



🍂কবিতাগুচ্ছ
জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ, এক শ্বাপদ সঙ্কুল পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে জীবনে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হতো, ছোট্ট পরাণ মাঝি। বাগদার মিন ধরতে ধরতে নদী প্রেমে আত্মহারা, নদী তাই শৈশব থেকে টানে তাকে। আজও শহরের ব্যস্ততম জীবনে নদীর কলতানে মুগ্ধ কবি গঙ্গার পাড়ে সময় কাটান। লঞ্চের রাঁধুনির কাজ করতে করতে কলেজে পা, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শিক্ষক কবি শঙ্খ ঘোষ-এর কাছে কবিতা লেখার হাতে খড়ি। সাংবাদিকতা, সরকারী চাকরির সঙ্গে সঙ্গে ‘সাঁকো আন্তর্জাতিক সাহিত্য পত্রিকা’-র প্রতিষ্ঠাতা। কবির প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘সাঁকো’, দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘মন্দ বাসিনি তোকে’ এবং তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘সাদা আঁধারের কালো আলো’। এছাড়া জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে নানা পত্র পত্রিকায় কবির লেখা প্রকাশিত। সাশ্রয় নিউজ-এর আজকের পাতায় রইল কবি পরাণ মাঝি-এর ‘অনামিকা’ সিরিজ থেকে একগুচ্ছ কবিতা।
পরাণ মাঝি
অনামিকা
বিবিধ চারণ। নীলাভ গান; স্থির অবয়ব। অসংখ্য ডট এবং কম এর ঝুম ঝুম খেলনা বাটি। পুতুল পুতুল ভাবনা বাড়ি; আগামীর অনামিকা উৎসব-
ভেতরে; ধীরে ঝরে সাবলীল প্রণয়ের অশেষ। ঝুলন্ত চাঁদ ছুঁয়ে গড়িয়ে যায় সুর ও স্বর। চমৎকার আত্ম চিৎকার; স্পর্শ মুদ্রার ঠুমরি অজস্র মায়া আঁকে-
চোখের কাঁচে মোমবাতি জ্বলে ১০০ ভাগ যেন বহুযুগ আগে থেকে দেখা তার মন-মালঞ্চ; তুলসী তলায় ঘোমটা ঢাকা শান্ত অনামিকা!
অজস্র নন্দনে
বুকের রানওয়ে জুড়ে বসন্ত বাজে। শীত পেরিয়ে অনামিকা সংহিতা
ফুল ফুটবে ফাগুনের আগুনে
কোকিলের কুহুতানে নটরাজ বাজবে
অজস্র নন্দনে হাজার সূচনা ভাসবে
গৌরাঙ্গ; অঙ্গে মেখে; আলোর নৌকায় ফুটবে শ্রয়শী প্রেম পারমিতা
একটু সময় দাও
একটু সময় দাও আলো এনে দেবো; চর্যার নিশ্চিন্ত কোলাহলে মিশিয়ে নেবো আধুনিক আরোক
একটু সময় দাও অনামিকা
বিশ্বাস রাখো কস্তুরি সুবাসে ধুপ জ্বলবে ঘরে
দামাল অভাবের সাগরে ঠিক জেগে থাকবে নিভু নিভু প্রদীপ
একটু সময় দাও
উলঙ্গ উঠোনের ক্যানভাস জুড়ে ফুটবে বসবাস ফুল
অন্য আমি
মনের গাছ নেড়ে কে কোথায় যায়; কারা ষায়
ধূলোর শহরে শীতের তুলো যায় উড়ে
তার মধ্যে আমি হাঁটি
পায়ে চটি ; মাটি কোথায় মা-টি
মনের ভেতর ষায় কে ; অনামিকা স্বপ্ন গুটি গুটি
কে টানে পিছু ; কানে কানে কথা বলে কে
কেউ না ; অন্য আমি -ই ডাকে ; আমার ভেতর থেকে
মন্দ থেকে আর পারি না যে…
অনামিকা আলো
পথের দিকে তাকিয়ে বসে থাকি রোজ ; দিনে রাতে
আলো দেখবো বলে বসে বসে ঘুমাই
না, না –
সূর্য বা চাঁদের আলো নয় ; নক্ষত্রেরও নয়
কতদিন আলো দেখিনি ; খিদে পায় খু-উ-ব
ছোটো বেলায় জননী বলতো- আলোর সন্ধানে থাকো
মানুষের মাঝে যে আলো থাকে ; আপন কোরো তাকে
পথে পথে ঘুরি ; আজও
আলো দেখবো বলে বসে থাকি; বসে বসে ঘুমাই
আছে সে অনামিকা আলো ; ধরতে পারি কই
ছাতিমতলা
শীত এসেছে ঠাণ্ডা লাগছে তাই
চলনা একবার ছাতিম তলায় যাই
সোনালি রোদ শরীরে তো মাখাই
হ্যারে শুনছিস ঠোঁট রাঙানো রাই
টহল আছে জানা ছিল না তাই
আপন মনে দুজনে ফুল কুড়াই
হাতে হাতে চোখে চোখে মৌতাত
আয় না দুজন মুছে ফেলি আঘাত
অন্য কোনোখানে
হয়ত আর
দেখা হবে না রূপবাহার
দূষণেই ঢাকছে এ নগর
নয়তো যেতে হবে হেরে
পা চলবে মনের সাথে অন্য কোনোখানে
কী হারালাম; কে জিতলো; এসব কথা ছেড়ে…
+, –, ×, ÷, =
দিনে কথারা পাখি হ’য়ে ওড়ে ; রাতে শব্দরা আঁধারের জোনাকি
অভাব + অসুখ টিয়া টিয়া ডাকে
রান্নাঘর — সর্ষেতেল = কী দেবে নাকে
ঘুমগুলো সব ঢুলু × ঢুলু শব্দ + পংক্তি আঁকে
মন ÷ হলে কী বলে তাকে
মা-টির বারান্দা থেকে আকাশ দেখি ;
আলো আধারের ভেতর সে অনামিকা নীল নাকি
শীতলতর প্রেম
ঠোঁট কাটা শীত; জানলায় উঁকি মারে অনামিকা শিশির
তার কাছে যাই
উষ্ণতার কথা জানাই
গাঁদা আর ডালিয়া পাশাপাশি খুনসুটি আঁকে
পাহাড়ি হাওয়া ডাকে
ইশারার কোলে হিমেল সন্তান; হাড়ে হাড়ে কথা বলে
আমিও কমতি নই
তার সাথে গ্রীষ্মের কথা কই
সকালে উঠে দেখি-
ঠোঁট ফাটা সে প্রেম এখনো শরীর জুড়ে
জীবনদার দোকানে
চোরাই কিছু উচ্চারণ চরে বেড়ায় মনের চণ্ডীতলায়। তীর বিদ্ধ করে তাকে ফেলে আসি অক্ষাংশের ওপারে-
গরম চাদরে ঘামছে শরীর
উঠোন জুড়ে রাঙা বউ ভোরে ভোরে গোবর ছড়া দেবে; গোয়াল ঘর থেকে কপাল চিতে সদ্যজাত হাম্বা হাম্বা ডাকবে
সময় হল বুঝি মন ফোটার; ঘুরে দাঁড়াবো বলে সেই কবে থেকে ছুটছি আলোর পথ ধরে; কয়লা খাদানের ভেতরে হিরের সন্ধানে পাল তুলেছি
রাঙা বউ; সন্ধ্যে ঘনিয়ে এল
এবার তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বালো
মনে মনে তিমির বিনাশী প্রার্থনা ঢালো
আমি চরণামৃত আনতে যাচ্ছি জীবনদার দোকানে…
🍂অঙ্কন : প্রীতি দেব ও আন্তর্জালিক
এক নজরে 👉 সাশ্রয় নিউজ-এ আপনিও পাঠাতে পারেন স্থানীয় সংবাদ। এছাড়াও রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল-এর জন্য উপন্যাস, কবিতা (একধিক কবিতা পাঠালে ভালো হয়। সঙ্গে একটি লেখক পরিচিতি। গল্প, প্রবন্ধ, গদ্য, পুস্তক আলোচনা (আলোচনার জন্য দুই কপি বই পাঠাতে হবে), ভ্রমণ কাহিনী। লেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকতে হবে। অবশ্যই কোনও প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমনকী কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে বা পোর্টালে পূর্ব প্রকাশিত লেখা পাঠাবেন না। ই-মেল করে লেখা পাঠান। ই-মেল আই ডি : editor.sasrayanews@gmail.com
বি: দ্র: সমস্ত লেখা লেখকের নিজস্ব। দায় লেখকের নিজস্ব। কোনও বিতর্কিত বিষয় হলে সংবাদ সংস্থা কোনওভাবেই দায়ী থাকবে না এবং সমর্থন করে না। কোনও আইনি জটিলতায় সাশ্রয় নিউজ চ্যানেল থাকে না। লেখক লেখিকা প্রত্যেকেই লেখার প্রতি দ্বায়িত্ববান হয়ে উঠুন। লেখা নির্বাচনে (মনোনয়ন ও অমনোনয়ন) সম্পাদকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
