



সাশ্রয় নিউজ ★ নতুন দিল্লি: ঘানার সংসদে দাঁড়িয়ে ভারতের গণতন্ত্র এবং বহুত্বের ছবিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। পঞ্চদেশীয় বিদেশ সফরের সূচনাতেই বৃহস্পতিবার ঘানায় পৌঁছে সংসদে বক্তৃতা দেন তিনি। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে দেন, ভারতের জন্য গণতন্ত্র কোনও প্রথাগত সিস্টেম নয়, তা দেশের সংস্কৃতির শিকড়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি বড় সংস্কার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত গণতন্ত্রের জন্মদাতা। আমাদের কাছে গণতন্ত্র কোনও সিস্টেম নয়, এটি আমাদের সংস্কার। আমাদের দেশে আড়াই হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক দল রয়েছে। যার মধ্যে ২০টি দল বর্তমানে ২০টি রাজ্যের প্রশাসন চালাচ্ছে। ভারতীয় সংবিধান ২২টি সরকার অনুমোদিত ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়া, দেশে হাজারেরও বেশি বাচনভঙ্গি প্রচলিত।’ প্রধানমন্ত্রী মোদী (Narendra Modi) ঘানার সাংসদ ও মন্ত্রীদের ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি চাই আপনারা ভারতে আসুন। আমাদের গণতন্ত্রের শক্তিকে কাছ থেকে দেখুন। আমরা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করি, একে অপরকে সম্মান করি, তা বোঝা যাবে।’
উল্লেখ্য, বুধবার দিল্লি থেকে সরাসরি ঘানায় পৌঁছন মোদী (Narendra Modi)। সাউথ ব্লক সূত্রে খবর, এ যাবৎকালের মধ্যে এটি তাঁর সবচেয়ে বড় বিদেশ সফরসূচী। বৃহস্পতিবার ঘানা সফর শেষ করে তিনি রওনা হয়েছেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো (Trinidad and Tobago)-এর উদ্দেশে। এরপর তিনি যাবেন আর্জেন্টিনা (Argentina), ব্রাজিল (Brazil) ও সবশেষে নামিবিয়া (Namibia)। সেখান থেকে তিনি দেশে ফিরবেন।
প্রশ্ন উঠছে, এই সফরের তাৎপর্য কী? সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, একাধিক স্তরে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, বিশ্ব জুড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আর্জেন্টিনা (Argentina), ব্রাজিল (Brazil), নামিবিয়া (Namibia)-র মতো খনিজ সমৃদ্ধ দেশগুলির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের যোগান ও বাণিজ্য বাড়ানো নিয়েও প্রশাসনিক আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা থেকে লিথিয়াম (Lithium) ও ব্রাজিল থেকে রেয়ার আর্থ উপাদান আমদানির বিষয়টি নিয়েও জোর আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সফরের মাধ্যমে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার কৌশল নিচ্ছে নতুন দিল্লি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক দেবাংশু ঘোষ (Debanshu Ghosh) বলছেন, ‘ভারতের বিদেশনীতি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি বহুমুখী। আফ্রিকার খনিজ সম্পদ এবং দক্ষিণ আমেরিকার লিথিয়াম ও কৃষিপণ্য ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সফর শুধু কূটনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও বড় বার্তা দিচ্ছে।’ উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) এই ভাষণ ঘানার সংবাদমাধ্যমেও গুরুত্ব পেয়েছে। ঘানার সংসদে উপস্থিত একজন মন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তৃতা আমাদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের গণতন্ত্র, ভাষা এবং সংস্কৃতির বৈচিত্র্য আমাদেরও অনুপ্রাণিত করে।’
সূত্রের খবর, পহেলগাঁও পরবর্তী সময়ে এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। বিশেষত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারত যে সক্রিয়, সেই বার্তাও স্পষ্ট দিতে চাইছে দিল্লি। প্রধানমন্ত্রীর ঘানা সফর শেষে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো (Trinidad and Tobago), আর্জেন্টিনা (Argentina), ব্রাজিল (Brazil) এবং নামিবিয়া (Namibia)-তে কীভাবে আলোচনা এগোয়, এখন তার দিকেই নজর কূটনৈতিক মহলের।
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন : India vs England 2nd Test 2025, Shubman Gill Double Century | শুভমনের ব্যাটে ধ্বংস, আকাশদীপের আগুনে কাঁপছে ইংল্যান্ড!
