Sasraya News

Elon Musk : হোয়াইট হাউসে মাদক বিতর্ক: ইলন মাস্ককে ঘিরে উঠছে নতুন প্রশ্ন

Listen

সাশ্রয় নিউজ ★ ওয়াশিংটন : আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন, টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান এলন মাস্ক (Elon Musk) হোয়াইট হাউসে মাদক ব্যবহার করেছেন কি না, সেই প্রশ্নে। সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক রিপোর্ট ঘিরে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে মাস্ক ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে থাকাকালীন সময়টায় নিয়মিত কেটামিন, এক্সট্যাসি ও সাইকেডেলিক মাশরুম গ্রহণ করতেন। এই প্রসঙ্গেই ট্রাম্প সম্প্রতি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। সাংবাদিক বৈঠক করে ট্রাম্প বলেন, “আমি সত্যিই জানি না, তবে আমার বিশ্বাস তিনি হোয়াইট হাউসে এমন কিছু করেননি। আমি আশা করি, তিনি কখনওই তা করেননি।” ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা স্পষ্ট করে দেন যে মাস্কের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত সহানুভূতি রয়েছে এবং তাঁদের সম্পর্ক এখনও ‘ভাল’। এমনকী তিনি মাস্কের সুস্বাস্থ্যের কামনাও করেন। ট্রাম্প আরও বলেন, “আমি সত্যিই চাই তিনি ভাল থাকুন। আমি তাঁকে ভালবাসি এবং সত্যি করে বলছি, খুব ভাল স্বাস্থ্য থাকুক তাঁর।” এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, ট্রাম্প সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যের সত্যতা নিয়ে একদিকে সন্দিহান, আবার অন্যদিকে মাস্কের প্রতি তাঁর ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও অস্বীকার করছেন না।

পড়ুন : China women’s crisis : বিয়ের জন্য মেয়ের খোঁজে বেপরোয়া চিনা পুরুষদের ঘিরে তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক সঙ্কট, বিদেশি বউ নয়, বার্তা চিন সরকারের!

রিপোর্ট অনুযায়ী, ইলন মাস্ক (Elon Musk) ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারপর্বে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একেবারে ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অংশ হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময়ের মধ্যেই নাকি তাঁর মাদকের প্রতি আসক্তি বেড়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রায়শই একটি ওষুধের বাক্স সঙ্গে রাখতেন, যেখানে প্রায় ২০টি বড়ি থাকত। ওইসব বড়ির মধ্যে অ্যাডেরল (Adderall)-এর মতো উচ্চমাত্রার স্নায়ুবিষয়ক ওষুধের উপস্থিতি ছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, কেটামিন (Ketamine) একটি শক্তিশালী এনেস্থেটিক বা অচেতনকারী ওষুধ, যার উচ্চমাত্রার সেবনে নানা শারীরিক ও মানসিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অতিরিক্ত কেটামিন গ্রহণের ফলে মাস্কের ইউরিন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিয়েছিল। যদিও এসব অভিযোগ সরাসরি প্রমাণিত হয়নি। এই বিতর্ক এখন আন্তর্জাতিক আকর্ষণ করেছে।

এদিকে, মাস্কের দান নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। জানা গেছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারযাত্রার জন্য মাস্ক প্রায় ২৭৫ মিলিয়ন ডলার দান করেছিলেন। এই বিপুল অঙ্কের দান এবং রাজনৈতিক সমর্থনের প্রেক্ষিতে অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্প হয়ত মাস্কের বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগ থেকে তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস বা ফেডারেল প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে আমেরিকান সমাজে এই বিতর্ক নতুন করে রাজনৈতিক ও নৈতিক প্রশ্ন তুলছে। একজন প্রযুক্তি জায়ান্ট কি শুধুই অর্থ ও প্রভাবের মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক স্তরের এতটা কাছে পৌঁছে যেতে পারেন? তবে প্রশ্ন উঠছে, যদি এমন প্রভাবশালী কেউ সত্যিই নিয়মিতভাবে সাইকো-অ্যাকটিভ ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন, তবে তার কি জাতীয় নিরাপত্তা বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে কোনও ছায়া পড়ে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অস্পষ্ট, কিন্তু বিতর্ক যতই দীর্ঘায়িত হচ্ছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপও তত বাড়ছে।

এখন সকলের নজর রয়েছে এলন মাস্ক এবং হোয়াইট হাউসের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে। মাস্ক নিজে এখনও এই বিতর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে তাঁর নিকট অতীতের কিছু টুইট ও জনসমক্ষে আচরণ নিয়ে সমালোচকরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলছেন। এই পুরো ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক ক্ষমতার জটিল সম্পর্ক কেবল অর্থের লেনদেনেই থেমে নেই, এর গভীরে রয়েছে বিশ্বাস, দায়িত্ব এবং জনমানসে গঠিত এক অদৃশ্য গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন। এখন দেখার, ট্রাম্পের কূটনৈতিক মন্তব্য কি বিতর্ককে প্রশমিত করতে পারে, নাকি মাস্ককে ঘিরে আরও গভীর তদন্তের সূত্রপাত ঘটাবে!
ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন :Elon Musk : ‘ঋণের দাসত্ব নয়!’ ট্রাম্পের বিল বাতিলের ডাক ইলন মাস্কের

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read