



বসুধা চৌধুরী ★ মুম্বাই : বলিউডের প্রখ্যাত পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রয়াত হয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া (Priyanka Chopra)-র পিশেমশাই রমন হান্ডা (Raman Handa)। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। এই খবরে ভারাক্রান্ত গোটা চোপড়া পরিবার। প্রিয়াঙ্কা নিজেই আমেরিকা থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকবার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, “তুমি সব সময়ে আমাদের মনে থেকে যাবে। এ বার শান্তিতে বিশ্রাম নাও রমণ পিশেমশাই। ওম শান্তি।” তবে এই শোকের মুহূর্তে চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন পরিবারের আর এক সদস্য, অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া (Parineeti Chopra)। কারণ, রমন হান্ডার শেষকৃত্যে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। একাধিক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-পরিজনের উপস্থিতির মধ্যে পরিণীতির এই অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে অনেকেই। কারণ, শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বাবা পবন চোপড়া (Pawan Chopra) ও ভাই সহজ চোপড়া (Sahaj Chopra)। অথচ, পরিণীতি ছিলেন না।

রমন হান্ডা ছিলেন ‘বিগ বস ১৭’ খ্যাত অভিনেত্রী মানারা চোপড়া (Manara Chopra)-র বাবা। মানারা আগেও প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, তিনি প্রিয়াঙ্কার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রিয়াঙ্কা ও মানারাকে একসঙ্গে দেখা গেলেও পরিণীতির সঙ্গে একই ছবি বিরল। এই পারিবারিক দূরত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই ঘটনার মাধ্যমে। শোকাহত মানারা দিল্লিতে পৌঁছেই বিমানবন্দরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে তিনি ছুটে এসেছিলেন। এক সংবাদমাধ্যমে মানারা বলেন, “এই শূন্যতা কোনওদিন পূরণ হবে না। বাবা ছিলেন আমার শক্তির উৎস। জীবনের প্রতিটা সাফল্যের নেপথ্যে তিনিই ছিলেন।” মানারার সঙ্গে পরিণীতির সম্পর্ক নিয়ে ইতিপূর্বেও নানা জল্পনা ছিল। ‘বিগ বস’ অনুষ্ঠান চলাকালীন মানারা বেশ কয়েকবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পরিণীতির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক মসৃণ নয়। এমনকী একবার এক ভক্ত বলেছিলেন, তাঁর চেহারায় পরিণীতির সঙ্গে মিল আছে। তাতে স্পষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন মানারা। সেই সময়েই দর্শকদের অনেকে বুঝে নিয়েছিলেন, দুই চোপড়া কন্যার মধ্যে রসায়ন আদৌ সুখকর নয়।
রমন হান্ডার অন্ত্যেষ্টির সময় সেই দূরত্ব যেন আরও প্রকট হয়ে উঠল। প্রিয়াঙ্কা শোকবার্তা পাঠালেও পরিণীতির তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি বলে খবরে প্রকাশ। শুধু তাই নয়, শেষকৃত্যের দিন পরিণীতিকে দেখা গিয়েছে লন্ডনে। নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে তিনি একটি ছবি ভাগ করে নিয়েছিলেন। যেটি তোলা লন্ডনের রাস্তায়। ফলে নেটিজেনদের অনুমান, তিনি হয়ত সেই সময় দেশের বাইরে ছিলেন বলেই শেষকৃত্যে থাকতে পারেননি। তবে প্রশ্ন উঠছে, পরিণীতির লন্ডনে থাকা যদি সত্যিও হয়, তাহলে তিনি কেন কোনও আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা প্রকাশ করলেন না? প্রিয়জনের প্রয়াণে পরিবারকে পাশে থাকার যে সামাজিক দায়িত্ব, তা কি এড়িয়ে গেলেন তিনি? এই প্রশ্নেই তোলপাড় চোপড়া পরিবারের ভক্তমহল। ঘটনার প্রেক্ষিতে বলিউড মহলেও শুরু হয়েছে ফিসফাস। একটা সময় চোপড়া পরিবারের তিন অভিনেত্রী—প্রিয়াঙ্কা, পরিণীতি ও মানারার সখ্যের গল্পই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। কিন্তু ইদানীং সেই সম্পর্ক যে অনেকটাই শীতল, তা যেন প্রকাশ্যে চলে এল রমন হান্ডার শেষযাত্রায়।
চুপচাপ থাকলেও এই ঘটনার পর ফের স্পষ্ট হয়ে গেল, বলিউড শুধু আলো-ঝলমলে পর্দা নয়। পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েন, ব্যক্তিগত আঘাত আর না-বলা অভিমানেও গাঁথা থাকে এই গ্ল্যামারের দুনিয়া। মানারার শোক, প্রিয়াঙ্কার আবেগ আর পরিণীতির নীরবতা যেন মিলেমিশে তৈরি করল এক বিষণ্ণ কিন্তু বাস্তব বলিউড ক্যানভাস।
ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Priyanka Chopra | ‘সতীত্ব নয়, চরিত্র দেখো’ বিয়ে নিয়ে স্পষ্ট বার্তা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার
