



বসুধা চৌধুরী ★ সাশ্রয় নিউজ : বিধ্বস্ত কাশ্মীর উপত্যকায় গত এক দশক ধরে উন্নয়ণ কাজ চলছে। কাশ্মীরি যুব সমাজ, বিশেষ করে তরুণীরা খেলাধুলা, ব্যবসা, শিল্প থেকে বিভিন্ন পেশা ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে। ভূস্বর্গের বাসিন্দা ১৮ বছরের রুতবা শওকত (Rutba Showkat)। অনন্য প্রতিভার জোরে ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এ (Guinness Book of World Records) এই তরুণী নাম জ্বলজ্বল করছে।
রুতবা শওকত কে? একজন দক্ষ মার্শাল আর্টিস্ট। রুতবা শওকত রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ের চ্যাম্পিয়নশিপে ৫০ টিরও বেশি পদক জিতেছেন। এক ঘন্টায় ২৫০টি কাগজের নৌকা তৈরি করে রুতবা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তাঁর নাম তুলেছেন। তরুণীর এই দ্রুত কাগজের নৌকা বানানোর বিষয়টি বিশ্বব্যাপী রেকর্ড। দেশের একটি সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে রুতবা জানিয়েছিলেন যে, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় তাঁর শিল্পের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। সেই ইচ্ছেই তাঁকে রেকর্ড গড়তে সহায়তা করেছে। রুতবা বলেছেন, “আমি একজন ক্রীড়াবিদ। এবং কোভিডের সময়, সমস্ত আকাডেমি বন্ধ ছিল। তাই আমি শিল্পের খোঁজ শুরু করি। আমি ল্যান্ডস্কেপ আর্ট তৈরি শুরু করি। এবং সেই সময়ে, আমি ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে আমার নাম নথিভুক্ত করি। সেই মুহূর্তটিই আমি আরও বড় কিছু করার কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি গিনেস বুক অফ রেকর্ডস সম্পর্কে পড়েছি, প্রক্রিয়াটি গবেষণা করেছি এবং ব্যবহার করেছি,”
রুতবা জানিয়েছেন যে, রেকর্ড বইয়ে তাঁর নাম লেখানোর জন্য যাত্রাপথ সহজ ছিল না। কারণ তিনি রেকর্ড ভাঙার চেষ্টায় দু’বার ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায়ে সাফল্য ধরা দেয়। ইতিহাসের পাতায় তার নাম খোদাই রয়ে গেল। রুতবা বলেছেন, “গবেষণা করার সময়, আমি অরিগামি কাগজের শিল্পের সঙ্গে পরিচিত হই। সেই সময়ে এক ছেলের কথা জানতে পারি যে, সে এক ঘন্টায় ১৫০টি কাগজের নৌকা তৈরি করেছিল। তখনই আমি তাঁর রেকর্ড ভাঙার সিদ্ধান্ত নিই এবং আমি সফলও হয়েছি। এক ঘন্টায় ২৫০টি নৌকা তৈরি করে ফেলেছিলাম।”
এর আগে, রুতবা শওকত ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে টাই পেয়েছিলেন। কিন্তু ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’এ নাম উঠলে তিনি মানুষের ভালবাসা আরও বেশি পান। তবে এই পথচলা মোটেই সহজ ছিলস না। সমালোচনা তুচ্ছ করে ঐতিহ্যবাহী প্রথা ভেঙেই অনন্য এই কাশ্মীরি তরুণী। উপত্যকাজুড়ে মেয়েদের অনুকরণীয় আইকনের মর্যাদায় পেঁয়েছেন রুতবা। রুতবা র দাবি, অনেকেই তাঁকে বলেছিলেন যে, তিনি কাগজের শিল্পকে আঁককড়ে ধরে আসলে সময় নষ্ট করছেন। তবে, রুতবার পরিবার সর্বদা তাঁর পছন্দগুলিকে সমর্থন করেছিল। ফলে শেষ পর্যন্ত সে গৌরবের হদিশ পায়। “অনেক লোক আমার সমালোচনা করেছিল এবং বলেছিল যে আমি আমার সময় নষ্ট করছি, কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। আমার পরিবারের সমর্থন আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। অনেক মেয়ে হয় খুব লাজুক হয় অথবা তাদের পরিবারের শাসনে আটকে থাকে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি তাদের স্বাধীন হওয়া উচিত। এমনকী যদি তাদের ছোট থেকে শুরু করতে হয়, তাদের সেটি করা উচিত।” তারও আরও দাবি যে, রেকর্ড পরীক্ষা করার সময়, আমি গত দশ বছর ধরে একজন ক্রীড়াবিদ, জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছি। খেলাধুলা অবিশ্বাস্যভাবে শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই দৃঢ়তা প্রদান করে, শিল্প আমার মনকে সতেজ করতে সাহায্য করে।”
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Sunjay Kapoor Net Worth : সঞ্জয় কপূরের ১০,৩০০ কোটির সাম্রাজ্য: উত্তরাধিকারের প্রশ্নে আলোচনায় সামাইরা-কিয়ান
