Sasraya News

Rainfall | দিনে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস, ১৫ জেলায় লাল-কমলা সতর্কতা

Listen

সাশ্রয় নিউজ ★ কলকাতা: বর্ষার আগমন বার্তাই যেন নিয়ে এল আতঙ্কের সুর। জুনের মাঝামাঝি সময়েই নিম্নচাপের প্রভাবে রাজ্যের একাধিক জেলায় শুরু হতে চলেছে প্রবল বর্ষণ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Alipore Meteorological Department) সূত্র জানিয়েছে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় হতে পারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি। রাজ্যের ১৫টি জেলায় ইতিমধ্যে জারি হয়েছে লাল (Red) ও কমলা (Orange) সতর্কতা। কিছু জায়গায় একদিনে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের ৬টি জেলায় জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। এই জেলাগুলি হল : দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas), পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur), পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman), পুরুলিয়া (Purulia), বাঁকুড়া (Bankura) এবং বীরভূম (Birbhum)। পাশাপাশি, কলকাতা (Kolkata), হাওড়া (Howrah), হুগলি (Hooghly), উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম (Jhargram), পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur), নদিয়া (Nadia) ও মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলাতেও জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। আবহাওয়াবিদদের মতে, বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অতি সক্রিয় হয়ে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে প্রচণ্ড বৃষ্টি নিয়ে আসতে পারে। আলিপুরের হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, “নিম্নচাপটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে আগামী দু’দিনে ব্যাপক বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও দিনে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।”

ছবি : প্রতীকী

কলকাতার ক্ষেত্রে আলিপুর হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত শহরে একটানা প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। যার জেরে শহরের নিচু এলাকায় জল জমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। তীব্র যানজট হতে পারে শহরের ব্যস্ত রাস্তাগুলিতে। ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation) থেকে সমস্ত ড্রেন পরিষ্কার রাখার কাজ ত্বরান্বিত করা হয়েছে। জরুরি পরিষেবা বিভাগগুলি কন্ট্রোল রুম খোলা রেখেছে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে। কলকাতা পুরসভার এক মুখপাত্র জানান, “অতি ভারী বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে আমাদের দল প্রস্তুত। কোথাও জল জমলে দ্রুত পাম্পিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। নাগরিকদের অনুরোধ, অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরোন।”

এদিকে, লাগাতার বৃষ্টির জেরে সমস্যায় পড়তে পারেন চাষিরা। বিশেষ করে যাঁরা সবজি ও ফুলচাষ করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক কৃষক সুভাষ গায়েন (Subhash Gayen) বলেন, “এখনই যদি এত বৃষ্টি হয়, তবে ফুল আর পাঁঠার সবজির চাষ শেষ হয়ে যাবে। জল দাঁড়িয়ে গেলে গাছ পচে যায়।” তবে আগামী শুক্র ও শনিবার পরিস্থিতি কিছুটা স্বস্তিদায়ক হতে পারে। সেই সময় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কম হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। যদিও রবিবার থেকে ফের এক দফা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষি দফতরের পক্ষ থেকেও। শুধু দক্ষিণবঙ্গই নয়, উত্তরবঙ্গের আবহাওয়াও অনিশ্চয়তার ছায়ায় ঢাকা। আলিপুরদুয়ার (Alipurduar), জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri), মালদা (Malda), উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর (Uttar & Dakshin Dinajpur) জেলাতেও আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির দাপট থাকবে উত্তরবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলাতেই। তিস্তা (Teesta), তোর্সা (Torsa) সহ একাধিক পাহাড়ি নদীর জলস্তর বাড়তে পারে। পাহাড়ি ধসের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না দার্জিলিং (Darjeeling) জেলা প্রশাসনও। দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা তথা পর্যটন ব্যবসায়ী রাজীব লামা (Rajiv Lama) বলেন, “বৃষ্টিতে তো পাহাড়ে পর্যটকেরা এখন কমই আসে। ধস হলে তো আরও সমস্যায় পড়ব আমরা।”

আবহাওয়ার এই চূড়ান্ত চাঞ্চল্যকর পরিবর্তনের মাঝে নাগরিকদের একটাই উপদেশ, সতর্ক থাকুন, নিরাপদে থাকুন। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর (Disaster Management Department) থেকে জেলার সমস্ত প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এমনকী প্রয়োজন হলে স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশও জারি করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের আকাশে জমে থাকা ঘন কালো মেঘ যেন কেবল বৃষ্টির বার্তা নয়, সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে সতর্কতার সুরও। যতই বর্ষার গান মনে বাজুক, বাস্তবে প্রস্তুতি না থাকলে বিপদ যে সামনে দাঁড়িয়ে।

ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Working hour for New Mothers : মায়েদের ‘আট ঘণ্টা’ দাবিভ, নতুন সময়ের দাবি, নাকি বিতর্কের সূচনা?

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read