Sasraya News

Friday, March 28, 2025

International Women’s day : নারী দিবস : নির্মম তারিখে আটকে থাকবে না নারীরা

Listen

সৌদি আরবে যদি কোনও মেয়েকে ধর্ষণ করা হয় সেই মেয়েকে চারজন পুরুষ সাক্ষী জোগাড় করতে হবে। মেয়েদের সাক্ষ্য শরিয়ত আইনে মানা হয় না। যদি কোনও পুরুষ সাক্ষী দিতে অপরাগ হয় তবে ধর্ষিত মেয়েকে বেত্রাঘাত করা হবে। এর চেয়ে বড় অন্ধকার আর কি হতে পারে? লিখেছেন : মুন চক্রবর্তী

 

সভ্যতার বলয় থেকে মানুষ যখন সভ্যতার আলো দেখতে এবং দেখাতে শুরু করল নারীর অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে। পরিবর্তন কতটুকু? কিছু সভ্যতা আসল ভোগে, কিছু আসল পণ্যে, কিছু আসল কামনা লালসায়।নারী আলো দেখল শিক্ষা পেল মর্যাদা সময়পোযোগী হয়ে রইল।সভ্যতার তীক্ষ্ম ধারাল ছুরিতে প্রতিদিন কতজন নারী হত্যা হয়।বিচার আদালতে!

 

সভ্যতার আলো পৌঁছার আগে আগে আমরা আর্য ও বৈদিক যুগে কিছু নারীদের পাই। যাঁরা জ্ঞানের দক্ষতা রেখে গেছেন। মৈত্রী, ক্ষণা, গার্গী। তার পরিবর্তী সময়ে কিছু মহিয়ষী নারীদের উল্লেখ পেয়ে থাকি। আধ্যাত্মিকতা থেকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিজেদের পরিচয় রেখে গেছেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবী মহিলার সংখ্যা নগন্য নয়।

 

আদিম যুগে পুরুষ নারীর বস্ত্র ছিল না। বস্ত্রের ব্যবহারের সঙ্গে সমাজ ব্যবস্থা নারীর দেহ সৌন্দর্যের উপস্থাপন লালসা আর লোভে আটকে দিল। মেয়েরা সহজ পন্থাকে বেছে নিল।ব্যক্তিগত পছন্দ আর ব্যক্তিত্বের পছন্দের মধ্যে প্রাচীর গড়ে উঠল।
বর্তমান যুগে মেয়েদের অবস্থান বিচার করার ক্ষমতা আমার নেই।আমি অক্ষম সেই কারণে উচ্চ পদস্থ অনেক নারীকে দেখেছি যারা উচ্চ পদে আসীন হয়েও এর অপব্যবহার করছেন। নানান ভ্রষ্টাচারে লিপ্ত আছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি দশ মিনিটে এক কন্যা সন্তান ধর্ষিত হয়।প্রতি পনেরো মিনিটে মহিলা ধর্ষিত হয়।শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে হয়ত ঘরের পর্দা সরে গেছে।কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে চরিত্র গঠনের অবসান হয়েছে। নারী স্বাধীনতা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কতটুকু সাফল্য পেয়েছে!

 

 

বলতে গেলে একটু মননের দরকার।
রাতে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা নারীর অবস্থান মোটেও ভাল নয়।রাতে ঘরে ফিরতে সবসময়ই মেয়েদের একটি পুরুষের সাহায্য নিতে হয়!নির্ভয়া কাণ্ড কখন ঘটে সেই ভয় তাড়া করে বেড়ায়।
অজস্র নির্মম তারিখগুলো পূর্ণাঙ্গ নারী স্বাধীনতা কি? ইউরোপ দেশে মেয়েদের অবস্থা আমাদের থেকে ভাল বলা যায় কি?সেই বিশ্লেষণে যেতে হলে আমাদের দেশের মাতৃতান্ত্রিক রাজ্যগুলোর দিকে তাকাতে হবে। নাগাল্যান্ড মিজোরাম মেঘালয়ে দেখা যায় নারী নির্যাতন অনেকটাই কম।কারণ তাদের নিজস্ব ধারায় মেয়েরা নিজেদের মতামত রাখার অবকাশ পায়।এই উপজাতি অঞ্চলে নারীরা স্বনির্ভর।অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সমতল অঞ্চলের নিম্ন শ্রেণীর মহিলারা পায় না। লোকের বাড়িতে কাজ করে সারা মাসে যা আয় করে দেখা যায় তাদের নামেমাত্র স্বামীরা মদ ও জুয়া খেলার জন্য জোর করে নিয়ে যায়। ঐ সম্প্রদায়ের মহিলারা নিজেদের সন্তানের ভরন পোষন করেও বিবাহিতা স্ত্রীর মর্যাদা পায় না। সার্বিক স্থরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস কিয়দংশের  মধ্যেই সীমিত।

সভ্যতার আলো পৌঁছার আগে আগে আমরা আর্য ও বৈদিক যুগে কিছু নারীদের পাই। যাঁরা জ্ঞানের দক্ষতা রেখে গেছেন। মৈত্রী, ক্ষণা, গার্গী। তার পরিবর্তী সময়ে কিছু মহিয়ষী নারীদের উল্লেখ পেয়ে থাকি। আধ্যাত্মিকতা থেকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিজেদের পরিচয় রেখে গেছেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবী মহিলার সংখ্যা নগন্য নয়। প্রীতিলতা ওয়াদ্দার, সরোজিনী নাইডু, বীনা দাস সোহাসিনী গাঙ্গুলি, কল্পনা দত্ত, ইলা সেন সহ অসংখ্য নারীরা স্বাধীনতা আন্দোলনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।এই বিপ্লবী পথকে তরান্বিত করে গেছেন আধ্যাত্মিক মহিলারা। ভগিনী নিবেদিতা নারী শিক্ষা থেকে সেবা মূলক কাজে এবং আধ্যাত্মিক চেতনায় স্বামীজির পথকে মহিমান্বিত করে গেছেন। পরম পূজনীয় পথে শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণের সহধর্মিণী সারদা দেবী। মা সারদা নানান প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে ধৈর্যের সহিত মানবজাতির কল্যাণে সংসার ধর্ম পালন করে গেছেন। সহস্র সন্তানের ভাল ও মন্দ একাই নীরবে প্রতিকার করেছেন। ভালো মন্দ দুই-ই তাঁর সন্তান। তিনি সৎ-এর মা অসৎতের মা। তাই তিনি জগজননী রূপে পূজিতা।

নারী মুক্তি নারী স্বাধীনতা সংঘাতে বিপর্যয়ের সফলতা বলা যায় না।বর্তমানে নারী হিংসার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছে। শ্লীহানি নারীর সংখ্য দিনদিন বেড়েই চলছে। আমরা যেন এক পক্ষাঘাত সমাজে অবস্থান করছি। যুগের বিজ্ঞান বলছে মেয়েদের সমান অধিকার।পরম্পরা শাস্ত্র বিধি নিষেধ এখনও সমাজে প্রতিপন্ন। শিক্ষার আলোতে জ্ঞানের গরিমা পৌঁছায়নি বলেই আজও পণ সংঘাত ঘটে থাকে।
নারীকে পুড়িয়ে মারা হয়।

 

 

রাজা রামমোহনের নারীরা নারী হয়ে শিক্ষার আলো অর্থনৈতিক সামজিক সুবিধা পেয়েছে। কিন্ত লিঙ্গ বৈষম্য থেকে মুক্তি আজও পায়নি। কিছু সম্মান কিছু খ্যাতি দিয়ে সমস্ত নারী সমাজকে বিচার করা যায় না। গৃহ হিংসায় কত নারী ক্ষতিগ্রস্ত তার দায় অবশ্যই শুধু পুরুষদের উপর বর্তায় না। গৃহ হিংসায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একজন নারী অন্য এক নারী ধ্বংসের কারণ হয়। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই হিংসার জন্যই নারীরা অনেক ধাপ পিছিয়ে আছে। বৈদিক যুগের নারীর অধিকার বর্তমান নারীর অধিকারের মধ্যে পার্থক্য অনেক। মানতে হয় বর্তমান যুগে নারীরা স্মার্ট ইন্টিলিজেন্স বাহিরের জগতে নিজের পরিচয় স্থাপন করতে পেরেছে। কিন্তু তা সত্বে আগের মত শ্রদ্ধাশীল হতে পারে না।

পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আজও জায়গা বিশেষে মেয়েদের বাচ্চা জন্মদেবার মেশিন ভাবা হয়। কুল রক্ষার জন্য সাপ্লাইয়ার।নারীরা পৃথিবীর কোথাও নির্বিঘ্নে দিন কাটাতে পারে না। এর কারণ হল সমাজের চরিত্র গঠন হয় নাই।এর জন্যই হাজার নির্মম তারিখ আদালতের চৌকাঠে। সহস্র আইন প্রণয়ন করে নারীর সুরক্ষা বলয় তৈরি করা সম্ভব হয়নি। অসম থেকে কাশ্মীর ভূ-ভারতে তথা বিশ্বে নারী নির্যাতনে হত্যায়ধর্ষণে সাজা পায়।তারপরের দিন আবার সেই এক খবর।

 

 

আমাদের দুর্ভাগ্য প্রযুক্তির যুগে নানান ক্ষেত্রে দক্ষ নারীর পাশে অত্যাচারের ভাগটা বেশি। সৌদি আরবে যদি কোনও মেয়েকে ধর্ষণ করা হয় সেই মেয়েকে চারজন পুরুষ সাক্ষী জোগাড় করতে হবে। মেয়েদের সাক্ষ্য শরিয়ত আইনে মানা হয় না। যদি কোনও পুরুষ সাক্ষী দিতে অপরাগ হয় তবে ধর্ষিত মেয়েকে বেত্রাঘাত করা হবে। এর চেয়ে বড় অন্ধকার আর কি হতে পারে?
অজস্র নির্মম তারিখের পাশে স্বর্ণজয়ী মহিলা খেলোয়ার সহ শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীর বিজয় জয় যাত্রা কে স্যালুট জানাতে হয়। আকাশ পথ পাড়ি দিয়ে যে নারীরা অকোতুভয়ে মহাকাশে পতাকা ওড়ায়। হিংসা তখন ব্যর্থ নেকড়ের মত মূখ লুকাতে বাধ্য হয়।
প্রদীপ্ত নারীরা আশীর্বাদ রেখে গেছেন গঠন মূলক সমাজের জন্য। একটি দিবস নারীর পরিচয় নয় প্রতিশ্রুতি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। সংগৃহীত 

আরও পড়ুন : Sasraya News Sunday’s Literature Special | 2 March 2025, Issue 54| সাশ্রয় নিউজ রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল | ২ মার্চ ২০২৫ | সংখ্যা ৫৪

 

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment