Sasraya News

Priyanka Chopra | ‘যা দেখছেন, সবটাই সত্যি নয়!’ ভার্জিনিটি বিতর্কে মুখ খুললেন প্রিয়াঙ্কা

Listen

স্নিগ্ধা বসু ★ সাশ্রয় নিউজ, মুম্বই: “এটা আমি নই, এটা আমার উক্তিও নয়, এটা আমার কণ্ঠও নয়।” এই কটাক্ষে ফের নেটদুনিয়ায় সোজাসাপটা হুঙ্কার দিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া (Priyanka Chopra)। সম্প্রতি এক বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তি, তাতে নাম জড়িয়ে পড়া, অবশেষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ‘দেশি গার্ল’। ভার্জিনিটি বা কুমারীত্ব সংক্রান্ত একটি বক্তব্য যেটি ঘুরে বেড়াচ্ছিল বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে, সেটিকে পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে তিনি উড়িয়ে দিলেন। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই ভাইরাল হয়েছিল একটি মন্তব্য, “বিয়ের জন্য অক্ষতযোনী খুঁজবেন না। বরং সভ্য মানুষ খুঁজুন। কারণ সতীত্ব এক রাতেই খুইয়ে যেতে পারে। কিন্তু আচার-ব্যবহারই মানুষের আসল পরিচয়।” অন্তর্জালে এই বার্তাটি রীতিমতো দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই মন্তব্যের পাশে জুড়ে দেওয়া হয় প্রিয়াঙ্কা চোপড়া (Priyanka Chopra)-র নাম। বহুজন এটি বিশ্বাসও করতে শুরু করেন। কেউ বাহবা দেন অভিনেত্রীকে ‘প্রগতিশীল ভাবনার জন্য’, আবার কেউ নিন্দায় মুখর হন। এই হুলস্থুলের মধ্যেই বৃহস্পতিবার নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট ভাগ করে নিয়ে প্রিয়ঙ্কা লিখলেন, “ভাইরাল হওয়ার জন্য ভুয়ো জিনিস তুলে ধরা এখন খুব সহজ হয়ে উঠেছে। এই তথ্যগুলো আদতে সত্য কি না, তা দু’বার যাচাই করে নেওয়া উচিত।” এরপর তিনি যোগ করেন, “নেটমাধ্যমে কিছু রয়েছে মানেই সেটা সত্যি হয়ে যেতে পারে না। সতর্ক থাকুন।” এখানেই থেমে থাকেননি ‘কোয়ান্টিকো’ তারকা। আরও স্পষ্টভাবে নিজের অবস্থান জানিয়ে তিনি লেখেন, “যা দেখছেন, তার সবটাই কিন্তু সত্যি নয়!” সোজাসাপটা ভঙ্গিতে ভুয়ো বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে যেন এক ধরনের সতর্কবার্তাই দিলেন প্রিয়াঙ্কা। বিশেষ করে সেই সব অনুরাগীদের উদ্দেশে, যারা কোনও কিছু যাচাই না করেই বিশ্বাস করে ফেলেন।

ওই বিতর্কিত মন্তব্যটি যদিও প্রিয়াঙ্কার নয়, সমাজে নারীদের অধিকার, স্বাধীনতা ও লিঙ্গ সমতার বিষয়ে তিনি বরাবরই সরব। তিনি বহু বার সাক্ষাৎকারে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে জানিয়েছেন, নারীবাদ তাঁর কাছে মানে কেবল শারীরিক সমতা নয় কিন্তু সুযোগ, মর্যাদা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের ‘গার্ল আপ’ সম্মেলনে তাঁর বক্তব্য ছিল, “নারীদের চুপ করিয়ে দেওয়া, সীমাবদ্ধ রাখার যে সংস্কৃতি সমাজে চলে আসছে, তা বদলাতেই হবে।” সেই সময়েও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা বিরূপ মন্তব্যের মুখে পড়েছিলেন, কিন্তু তাঁর অবস্থান ছিল অটুট। এই বিতর্কের পর, অনুরাগী মহলে আবারও শুরু হয়েছে আলোচনা, সেলিব্রিটিরা কি আর নিজেদের মতো করে কথা বলার স্বাধীনতা পান? নাকি তাঁদের মুখেও জোর করে কথা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়? অনেকের মতে, এই ঘটনা সেই চিরাচরিত সমস্যা তুলে ধরছে, যেখানে নেটমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় সত্য-মিথ্যার সীমারেখা প্রায় মুছে যায়। একজন নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, “আজকাল ফেক নিউজ এত দ্রুত ছড়ায়, যে তার আগে সত্য পৌঁছাতে পারে না।”

প্রিয়াঙ্কার (Priyanka Chopra) নাম ব্যবহার করে এরকম ভুয়ো উদ্ধৃতি ছড়িয়ে পড়া কোনও নতুন ঘটনা নয়। অতীতেও বহু সেলিব্রিটি, বিশেষ করে নারীরা, এই ধরনের ফেক কোটেশনের শিকার হয়েছেন। অনেক সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এসব প্রচার করা হয়। সেলিব্রিটির ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য অথবা ক্লিক-বেইট তৈরির লক্ষ্যে।এই ঘটনার মাধ্যমে প্রিয়াঙ্কা যেন ফের একবার নিজের ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিলেন সাহসী, সরল এবং স্পষ্ট। ভুয়ো কণ্ঠস্বরের পেছনে না লুকিয়ে, নিজের আওয়াজে সোচ্চার হয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, কোনটা তাঁর কথা আর কোনটা নয়। এই সততা, এই স্পষ্টতা তাঁকে শুধুই একজন অভিনেত্রী নয়, একজন সচেতন, সাহসী আন্তর্জাতিক মুখ করে তোলে।প্রিয়ঙ্কার ভাষায়, “এটা আমি নই।” কিন্তু এমন একটি সময়, যেখানে বাস্তবতা ও তথ্য বিভ্রান্তির ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে যায়, সেখানে তাঁর এই ‘আমি কে, আমি কী বলিনি’ তা স্পষ্ট করে দেওয়াটা নিঃসন্দেহে এক বড় পদক্ষেপ। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে এক ধরনের সচেতনতা, যেখানে আর ‘শেয়ার’ করার আগে একবার ভাবা জরুরি। প্রিয়াঙ্কার মতে, “যা দেখছেন, তা সত্যি কি না, তা যাচাই করে নিন।” এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও, ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে তিনি যে আজও গভীর ভাবে যুক্ত, তা এ ধরনের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়। এবং তিনি বারবারই মনে করিয়ে দেন, সতর্ক থাকা এখন সময়ের দাবী। সত্য আর গুজবের মাঝে যে ব্যবধান, তা অনুধাবন করাটাই আজকের দিনের বড় দায়িত্ব।

ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Salman Khan : ‘ভাইজান’ থেকে বিনয়ী শিল্পী  সলমন খানের মুখে তাঁর সাফল্য আর সংশয়ের গল্প

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read