Sasraya News

Puri Ratha Yatra | জনসমুদ্রে প্রভু জগন্নাথদেবের অবগাহন

Listen

সাশ্রয় নিউজ ★ পুরী : পুরী যেন শুক্রবার সকাল থেকেই পরিণত হয়েছিল মানুষের মহাসমুদ্রে। রথযাত্রার (Rath Yatra) শুভ মুহূর্তে ‘জয় জগন্নাথ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় সমুদ্রতীরের শহর। হাজার হাজার ভক্ত আগে থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন মূল মন্দির প্রাঙ্গণ এলাকায়। কাঠের তৈরি তিনটি বিশাল রথে (Chariot) চাপিয়ে যাত্রা শুরু হয় প্রভু জগন্নাথদেব (Jagannath Dev), দাদা বলরাম (Balabhadra) এবং বোন সুভদ্রার (Subhadra)। রথ টানার আগে চলে ঐতিহ্যবাহী চেরা পাহরা (Chhera Pahanra) অনুষ্ঠান। রাজগুরু গাজপতি মহারাজ দিব্য সিংহ দেব (Dibyasingha Deb) স্বয়ং ঝাঁটা হাতে রথের চারপাশ পরিস্কার করেন। ভক্তদের বিশ্বাস, রাজা নিজেকে প্রভুর দাস হিসেবেই প্রকাশ করেন এই আচার মাধ্যমে। ওড়িশা (Odisha) সরকারের এক আধিকারিক জানান, ‘এটি শুধু রীতি নয়, ভক্তি ও সমর্পণের প্রতীক।’

এই বছর প্রায় ১২ লাখের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে অনুমান পুলিশ প্রশাসনের। পুরী জেলা পুলিশ সুপার পিনাক মিশ্র (Pinak Mishra) সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৮০০০ পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। ড্রোন ও সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি চলছে।’ ওড়িশা ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (Odisha Disaster Response Force) ও ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (National Disaster Response Force) দলও ছিল প্রস্তুত। প্রভু জগন্নাথদেবের (Jagannath Dev) রথ নন্দীঘোষ (Nandighosha), বলরামের (Balabhadra) রথ তলধ্বজ (Taladhwaja) এবং সুভদ্রার (Subhadra) রথ দর্পদালান (Darpadalana) তিনটি রথই কাঠের তৈরি। পুরনো রথ ভেঙে নতুন রথ নির্মাণ করা হয় প্রতি বছর। রথযাত্রায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ থাকে প্রভুর ‘দর্শন’ এবং রথটানা। বহু বিদেশি পর্যটকও এদিন ভিড় জমান পুরীতে।

ভুবনেশ্বর (Bhubaneswar) থেকে আসা একজন ভক্ত রঞ্জনা দাস (Ranjana Das) বলেন, ‘প্রতিবারই আসি। কিন্তু এ বছর যেন আরও বেশি ভক্তি আর আবেগ অনুভব করছি।’ একই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন কলকাতা (Kolkata) থেকে আসা সঞ্জয় ঘোষ (Sanjay Ghosh)। তাঁর কথায়, ‘জগন্নাথদেবকে (Jagannath Dev) দেখতে পাওয়া, রথ টানা জীবনে পূণ্য অর্জনের সবচেয়ে বড় সুযোগ।’
উল্লেখ্য যে, রথযাত্রা উপলক্ষ্যে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী সামাজ মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তায় লিখেছেন, ‘প্রভু জগন্নাথের (Jagannath) কৃপায় সকলের জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক।’

শুক্রবার সকাল ৯টার পর থেকেই শুরু হয় রথ টানা। প্রথমে বলরামের (Balabhadra), তারপর সুভদ্রার (Subhadra) সবশেষে প্রভু জগন্নাথদেবের (Jagannath Dev) রথ টানা হয়। রথযাত্রা শেষে গুণ্ডিচা মন্দিরে (Gundicha Temple) বিরাজ করবেন প্রভু। সেখানে সাতদিন থেকে আবার ফিরতি যাত্রা, উল্টো রথ। আয়োজক পুরী মন্দির প্রশাসন (Puri Temple Administration) জানিয়েছে, এ বছর ভিড় সামলাতে বিশেষ স্বাস্থ্য শিবির, পানীয় জলের স্টল, বিশ্রামাগার ও মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরীর সমুদ্রতীরের বাতাসে শুক্রবার শুধু ঢাকের বাজনা আর শঙ্খধ্বনি নয়, মিশে ছিল কোটি কোটি মানুষের নিঃশ্বাস। ভক্তি, উচ্ছ্বাস আর বিশ্বাসের এমন মিলনমেলা সত্যিই বিরল।

ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Digha Ratha Yatra | দীঘার রথযাত্রায় ইতিহাসের সাক্ষী, জগন্নাথদেবের আরতি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read