নিজস্ব সংবাদদাতা ★ সাশ্রয় নিউজ :: নতুন দিল্লি: মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ চালাল ভারতীয় বাহিনী। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। বুধবার সকালে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন সেনার দুই ‘অগ্নিকন্যা’ কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ সাংবাদিক বৈঠকে কী ভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তার বিশদ ব্যাখ্যা দেন তাঁরা।
পাকিস্তানের সীমান্তে এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে সব ঘাঁটি থেকে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ এবং হামলার পরিকল্পনা হচ্ছিল, সেগুলিই নিশানা করা হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, এই হামলায় পাকিস্তানি সেনার কোনও পরিকাঠামো বা সাধারণ নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ব্যোমিকা মানে আমাদের আকাশকন্যার গল্প যা আজ আমাদের গর্ব। ব্যোমিকা নামের অর্থই আকাশকন্যা এবং সত্যিই সেই নামের সার্থকতা প্রমাণ করেছেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ।
ছোটবেলা থেকেই ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। স্কুলজীবনে ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (এনসিসি) এর সদস্য ছিলেন, পরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হয়ে ২০০৪ সালে সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দেন।
হেলিকপ্টার পাইলট হিসেবে শুরু করে ২০১৭ সালে উইং কমান্ডারের দায়িত্ব পান। জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের দুর্গম এলাকায় ‘চেতক’ ও ‘চিতা’ হেলিকপ্টার ওড়ানোর ২,৫০০ ঘণ্টার বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। শুধু তা-ই নয়, ২০২০ সালে অরুণাচল প্রদেশে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এক উদ্ধার অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করেছিলেন তিনি। ২০২১ সালে ভারতীয় সেনার তিন শাখার মহিলা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মাউন্ট মনিরং (২১,৬৫০ ফুট)-এ আরোহণও করেন তিনি। অভিযানের সাফল্য ও রাজনৈতিক বার্তা সেনার দাবি, এই প্রত্যাঘাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের যে সব জায়গা থেকে ভারতে সন্ত্রাসী হামলার নির্দেশ আসছিল, সেগুলিই ধ্বংস করা হয়েছে। যদিও কোনও নির্দিষ্ট শহরের নাম প্রকাশ করা হয়নি। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারতের পক্ষ থেকে একাধিক স্তরে কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, যার চূড়ান্ত রূপ হল এই ‘অপারেশন সিঁদুর’। বিক্রম মিস্রী বলেন, “এটি একটি নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা অভিযান, যার লক্ষ্য শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো।” সঙ্গে সঙ্গে ব্যোমিকা এবং কর্নেল কুরেশি সংবাদমাধ্যমের সামনে বিশদে ব্যাখ্যা দেন, কোন পথে, কীভাবে, কতটা নিখুঁতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
ভারতীয় সেনার এই অভিযানে একদিকে যেমন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, তেমনই দেশের মাটিতে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিত করা হয়েছে। আর এই অভিযানের নেপথ্যে থাকা আকাশকন্যা ব্যোমিকা দেশের যুবসমাজের কাছে হয়ে উঠেছেন এক অনুপ্রেরণার নাম।
সমস্ত ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Operation Sindoor : অপারেশন সিঁদুর: ভারতের সাহসী প্রত্যাঘাত পাকিস্তানের মাটিতে
