



সাশ্রয় নিউজ ডেস্ক ★ কালনা, পূর্ব বর্ধমান :
বাসন্তিক শ্রীপঞ্চমীর রং যেন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে সনাতনী বাঙালির হৃদয় মনে আলাদা করে দোলা দিয়ে যায় সাড়ম্বরে মা সারদাকে বরণ করে নেবার জন্য।
সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মায়ের আশীষ লাভের জন্য যেন একটু বেশি তৎপর।
এ জন্য তাদের দিক থেকে মাকে সাজানোর জন্য কোন কার্পণ্য থাকে না।
বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলির এই সময় প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা হিন্দু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যেন একটু এদিক থেকে বেশি এগিয়ে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা যেন এই সময়টাতে সবটুকু উজাড় করে দেন।
কালনা হিন্দু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই সময় তাদের দেয়াল পত্রিকা বের হয়। পত্রিকার সম্পাদিকা শিক্ষিকা শ্রীমতী মমতা রায় চৌধুরী বলেন, ‘আসলে বিদ্যালয়ের পত্রিকাকে কেন্দ্র করে এসময় মেয়েদের খুব আবেগ জড়িয়ে থাকে তাদের সেই আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে শ্রী পঞ্চমীতে তাদের দেয়াল পত্রিকা ‘হাতে কলমে’ শিক্ষার্থীদের আঁকিবুকি, হাতের কাজ ,আলপনা আর লেখনি শক্তিতে ভরিয়ে তোলে।
এটা তাদের কাছে একটা গর্বের বিষয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদ্যালয় পরিদর্শনে পর্যবেক্ষকরা এসে থাকেন। এবং নানা দিক থেকে নানা আঙ্গিকে বিচার করে প্রতিবছরই হিন্দু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পুরষ্কার পেয়ে থাকে।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্তা প্রধান শিক্ষিকা ফাল্গুনী মল্লিক বলেন, আসলে আমরা শিক্ষার্থীদের এই আবেগকে গুরুত্ব দিতেই প্রত্যেকে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে যারা পত্রিকার লেখার সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং হাতের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা বলে এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে এবং শিক্ষিকাদের পেয়ে ভীষণভাবে গর্বিত।
কারণ তারা যা আবদার করে সে আবদার মেটাতে কালনা হিন্দু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর শিক্ষিকারা আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
অন্যদিকে যে সমস্ত দিদিমনিরা আলপনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের মধ্যে শিক্ষিকা নিবেদিতা মন্ডল বলেন, ‘আসলে এই বিদ্যালয়ের এই আলপনা দেয়ার রীতিটা অনেক প্রাচীন রীতি ।সেই রীতি সুনামের সঙ্গে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষিকারা সমানভাবে হাত লাগিয়ে কাজ করে থাকেন।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্তা প্রধান শিক্ষিকা শ্রীমতী ফাল্গুনী মল্লিক বলেন, ‘এবছর তাদের সরস্বতী পূজার মধ্যে দিয়ে আরেকটা আলাদা বার্তা যেতে চলেছে। তবে তিনি সেই বার্তাটা এখন বলতে চান না। ক্রমশ প্রকাশ্য বলে একটু মুচকি হাসেন।’
পত্রিকাটি অসাধারণ ভাবে সাজানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের পত্রিকার সম্পাদিকা শিক্ষিকা শ্রীমতী মমতা রায় চৌধুরী বলেন, ‘এই পত্রিকার সঙ্গে যারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত তাদের নাম না করলেই হয় না তারা হচ্ছে তার বিদ্যালয়ের কিছু কাজের শিক্ষার্থীরা আর রয়েছেন তার সহকর্মীরা। সহকর্মীরা সকলে থাকলেও তাদের মধ্যে যার নাম না করলে নয় তিনি শিক্ষিকা এলা মাসি আক্তার। এ ছাড়া তাদের যে নতুন থিম রয়েছে সেই থিমের কাজে যে সমস্ত শিক্ষিকারা যুক্ত আছেন শিক্ষিকা শর্মিলা, শিক্ষিকা অরুন্ধতী ঘোষ।
পত্রিকার সম্পাদিকা মমতা রায় চৌধুরী বলেন, ‘এছাড়া এ বছরে তাদের প্রিয় বাউল কবি অরুণ কুমার চক্রবর্তীর স্মরণে একটি মডেল পত্রিকা ‘লাল মাটির দেশে যা…’ একটা আলাদা চমক।
পত্রিকার সম্পাদিকা মমতা রায় চৌধুরী আরও বলেন, এছাড়া আমাদের বিদ্যালয় এর আর একটি বিষয় খুব ভালোভাবে সেজে ওঠে সেটি হচ্ছে বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত আমন্ত্রণ পত্র অর্থাৎ সারদ কার্ড তাই দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়। শিক্ষিকা তার ছাত্রীদের দিকে একটু মুচকি হেসে বলেন, তোমরাই বলো না তার কি নাম দেয়া হয়েছে।’ তাদের মধ্যে থেকে ছাত্রী কৃতি ও রাইমা বলে ‘এর নাম হচ্ছে ‘মিষ্টি মধুর সম্পর্ক’’।
সত্যিই অনবদ্য লাগল কালনা হিন্দু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সাশ্রয় নিউজ পৌঁছে গিয়ে এতগুলো তথ্য কভার করতে পেরে। পরের বছর আশা করি আরো নতুন ভাবে সেজে উঠবে কালনা হিন্দু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
