



পিনাকী চৌধুরী :: আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা রাতে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো (Laxmi Puja) অনুষ্ঠিত হয়। বস্তুতঃ বাংলার ঘরে ঘরে সৌভাগ্য ও সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর আরাধনায় মেতে উঠেছে বঙ্গসমাজ। ‘কোজাগরী’ অর্থাৎ ‘কে জেগে আছে’! স্বয়ং লক্ষ্মী দেবী উক্ত পূর্ণিমার রাতে ঘরে ঘরে গিয়ে দেখেন যে, কোন কোন ভক্তরা রাত জেগে তাঁর আরাধনা করেন। সত্যিই এই কোজাগরী পূর্ণিমার রাতের মহিমা অপার! কিন্তু কেন লক্ষ্মী দেবীর বাহন পেঁচা?
আসলে লক্ষ্মীর অর্ধেক অংশ অলক্ষী। ব্রহ্মার মুখের উজ্জ্বল অংশ থেকে আবিভূর্তা হন দেবী লক্ষ্মী। এবং অলক্ষী তাঁর পৃষ্ঠদেশের অন্ধকার অংশ থেকে আবিভূর্তা হয়েছিলেন। পেঁচা লক্ষ্মীর পায়ের কাছে বসে। শোনা যায় যে, লক্ষ্মী দেবীর পেঁচা পেচাকা নামে পরিচিত। অপর একটি মতে, ধান হল লক্ষ্মীর প্রতীক। অন্ন, চাল, খাদ্যশস্যও হল লক্ষ্মীর প্রতীক। এটা মনে করা হয় যে, যাঁরা খাদ্যদ্রব্য অপচয় করেন, তাঁদের প্রতি মা লক্ষ্মী অসন্তুষ্ট হন। ধানক্ষেতের আশেপাশে ইঁদুর বসবাস করে তারা ধানের ক্ষতিসাধন করে। এদিকে পেঁচা এইসব ইঁদুর কে মেরে ফেলে এবং খাদ্যশস্যকে রক্ষা করে।
তাই মনে করা হয়, মা লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা। আসলে মা লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা ধৈর্য, বুদ্ধিমত্তার এবং প্রজ্ঞার প্রতীক। পেঁচা লক্ষ্মী দেবীর ভক্তদের অনুরোধ করে যে, তাঁরা যেন বিপুল সম্পদ, ঐশ্বর্য ও জাঁকজমকের মধ্যে আটকে না পড়েন! এটি তখন সর্বজনীন প্রজ্ঞার প্রতীক হয়ে ওঠে, যা কিনা অহঙ্কার এবং অনুশাসন সম্পর্কে ভক্তদের সচেতন করে। দেবী লক্ষ্মীর সম্পদ যখন কোনও ব্যক্তি অধর্মমূলক কাজে ব্যবহার করে, তখন সে উপযুক্ত শিক্ষা লাভ করে! ঠিক সেই সময় পেঁচা দেবী অলক্ষ্মীকে আপনার দুয়ারে উড়িয়ে নিয়ে যায়, যা কিনা অশুভ, অসম্মান এবং দুভার্গ্যের প্রতিনিধিত্ব করে।🍁
ছবি : সংগৃহীত
