Sasraya News

Marriage in Ancient Egypt : প্রাচীন মিশরে বিবাহের রীতি

Listen

প্রাচীন মিশরের বিবাহরীতি  (Marriage in Anciant Egypt)  ছিল অত্যন্ত প্রাচীন ও বৈচিত্র্যময়। যা সামাজিক, আইনগত ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ ছিল। আলোচনা করেছেন : পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় 

 

চিত্রশিল্পের প্রাচীন মিশরের বর-কনে। ছবি : সংগৃহীত

প্রাচীন মিশর ও বিবাহরীতি

বিবাহের ধারণা ও সামাজিক কাঠামো দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, প্রাচীন মিশরে বিবাহ (Marriage in Anciant Egypt) ছিল একটি সামাজিক চুক্তি। অন্যান্য সকল দেশের বিবাহের মত প্রাচীন মিশরীয়দের বিবাহও পারিবারিক ঐক্য ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের নিশ্চয়তা দিত। যা ছিল মূলত একটি পারিবারিক চুক্তি। যেখানে প্রেমের চেয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক ছিল প্রধান হিসেবে মান্যতা পেত। যুগে যুগে এই চুক্তির ধরন ও গুরুত্ব পরিবর্তিত হলেও এটিই ছিল সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
চিত্রশিল্পীর তুলিতে প্রাচীন মিশরের বর-কনে। ছবি : সংগৃহীত

বিবাহ চুক্তি ও আইনি দিকে আলোকপাত করলে আমরা দেখব, প্রাচীন মিশরে বিবাহের আগে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হত।

চিত্রশিল্পে প্রাচীন মিশরের বর-কনে। ছবি : সংগৃহীত

ওই চুক্তি সাধারণত কনের পিতা ও বর প্রস্তুত করতেন। এই চুক্তিতে কনের দান, লেনদেন, সম্পত্তির অধিকার ও বিচ্ছেদের পর কনের অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলি উল্লেখ করা হত। বিচ্ছেদ হলে কনেকে তার অধিকার ও সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হত।

প্রাচীন মিশরীয় পেন্টিং। ছবি : সংগৃহীত

বিয়ের রীতি ও অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানা যায়, প্রাচীন মিশরে কোনও আনুষ্ঠানিক ধর্মীয় বিবাহ অনুষ্ঠান ছিল না। বিবাহের পর কনে তার সমস্ত আসবাবপত্র নিয়ে বরের বাড়িতে চলে আসতেন, এই নিয়ম “গ্রপ” নামে পরিচিত। এটি ছিল বিবাহের সামাজিক স্বীকৃতি। পরে পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে একটি আনন্দমুখর খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হত। ওই পারিবারিক অনুষ্ঠানে গান-বাজনা ও নাচের আয়োজনও থাকত।

চিত্রশিল্পে প্রাচীন মিশরের বর-কনে। ছবি : সংগৃহীত

বিচ্ছেদ ও নারীর অধিকার বিষয়ে জানা যায়,
বিচ্ছেদ ছিল সহজ ও সাধারণ প্রক্রিয়া। কোনও বিশেষ কারণ ছাড়াই স্বামী বা স্ত্রী বিচ্ছেদ চাইতে পারতেন। বিচ্ছেদের পরে স্ত্রী’কে তার অধিকার ও সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হত। এছাড়া, সন্তানরা মায়ের কাছে থাকত এবং মায়ের অধিকার সুরক্ষিত ছিল।

রাজকীয় বিবাহ ও পার্থক্য 

রাজকীয় বিবাহ ছিল আনুষ্ঠানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজারা কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিদেশি রাজকন্যাদের বিবাহ করতেন।

আধুনিক মিশরীয় ট্রাডিশনাল বিয়ে। ছবি : সংগৃহীত

তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে রক্ত-সম্পর্কের বাইরে বিবাহের প্রচলন ছিল। প্রতীকী উপাদান ও ধর্মীয় প্রভাব থাকত। ওই বিবাহের অনুষ্ঠানে পদ্ম ফুলের ব্যবহার ছিল। পদ্ম ফুলকে মিশরীয়রা পুনর্জন্ম ও উর্বরতার প্রতীক হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও, দানাদার শস্য ছিটিয়ে দেওয়া হত, যা সমৃদ্ধি ও উর্বরতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হত। যদিও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, তবে দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আশীর্বাদ ছিল বিবাহের অঙ্গ।

মিশরীয় বিয়ের বর-কনে। ছবি : সংগৃহীত

 

এই সময়ের বিবাহরীতি 

আজকের দিনে, প্রাচীন মিশরের বিবাহ রীতির কিছু উপাদান আধুনিক মিশরীয় বিবাহ অনুষ্ঠানে অক্ষত  রয়েছে। যেমন, “জাফা” নামক বিবাহ মিছিল।

ট্রাডিশনাল মিশরীয় বিয়েতে বর ও কনের সাজ। ছবি : সংগৃহীত

এই মিছিলে বাদ্যযন্ত্র, নাচ ও গান থাকে— এগুলিকে প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতিফলন হিসেবে আধুনিক মিশরীয় জনগণ মান্যতা দেন। প্রাচীন মিশরের বিবাহ রীতির এই বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধি আমাদের সমাজের বিবাহ প্রথার ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীরতা সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের কাছে বড় আগ্রহের বিষয়।

ছবি : প্রতীকী ও সংগৃহীত 
আরও পড়ুন : Love, sex and Ancient India : প্রাচীন ভারতে প্রেম যৌনতায় ধর্মীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপট 

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read