



দোকানদারদের সেবায় প্রাণ বাঁচাল যুবকের
সাশ্রয় নিউজ : বহরমপুর শহর সাক্ষী থাকল বাবুয়ানা মানুষের দৃশ্য দেখে। বহরমপুর এফ. ইউ.সি-মাঠ সংলগ্ন সমবায় মোড়ে আজ দুপুর ১২:৪০ নাগাদ মর্মান্তিক দৃশের সাক্ষী থাকল শহর বহরমপুর।
ঐতিহ্যের এই শহরে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত মানুষজন জেলার বিভিন্নপান্ত থেকে ভিড় করেন নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন কাজকর্মে।
তেমনি সেলিম নামে বছর কুড়ির একজন তরতাজা যুবক বহরমপুর সমবায়িকা মোড়ের রাস্তা ধরে হেঁটে যাছিল। এমন সময় মোড়ের সিগনাল পড়ে যাওয়ায় সিগনালের এপারেই থেকে যেতে হয় তাঁকে গ্রীন সিগনালের অপেক্ষায়।
এপারে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ-ই আচমকাই মাটির ওপর লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারান যুবক। আশপাশের শহরতলীর মানুষজন পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেলেও ভ্রূক্ষেপ ছিল না। একজন পথচারী ও গ্রাম থেকে আগত বাইক আরোহী এবং ফুটপাতের ওপর বসে থাকা ব্যাগ বিক্রেতা ও বই বিক্রেতারা একসঙ্গে ছুট্টে এসে সেলিমকে কোলাপাঁজা করে রাস্তার পাশে তুলে নিয়ে এসে নিজেদেরই খাবার বোতলের জল ঢালতে থাকেন। কেউ কেউ হাত ডলে দেন, কেউ পা ডলে দেন। এমন দৃশ্য তার অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছিলেন অথচ সেই মুহূর্তে দু-কদম এগিয়ে এলেন না। কিন্তু উল্টো দিক থেকে পথচারীরাই তৎপর হয়ে সেবা শুশ্রূষা করলেন।
যদিও আগের দিন রাতে বৃষ্টি হলেও আজ সকাল থেকেই ভ্যাপসা গরম ছিল। রাস্তার চারপাশে ছোট ছোট দোকানদারদের এমন সময় হঠাৎ জ্ঞান হারানো যুবককে সেবা করার মতন মানবিকতার মূল্যবোধ এখনও আছে।
ওরা কেউ ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কেউ পোস্টার বিক্রি করেন, কেউ জুতো সেলাই করেন। কেউ বা চা বিক্রেতা, কেউ ফল বিক্রেতা। দৌড়ে এসে আচককাই অসুস্থ যুবককে রাস্তা থেকে তুলে, সেবা করে দৃষ্টান্ত রাখলেন।
তাঁদের সেবায় যুবকের জ্ঞান ফিরলে জানা যায়, তাঁর নাম সেলিম। বাড়ি মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানার সাহেব নগরে।
চকচকে দামী-পোশাক পরে, রকমারী গাড়ি চেপে সুটবুট পরে একেরপর এক মানুষ রাস্তা দিয়ে চলে গেলেও সাবনগরের সেলিমকে পিতৃস্নেহে বুকে টেনে নিলেন; ব্যাগ বিক্রেতা, ক্ষুদ্র বই বিক্রেতা, চা-বিক্রেতা মিঠুবাবুরা।
