



সমস্ত অভিভাবকদের একজন কাউন্সেলর-এর মত বাচ্চাদেরকে বুঝিয়ে কৌশলগুলো বা উপায়গুলোকে প্রয়োগ করতে হবে। আশাকরি কিছুটা হলেও সুফল পাবেন। লিখেছেন : জয়দেব বেরা
গেম (Game) বলতে এখানে আধুনিক মোবাইল ফোনের গেমের (Mobile Game) কথা বলা হচ্ছে। যেমন- পাপজী, ফ্রিফায়ার সহ অন্যান্য অনলাইন গেম ইত্যাদি। এই গেমের নেশায় আজকের যুব সমাজ খুব ভয়াবহ ভাবে আসক্ত। দীর্ঘক্ষণ গেম খেলার ফলে শরীরের ঘুমের সমস্যা, চোখের সমস্যা, স্বাস্থ্যগত সমস্যা, মনোযোগ এর সমস্যা ইত্যাদির সৃষ্টি হয়। এরফলে তার নানান ধরণের সামাজিক,মানসিক এবং শারীরিক সমস্যারও সৃষ্টি হচ্ছে। এই গেমকে কেন্দ্র করে পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে,ক্যারিয়ার এর ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে সর্বপরি মানসিক ও সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।
তাই বাড়ির বাচ্চাদের এই গেম এর আসক্তি থেকে মুক্ত করতে অভিভাবকদের যা যা করণীয় সেগুলি হল-
১) প্রথম থেকে একেবারেই গেম খেলা বন্ধ করবেন না।তাতে সমস্যা হবে। ধীরে ধীরে এই নেশাটি দূর করতে হবে। নানান কৌশলে ধীরে ধীরে সময়ের ব্যবধানে এই নেশাটি কমাতে হবে। যতটা সম্ভব মোবাইল ফোন কম ব্যাবহার করতে দেবেন।প্রোপার গাইডেন্স প্রদান করুন।
২) মোবাইল থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখতে যতটা সম্ভব বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখুন। ছেলে-মেয়েদেরকে সর্বদা পর্যবেক্ষণে রাখুন।
৩) ছেলে-মেয়েদেরকে বিভিন্ন শিক্ষা-সাংস্কৃতিক মূলক কাজে যতটা সম্ভব ব্যস্ত রাখবেন। এটা এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।যেমন-নাচ,গান,কবিতা লেখা ও বলা,ছবি আঁকা ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত রাখা।
৪) ধর্মীয় স্থানে (মন্দির, মসজিদ ইত্যাদি) বেশি বেশি করে যাবেন। ভক্তি,শ্রদ্ধা, প্রার্থনা প্রভৃতির অভ্যাস করাবেন। যা ওর আদর্শ গঠনে সহায়তা করবে।
৫) সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করাবেন।শরীরচর্চা অর্থাৎ যোগা থেকে শুরু করে মেডিটেশন এবং ব্রিদিং এক্সারসাইজ এর অভ্যাস করান। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান।
৬) ছেলে-মেয়েদের সামনে সবসময় ইতিবাচক (পজিটিভ) কথা-বার্তা বলুন। তাদেরকে সবকিছু বুঝিয়ে বলবেন। তাকে বিভিন্ন বিষয়ে উৎসাহ দিন। কেরিয়ার নিয়ে পরামর্শ দিন।ই তিবাচক অভিজ্ঞতা বা গল্প শোনান।মনীষীদের জীবনী পড়ান।
৭) বাড়ির বাইরে মাঠে খেলতে পাঠান।যেমন-ক্রিকেট,ফুটবল, ভলিবল ইত্যাদি।যতটা সম্ভব প্রকৃতির সাথে মিশতে বলবেন।
সর্বপরি, সমস্ত অভিভাবকদের একজন কাউন্সেলর এর মত বাচ্চাদেরকে বুঝিয়ে উপরের কৌশলগুলো বা উপায়গুলোকে প্রয়োগ করতে হবে। আশাকরি কিছুটা হলেও সুফল পাবেন। খুব বেশি সমস্যা হলে একজন ভালো মনো-কাউন্সেলর বা মনোবিদের কাছে যেতে পারেন।
(লেখক : অতিথি অধ্যাপক, বইয়ের লেখক এবং সমাজ-মনোবিশ্লেষক)
ছবি : প্রতীকী
