Sasraya News

Thursday, May 15, 2025

Rabindranath Tagore : ‘চির-নূতনেরে দিল ডাক পঁচিশে বৈশাখ’…

Listen


পঁচিশে বৈশাখ

 

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর পিতা-মাতার চর্তুদশ সন্তান। রবীন্দ্রনাথের জীবনে পিতার প্রভাব ছিল অপরিসীম।তিনি প্রথাগতভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেননি। কিন্ত বাড়িতে গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে বিদ্যাচর্চা শুরু হয়। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। লিখেছেন : অভিজিৎ দত্ত

ন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতবর্ষের মুখ যারা আলোকিত করেছিলেন তাঁদের মধ্যমণি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)। রবীন্দ্রনাথের নাম সার্থক। রবির আলোয় শুধু বাংলা বা ভারতবর্ষ নয় গোটা বিশ্ব আলোকিত হয়েছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজি ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতা সারদাসুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর পিতা-মাতার চর্তুদশ সন্তান। রবীন্দ্রনাথের জীবনে পিতার প্রভাব ছিল অপরিসীম। তিনি প্রথাগতভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেননি। কিন্ত বাড়িতে গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে বিদ্যাচর্চা শুরু হয়। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন এক বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। গান, নাটক, কবিতা, গল্প, উপন্যাস লেখার পাশাপাশি ছবি আঁকায় পারদর্শী ছিলেন। তাঁর মৌলিক কাব্য গ্রন্থের সংখ্যা ৫২টি। ২০০০টি গান, ১৪টি উপন্যাস, ৯৫টি ছোটগল্প, ৩৮টি নাটক ও ৩৬টি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। ১৮৭৮খ্রিষ্টাব্দে বের হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ, কবিকাহিনী। ‘বনফুল’ রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রথম বই।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-ই একমাত্র ব্যক্তি যাঁর লেখা গান তিনটে দেশে জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা পেয়েছে (ভারতবর্ষ, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই বলে গিয়েছেন, লোকে যদি তাকে ভুলেও যায় তবুও তার গান তাকে অমর করে রাখবে।

১৮৭৮ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে ব্যারিস্টারি পড়বার জন্য ইংল্যান্ডে যান। কিন্ত সাহিত্যচর্চায় আগ্রহের কারণে আইন পড়া সম্পূর্ণ করতে পারেননি। দেড় বছর ইংল্যান্ডে থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। প্রথমে শিলাইদহের জমিদারি দেখার ভার পড়ে। ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মাচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে ওখানেই তিনি পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে থাকেন। তাদের অধস্থন কর্মচারী বেণীমাধব রায়চৌধুরীর কন্যা ভবতারিণী দেবীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ভবতারিণীর নাম হয় মৃণালিনী রবীন্দ্রনাথ-মৃণালিনীর সন্তান ছিল পাঁচটি। কিন্ত রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় তাঁর মাতৃবিয়োগ হয় (মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে)। এছাড়া তাঁর পত্নী, সন্তান বিয়োগ হয় তার জীবদ্দশাতেই।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছবি : আন্তর্জালিক

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে গ্রাম উন্নয়নের জন্য শ্রীনেকেতন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ‘গীতাঞ্জলী’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি এশিয়ার মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ লাভ করেন। তিনি ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে নাইট উপাধি লাভ করেন। কিন্ত ইংরেজ সরকারের জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি ত্যাগ করেন। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ এই দীর্ঘ সময়ে তিনি পাঁচটি মহাদেশের ৩২টির ও বেশি দেশে ভ্রমণ করেন। রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘য়ুরোপ ভ্রমণ’ বা ‘চিন ভ্রমণ’ বা ‘রাশিয়ার চিঠি’ থেকে তাঁর ভ্রমণ সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের লেখা রবীন্দ্র জীবনী থেকে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘জীবনস্মৃতি’ ও ‘ছেলেবেলা’ গ্রন্থ থেকেও রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে জানা যায়। ১৯৪১ সালের ২২শে আগস্ট কলকাতার জোড়াসাঁকোর পৈত্রিক বাড়িতে তিনি দেহ রাখেন। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একজন বড় শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক। মানবপ্রেম ও প্রকৃতি প্রেম ছিল তার জীবনের মূলকথা। তিনি নগর সভ‍্যতা পছন্দ করতেন না। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘দাও ফিরে সে অরণ্য/ লহ এ নগর।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চেয়েছিলেন, গ্রামের উন্নয়ন। তিনি মনে করতেন ভারতবর্ষের মত দেশে গ্রামের উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব। এই কারণে তিনি তার পুত্র রথীন্দ্রনাথকে বিদেশে পাঠান কৃষিবিদ্যা শেখার জন্য।

মনে রাখতে হবে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-ই একমাত্র ব্যক্তি যাঁর লেখা গান তিনটে দেশে জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা পেয়েছে (ভারতবর্ষ, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই বলে গিয়েছেন, লোকে যদি তাকে ভুলেও যায় তবুও তার গান তাকে অমর করে রাখবে। রবীন্দ্রনাথ জীবনে অনেক আঘাত খেয়েছেন কিন্ত তার ঈশ্বরপ্রেম ও মানুষের মতি ভালবাসা তাঁকে অমর করে রেখেছে।

ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Sasraya News Sunday’s Literature Special | 4th May 2025, Issue 63 | সাশ্রয় নিউজ রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল | সংখ্যা ৬৩ | ৪ মে ২০২৫, রবিবার

 

এক নজরে 👉 সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল-এর জন্য উপন্যাস, কবিতা (একধিক কবিতা পাঠালে ভালো হয়। সঙ্গে একটি লেখক পরিচিতি। গল্প, প্রবন্ধ, গদ্য, পুস্তক আলোচনা (আলোচনার জন্য দুই কপি বই পাঠাতে হবে), ভ্রমণ কাহিনী। লেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকতে হবে। অবশ্যই কোনও প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমনকী কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বা পোর্টালে পূর্ব প্রকাশিত লেখা পাঠাবেন না। ই-মেল করে লেখা পাঠান। ই-মেল আই ডি : editor.sasrayanews@gmail.com

 

 

বি: দ্র: সমস্ত লেখা লেখকের নিজস্ব। দায় লেখকের নিজস্ব। কোনও বিতর্কিত বিষয় হলে সংবাদ সংস্থা কোনওভাবেই দায়ী থাকবে না এবং সমর্থন করে না। কোনও আইনি জটিলতায় সাশ্রয় নিউজ চ্যানেল থাকে না। লেখক লেখিকা প্রত্যেকেই লেখার প্রতি দ্বায়িত্ববান হয়ে উঠুন। লেখা নির্বাচনে (মনোনয়ন ও অমনোনয়ন) সম্পাদকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment