



কবি রোকসানা রহমান-এর জন্ম ১৯ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জে। সমাজের প্রচলিত অন্ধকার নিক্ষিপ্ত জীবনকে, বহুমুখী প্রতিভার বিচ্ছুরণে আলোকিত করার ঘটনা, বিরল। সংসার সামলে সন্তানদের মানুষ করে বহু-বিচিত্র পরীক্ষার ভেতর দিয়ে অসম্ভব সাহসিকতায় জীবনকে সামনের সারিতে নিয়ে আসাও একজন মানুষের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। একজন নারীর ব্রাকেটবন্দী স্বাধীনতা থেকে সে লড়াইটা তিনি চালিয়ে গিয়েছেন। আদমজী জুটমিলে কর্মরত মুক্তিযোদ্বা,বাবা রজিবুর রহমান ভুইঞা শৈশবে এ-উদ্যমের বীজ বপন করে গিয়েছেন।মা ছিলেন মহিলা ক্লাবের সন্মানিত সদস্য। পেশাগতজীবনে তিনি ছিলেন হেয়ার অ্যাণ্ড বিউটিফিকেশ ইনিস্ট্রিটউট-এর একজন সত্ত্বাধিকার ও এক্সপার্ট বিউটিশিয়ান। এছাড়াও বেঙ্গল আর্ট অফ লিভিং-এর ইয়েগা প্রশিক্ষক। সাংস্কৃতিক বলয়ে বেড়ে ওঠা রোকসানা রহমান যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়েন তখন তাঁর প্রথম লেখা ছড়া প্রকাশ হয় স্কুল ম্যাগাজিনে। রোকসানা রহমান অনান্য ম্যাগাজিন, আনন্দভূবন, দৈনিক মানবজমিন, ফ্যাশন অফ গ্রামার, ইত্তেফাক ও বিভিন্ন ম্যাগাজিনে রূপচর্চা বিষয়ক আর্টিকেল, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও নানান বিষয়ে লিখতে থাকেন। কবি শব্দকুঠি নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক। এছাড়াও ম্যাজিক লণ্ঠন-এর উনিশ বছর ধরে সাহিত্য সম্পাদক হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সাশ্রয় নিউজ-এর আজকের পাতায় রইল কবির গুচ্ছ কবিতা।
রোকসানা রহমান-এর গুচ্ছ কবিতা
জল
ফুলদানিটা কাঁপছে, হৃদয়ে জলন্ত মোম
এমনি করেই ধূসর সন্ধ্যা দুয়ার খোলে।
অথচ,অপেক্ষার স্বপ্ন উদ্দাম বাতাসে ওড়ে
তৃষ্ণার্ত মন মাটির পেয়ালায় খুঁজে জল…!
স্বপ্নস্রোতের আবেগী খেলা শেষে হেসে ওঠে
কালের আদম।
কে তুমি
জাগিয়ে তুলেছ জ্যোৎসাপ্লাবিত রহস্যের ছায়াবৃত
অন্তঃপুরবাসিনী কে কবিতার পাতায়-পাতায়।
দুর্বোধ্য সময়
ছায়া স্বপ্ন দোলে অতল গহীন অমলতায়!
কিছু মায়া, জাহ্নবী জলে উত্তাল তরঙ্গ
শ্যামের শ্বাস বয়ে যায় বসন্তরাগে
টেনে নিতে চায় উষ্ণ বাহুডোরে
স্বর্গ শৃঙ্খল ঝড় জল আয়নায়
বিগত জন্মের আলোক শষ্যায়
নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে
জোনাক সবুজ অরণ্য সংলাপ
কেবলই অপেক্ষার দূর্বোধ্য সময়…!
০৯/০৯/২০২০
স্বপ্ন
রাতভর স্বপ্ন আমাকে কথা দিয়েছে, আজীবন
পাশে থাকবে।
এভাবে স্বপ্ন আমাকে প্রতি মুহূর্তে আগ্নেয়গিরি
থেকে বাঁচিয়ে রেখে, ঘুমে আধো-জাগরণে
কল্পনার অবগাহনে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
আমি জয় করি অসম্ভরের স্বপ্নের ভিতর
একাকিত্বের মৌনতা।
৩০/০৪/২০২২। রাত ২ : ১০
বহুদুরে
কে ডাকে নিশিরাতে এমন ব্যাকুল হয়ে
একোন প্রণয়ের মহাঘোর আমার দুয়ারে
দিশেহারা হই আমি এ-কোন সুর জাগে প্রাণে।
সেই হতে ভেসে গেছি দুর-বহুদুরে…
রাত ৩:৩৫
চৈত্র দহনে
আমি চমকে উঠি আজ প্রশ্নগুলো কে শুনবে
তারচেয়ে জলের স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়া হোক
নদী ভাসিয়ে দিক সমুদ্রে।
আকাশের নীল বাতাসের সুর সব কিছুই বৃথা
মানুষের ভালবাসার মতন।
নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে অস্হিরতার এক বৈশাখী ঝড়
জৌষ্ঠের দুপুরে তীব্র তৃষ্ণার খরখরে অশ্বত্থ।
প্রতিশ্রুতির আয়েশি স্বপ্নেরা ভেসে যায়, জলস্রোতে
আর আমি আছি আমার ভিতর নতুন শিশির
ছুঁয়ে দিলে ভেঙে না পড়ি চৈত্র দহনে।
প্রেম
প্রেমকে এমনি থাকতে দাও
তাকে তুমি নির্দিষ্ট করো না
যখনই নির্দিষ্ট করবে, সম্পর্ক
চাপিয়ে দিবে
তখনই প্রেম ব্যাহত হয়
প্রেমকে বে-নামেই থাকতে দাও।
স্বর্গীয় হয়ে ওঠে
প্রেম যখনই প্রদীপ্ত হয়ে ওঠে, তখনই স্বর্গীয় আনন্দ
যখন প্রবাহিত হয় তখন করুণা
যখন অবারিত হয় তখন সম্পূর্ণতা।
তখনই প্রেম জ্ঞাত হয়, তোমার-আমার মাঝে
প্রভুর আমিত্ব সত্তায় চিরন্তন নৈকট্যে।
মধ্য দুপুর
ভালবাসার রেখা হাতের তালুতে নেই
তবে কেন অযথা ছোটা, শব্দের পিছনে
মধ্যদুপুরে।
নিমগ্ন হই
তোমার প্রেমে নিমগ্ন হই যখন ; তখনই একনদী
প্রবাহিত হয়।
আত্মার অস্তিত্ব জুড়ে অনাবিল এক অনন্তের পথে
আলোকরশ্মি নিয়ে যায়, অলীক তেপান্তরে।
অঙ্কন : প্রীতি দেব
লেখা পাঠান 👉 স্থানীয় সংবাদ, স্বরচিত গল্প, স্বরচিত কবিতা, স্বরচিত প্রবন্ধ, স্বরচিত ভ্রমণ, স্বরচিত উপন্যাস। e-mail id : sasrayanews@gmail.com
