



সাশ্রয় নিউজ ডেস্ক ★ কলকাতা : প্রয়াত হলেন কবি ও সাহিত্যিক কমল চক্রবর্তী (Novelist Kamal Chakraborty)। তাঁর প্রয়াণ বাংলা সাহিত্য জগতে শোকাবহ তৈরি করল। সম্প্রতি তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসাধীন ছিলেন জামসেদপুরের একটি হাসপাতালে। তাঁর শারিরীক অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় চিকিৎসকরা তাঁকে আইসিসিইউতে রেখেছিলেন। সূত্রের খবর, শুক্রবার তাঁর অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হয়। চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি পাড়ি দেন অন্যলোকে।
তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ‘ভালোপাহাড়’-এর অজস্র মানুষ। ছোট বড় সকলের কাছে ‘কমলদা’ নামে পরিচিত ছিলেন। ‘ভালো পাহাড়’ প্রকল্প গড়ে তুলে ব্যতিক্রমী ভাবনার অবতারণ করেছিলেন। কমলবাবু ‘বৃক্ষনাথ’ নামেও পরিচিতি লাভ করেন। সাহিত্যিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত কবি ও সাহিত্যিকের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ”আমি তখন ব্যাংকে চাকরি করি। ইউবিআই যাদবপুর ব্রাঞ্চ। কমল চক্রবর্তী এল জামশেদপুর থেকে, বলল, চলো কফি হাউস। বললাম এখন হবে না। টিফিনের পর ক্লিয়ারিং চেক আসবে। কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসের পরিবর্তে যাদবপুর কফি হাউস। সেই প্রথম দেখা। তার আগে প্রচুর চিঠি লেখালিখি। ‘গর্জন সত্তর’ এ অনেক লিখেছি সেসব ঘটনা। আজ তার সমাপ্তি ঘটল। তবে মনে রয়ে যাবে বাকি জীবন।”
অন্যদিকে, কমলবাবুর সাহিত্যজীবনের দিকে ফিরে দেখলে দেখা যায় যে, সাহিত্যকে নতুনত্ব প্রদান করতে আজীবন সচেষ্ট ছিলেন। নিজের লেখাকেও গতানুগতিক ধারা থেকে বের করে নতুন গতি দান করে গিয়েছেন। এমনকী চলতি লেখার পাঠকের বাইরে আরেক শ্রেণীর পাঠকও তৈরি হয়। সমাদৃত হয় কমল চক্রবর্তী-এর গল্প, উপন্যাস, নাটক। বাংলা সাহিত্যে নতুন কিছু সংযোজন, নতুন ভাবনা, নতুন ধারার লেখার একটি যুগের অনেকটাই অবসান হল বলে মত অনেকের। বেশ ক’য়েক বছর আগে তাঁর বন্ধু কবি বারীন ঘোষালও প্রয়াত হন। বারীন ঘোষাল ও কমল চক্রবর্তীর নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হয়।
জামসেদপুর ও কলকাতার সাহিত্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য তৈরি করে কৌরব। কৌরব পত্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন কবি ও সাহিত্যিক কমল চক্রবর্তী। এই পত্রিকাটিকে কেন্দ্র করে জামসেদপুর, পশ্চিমবঙ্গ, দেশের অন্যান্য প্রদেশে ছোট পত্রিকা আন্দোলন বৃহৎ আকার নেয়। বিগত ক’য়েক বছর আগেই কবি বারিন ঘোষাল ও শুক্রবার কমলবাবুর প্রয়াণে ঝরে পড়ল কৌরব-এর মূল ঢানাটিও। শোকাতুর সাহিত্য-সংস্কৃতি জগৎ। নতুন প্রজন্মের পাঠকের জন্য রইল তাঁর অজস্র সৃষ্টি।
আরও পড়ুন : Art & Culture : শিল্প প্রদর্শনী, সৌহার্দ্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উদযাপন
