



শর্মিষ্ঠা সাহা মৈত্র ★ সাশ্রয় নিউজ : লখনউয়ের এক অভিজাত পাঁচতারা হোটেলে রবিবার, ৮ জুনের সন্ধ্যায় জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল ভারতীয় ক্রিকেটার রিঙ্কু সিং (Rinku Singh) ও সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) নবনির্বাচিত সাংসদ প্রিয়া সরোজ (Priya Saroj)-এর রিং সেরিমনি বা বাগদান। খেলাধুলা আর রাজনীতির দুই আলাদা জগৎ থেকে উঠে আসা এই দুই জনপ্রিয় মুখের প্রেমের গল্প এখন দেশের রাজনীতি ও ক্রিকেটপ্রেমীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

রিঙ্কু ও প্রিয়ার বাগদান অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ছিল চূড়ান্ত মাত্রার। প্রায় ৩০০-এরও বেশি ভিভিআইপি (VVIP GUEST) আমন্ত্রিত ছিলেন বলে জানা যায়। একসঙ্গে দেখা যায়, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, ক্রিকেটার, চলচ্চিত্র তারকা ও ব্যবসায়ীদের সাজে-গোজে, আলোয়-আয়োজনে, অতিথি আপ্যায়নে ক্রমেই জমে ওঠে অনুষ্ঠান। কেউ যদি বলেন, ওটা সেলিব্রিটি ককটেল তবে ভুল হবে না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav), সাংসদ ডিম্পল যাদব (Dimple Yadav), রাজ্যসভার সাংসদ জয়া বচ্চন (Jaya Bachchan)-সহ দলের একাধিক শীর্ষনেতা। ছিলেন প্রিয়ার বাবা, প্রাক্তন সাংসদ তুফানি সরোজ (Toofani Saroj)। পরিবারের আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে ক্রিকেট জগতের ঘনিষ্ঠরা। প্রিয়া ও রিঙ্কুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তাঁর কলকাতা নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders) দলের একাধিক সতীর্থও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

২০২৩ সালের আইপিএলে (IPL 2023) গুজরাট টাইটানসের (Gujarat Titans) বিরুদ্ধে শেষ ওভারে লাগাতার পাঁচটি ছক্কা মেরে এক রুদ্ধশ্বাস জয়ের ইতিহাস রচনা করেছিলেন রিঙ্কু সিং। সেই ম্যাচের পর থেকেই এক লাফে জাতীয় স্তরে উঠে আসে তাঁর নাম। বর্তমানে ভারতের টি-২০ দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবেও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অন্যদিকে, প্রিয়া সরোজ রাজনীতির তরুণ মুখ। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের মছলি শহর (Machhlishahr) আসন থেকে জয়ী হয়ে সংসদে পা রাখেন। প্রিয়া সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির সঙ্গেই বড় হওয়া প্রিয়া, বাবার রাজনীতির প্রভাবেই দলের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। তবে নিজের মেধা ও পরিশ্রমে খুব অল্প সময়েই দলের মধ্যে নিজস্ব জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এই দুই জগতের মানুষের মধ্যে কীভাবে তৈরি হল সম্পর্ক? এই প্রশ্নটা সকলের! ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, এক কমন বন্ধুর বাবার মাধ্যমে প্রথম আলাপ হয় রিঙ্কু ও প্রিয়ার। সেই ব্যক্তি নিজেও এক সময় পেশাদার ক্রিকেটার ছিলেন। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব, তার পরে ধীরে ধীরে সম্পর্ক ঘনিয়ে ওঠে। দুই পরিবারের সম্মতিতে সেই সম্পর্ক এখন রূপ নিচ্ছে বিয়ের বন্ধনে।

এই মুহূর্তে রিঙ্কু ও প্রিয়া তাঁদের বাগদানে খুশি। তবে তাঁদের জীবনের নতুন অধ্যায়ের শুরু হবে চলতি বছরের ১৮ নভেম্বর, বারাণসীর (Varanasi) তাজ হোটেলে বলে সূত্র মারফৎ খবর। সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে তাঁদের রাজকীয় বিয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে ক্রিকেট, রাজনীতি, চলচ্চিত্র ও কর্পোরেট দুনিয়ার একাধিক হেভিওয়েট ব্যক্তিত্বের। বিয়ের আমন্ত্রণপত্র ছাপার কাজও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী মাসে আমন্ত্রণ বিতরণ শুরু হবে। ওই দিন বারাণসীতে সাত পাকে বাঁধা পড়বেন রিঙ্কু ও প্রিয়া। প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। তাঁদের প্রেমকাহিনি এখন সমাজমাধ্যমেও ভাইরাল। নেটিজেনদের শুভেচ্ছায় ভরে যাচ্ছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও X-এর টাইমলাইন। ভারতীয় ক্রিকেটের স্টার রিঙ্কু আর রাজনীতির উদীয়মান মুখ প্রিয়ার এই সম্পর্ক যেন এক নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে দুই জগতের মধ্যে। বলিউডের রোমান্টিক সিনেমাকেও হার মানায় তাঁদের জীবনের গল্প। রাজনৈতিক মহলের এক সূত্র জানাচ্ছে, রিঙ্কুর ‘মাটির মানুষ’ ইমেজ ও প্রিয়ার মজবুত রাজনীতিক অবস্থান, এই যুগলবন্দি আগামীদিনে জনমানসে নতুন বার্তা দিতে পারে।

জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন রিঙ্কু ও প্রিয়া। তাঁদের প্রেমের মতোই যেন বৈবাহিক জীবনও হয় সাফল্যে ভরপুর, এটাই কামনা করছেন তাঁদের শুভানুধ্যায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। এই যুগলের গল্প প্রমাণ করে, ভালবাসা সীমানা মানে না। সে মাঠই হোক কিংবা সংসদ।
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Rinku Singh Priya Saroj Engagement : রিঙ্কু-প্রিয়ার জীবনের নতুন ইনিংস : বাগদানে খুশির আবহ
