Sasraya News

Friday, March 28, 2025

International Women’s Day : নারী সমাজের এক চরমতম শক্তি | দেবব্রত সরকার

Listen

১৯১০ সালে কপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সামাজিকতাবাদী মহিলাদের সম্মেলনে ক্লারা জেটকিং-এর নেতৃত্বে ৮ই মার্চকে নারী দিবস (Women’s Day) হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। তখন থেকে দিনটি নারী মুক্তি আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পরিণত হয়েছে। লিখেছেন : দেবব্রত সরকার 

 

প্রতি বছরের ৮ই মার্চ বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এই দিনটি নারীর আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অর্জনগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। এটি নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি, তাদের অধিকার ও সুযোগের ক্ষেত্রে চলমান চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরতে সাহায্য করে নারী অধিকার।

 

 

শুধু নারীদের অর্জনকেই উদযাপন করা নয়, বরং তাদের অধিকারের জন্য লড়াইও করা, যা, প্রত্যেক সমাজে, এমনকি প্রতিটি দেশে, নারীকেন্দ্রিক নীতি ও আইনকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

 

নারী দিবসের ইতিহাস শুরুর দিকে ফিরে গেলে দেখা যায়, ১৯০৮ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে ১৫,০০০ নারী আত্মরক্ষার অধিকার, চাকরির সুযোগ এবং ভোট দেওয়ার দাবি নিয়ে মিছিল করেছিলেন। এরপর ১৯১০ সালে কপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সামাজিকতাবাদী মহিলাদের সম্মেলনে ক্লারা জেটকিং-এর নেতৃত্বে ৮ই মার্চকে নারী দিবস (Women’s Day) হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। তখন থেকে দিনটি নারী মুক্তি আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে, নারী দিবস নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতার প্রয়াসকে বিশ্বের নানা প্রান্তে তুলে ধরার মাধ্যমে একটি গ্লোবাল মুভমেন্টে পরিণত হয়েছে বলেই উল্লেখ। এটি শুধুমাত্র নারীদের অধিকার অর্জন ও সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরার জন্য নয়, বরং সমাজে লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করার একটি উপলক্ষ্য  হিসেবেও কাজ করে।

 

 

নারী দিবসের মূল উদ্দেশ্য হল নারীর আধিকার ও ক্ষমতায়নের প্রতি জোর দেওয়া। আজও আমাদের সমাজে নারীরা অনেক ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন এ কথা অস্বীকার্য নয়। তবে বলতে পরি যে, তারা সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে সীমাবদ্ধতা অনুভব করেন। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবায় নারী ও পুরুষের মধ্যে যে অসমতা বিদ্যমান, তা দূর করতে নারী দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেই আমার অভিমত।
নারী দিবসে আমাদের উচিত শুধু নারীদের অর্জনকেই উদযাপন করা নয়, বরং তাদের অধিকারের জন্য লড়াইও করা, যা, প্রত্যেক সমাজে, এমনকি প্রতিটি দেশে, নারীকেন্দ্রিক নীতি ও আইনকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। ক্রমে নারীদের নিয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যাতে নারীরা নিজেদের অধিকারের প্রতি সচেতন হন এবং সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
আমি সর্বশেষ বলব, নারী দিবস আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, নারীরা সমাজের প্রাণ। যাদের মাতৃত্ব বোধেই এই এতবড় সমাজ তৈরী হয়েছে। নারীরা এই সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নারী সমাজের অধিকার, তাদের স্বাধীনতায়, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি কেবল নারীদের জন্য নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য একটি অত্যাবশ্যক বাস্তবতা। নারীর সমাহারেই সমাজে প্রকৃত সমতা ও সুষম উন্নয়ন সম্ভব। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে নারীর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন করি এবং একসাথে কাজ করি একটি সম অধিকারের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য। নারী ও পুরুষ হাতে হাত রেখে এই সমজাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাহলেই পৃথিবীর মহৎ কাজটি সম্পন্ন হবে। মা শব্দটির মহাত্ম এতটাই গভীর যে সেখানে কোন সম্পর্ক মূল্যায়ণ করা সম্ভব হবে না। অতএব , আমাদের মনে রাখা দরকার যে, নারী শক্তি সৃষ্টির এমন এক ভীত যা এই পৃথিবীর মানুষ প্রতীক্ষণেই প্রমাণ পেয়ে থাকে।

ছবি : আন্তর্জালিক 

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment