্যাই নেই, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই ডাকা হয়নি।”

মঞ্চে বিদায়ী সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) শমীককে দলের পতাকা তুলে দিয়ে বলেন, “চার বছর আগে দিলীপদা আমাকে জিন্দাবাদ বলিয়েছিলেন, আজ আমি চাই, আপনারা সবাই শমীক ভট্টাচার্য জিন্দাবাদ বলুন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই হবে।” দিলীপ ঘোষের নাম তিনি বারবারই উল্লেখ করেছেন। তবে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) তাঁর বক্তৃতায় অসীম ঘোষ (Asim Ghosh), রাহুল সিনহা (Rahul Sinha), সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)-এর নাম করলেও, দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নাম একবারও মুখে আনেননি। অনেকের মতে, শুভেন্দুর এই ভূমিকা তাদের সম্পর্কের শীতলতার ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, বিজেপির অন্দরে ‘নবীন-প্রবীণ’ দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ২০২১ সালের আগে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সময় দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ছিলেন রাজ্য সভাপতি। দু’জনের দূরত্ব ক্রমশ প্রকাশ্যে আসে। কিছুদিন আগেই দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ডাকে সাড়া দিয়ে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ। বিজেপি ওই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও দিলীপের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয় রাজ্য নেতৃত্ব। তখনও জল্পনা ছড়িয়েছিল, বিজেপি ছাড়তে পারেন দিলীপ। যদিও পরে তা উড়িয়ে দেন তিনি নিজেই। দলের একাংশের মতে, দীঘার ঘটনার পর থেকেই দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) প্রতি দূরত্ব বেড়েছে রাজ্য নেতৃত্বের।

এদিন সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) বলেন, “বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়। সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলেদের হাতে পাথর থাকলে, তা কেড়ে নিয়ে বই দিতে চাই। তলোয়ারের বদলে কলম দিতে চাই। দুর্গাপূজা আর মহররমের মিছিল যেন পাশাপাশি চলতে পারে, আমরা সেই বাংলাই চাই।” পাশাপাশি তিনি নতুন ও পুরনো কর্মীদের মিলিতভাবে কাজ করার বার্তাও দেন। তাঁর কথায়, “পুরনোরা মনে রাখবেন, নতুন না এলে পার্টি বাড়বে না। আবার নতুনদেরও মনে রাখতে হবে, পুরনোরা হার জেনেও প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিলেন।” উল্লেখ্য যে, রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপির কাছে আসন্ন ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) এদিন শমীকের নেতৃত্বে এককাট্টা হওয়ার বার্তা দিয়ে বলেন, “২০২১ সালের পর আমাদের লাখ লাখ কর্মী অত্যাচারিত হয়েছেন, ঘরছাড়া হয়েছেন। তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শমীকদার নেতৃত্বেই হবে।” প্রসঙ্গত, সব মিলিয়ে, শমীক ভট্টাচার্যর (Samik Bhattacharya) অভিষেক অনুষ্ঠানে দলের ঐক্যের বার্তা যেমন প্রতিফলিত হয়েছে, তেমনই দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিজেপির অন্দরের সমীকরণকেই নতুন করে স্পষ্ট করেছে। ২০২৬-এর লড়াইয়ের আগে এই অন্তর্দ্বন্দ্ব কতটা মিটিয়ে বিজেপি শক্তি সঞ্চয় করতে পারে, সেদিকেই এখন নজর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Narendra Modi Ghana speech | ঘানার সংসদে মোদী : ‘ভারতের গণতন্ত্র কোনও সিস্টেম নয়, এ এক সংস্কার’

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read