



সাশ্রয় নিউজ ★ কলকাতা : জার্মানির ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাসাদকে সাক্ষী রেখে এক বিশেষ মুহূর্তের জন্ম দিলেন ভারতের রাজনীতির দুই পরিচিত মুখ। গত ৩০ মে, শুক্রবার বার্লিন প্রাসাদের ছাদে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra) এবং পুরীর প্রাক্তন সাংসদ ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ পিনাকী মিশ্র (Pinaki Mishra)। ৬৫ বছরের পিনাকী ও ৫১ বছর বয়সী মহুয়ার এটি দ্বিতীয় বিবাহ। সূত্রের খবর, বিয়ে হয়েছে একান্ত ঘনিষ্ঠ পরিসরে। উপস্থিত ছিলেন শুধুমাত্র পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধব। বিদেশ বিভুঁইয়ে, রাজনীতি থেকে অনেক দূরে, সাদামাটা সাজসজ্জায় সম্পন্ন হয় এই বিবাহ অনুষ্ঠান। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই বিবাহ পরিকল্পনা অনেকদিন ধরেই চলছিল, তবে অনুষ্ঠানটি গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মহুয়া ও পিনাকী। বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চর্চা, শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন নবদম্পতি। তৃণমূলের দাপুটে নেত্রী হিসেবে পরিচিত মহুয়া মৈত্র গত ক’য়েক বছর ধরে নিজের কাজ ও বক্তব্যে সংবাদমাধ্যমে বিশেষভাবে আলোচিত। স্পষ্টবক্তা, বলিষ্ঠ, এবং স্বাধীনচেতা মনোভাবের জন্যই তিনি বারবার কেন্দ্রীয় শাসক দলের সমালোচনায় উঠে এসেছেন শিরোনামে। অন্যদিকে, পিনাকী মিশ্র একাধিকবার পুরী থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজু জনতা দল (বিজেডি)-র টিকিটে। আইনজীবী হিসেবেও সুপ্রতিষ্ঠিত তিনি। সংসদে তাঁর সৌম্য, প্রাজ্ঞ উপস্থিতি প্রশংসিত হয়েছে বারবার। জানা গিয়েছে, দু’জনের পরিচয় বহুদিনের। একাধিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন, রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে গড়ে ওঠে ব্যক্তিগত সম্পর্ক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাঁরা একাধিকবার একসঙ্গে দেখা গিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে। যদিও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা চললেও, কেউই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। এবার সেই সম্পর্ক পেল আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
বিয়ের স্থান হিসেবে বার্লিন প্রাসাদের ছাদ বেছে নেওয়া নিয়েও কৌতূহল রয়েছে। জানা গিয়েছে, মহুয়া ও পিনাকী দু’জনেই জার্মান স্থাপত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসে আগ্রহী। তাই এই স্থানের ঐতিহাসিক আবহের মধ্যেই নিজেদের নতুন যাত্রা শুরু করতে চেয়েছেন তাঁরা। পিনাকী মিশ্রের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু সংবাদমাধ্যমকে জানান, “ওঁরা একে অপরকে গভীরভাবে বোঝেন ও সম্মান করেন। তাঁদের জীবনকে ঘিরে এক নতুন অধ্যায় শুরু হল, শান্তি, শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার ভিত্তিতে।”
রাজনৈতিক মহলে এই বিয়ে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও, অধিকাংশ নেতা ও সাংসদরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, দলের অভ্যন্তরেও এই খবর উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছে। বিজেপি ও কংগ্রেসের বহু নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন নবদম্পতিকে। এমনকী মহুয়া মৈত্র দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিয়ের জন্য ছুটিও নেন বলে উল্লেখ
এই বিবাহ কোনও রাজনৈতিক জোট নয়, নিছকই দুই পরিণত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক জীবন থেকে ব্যক্তিগত জীবনের এই অধ্যায় দুই সাংসদের জন্য কতটা স্বস্তি ও আনন্দ নিয়ে আসে, এখন সেটাই দেখার। উল্লেখ্য যে, নবদম্পতির তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও অফিসিয়াল বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সূত্রের খবর, মহুয়া মৈত্র আগামী সপ্তাহে ভারতে ফিরে সাংবাদিকদের সামনে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন। এদিকে, বার্লিন থেকে তাঁদের কয়েকটি ছবি ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে, যা ঘিরে চর্চা তুঙ্গে। ভারতীয় রাজনীতিতে যেখানে ব্যক্তিগত জীবন প্রায়ই খবরের বাইরে থাকে, সেখানে এই বিয়ে নিঃসন্দেহে নজর কাড়ল দেশজুড়ে।
ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন :
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন :
