



পিনাকী চৌধুরী ★ কলকাতা : দুর্গা পুজোর (Durga Puja) দিন ক’য়েক আগে থেকেই বাঁকুড়া, বীরভূম, মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকিরা শহরাঞ্চলে আসতে শুরু করেন। বিভিন্ন পুজো মন্ডপে পুজোর চার পাঁচ দিন ঢাক বাজিয়ে তাঁরা ফিরে যান তাঁদের সেই প্রত্যন্ত পাড়াগাঁয়ে। তবে ঢাকিদের কিন্তু উৎসব শুরু হয় বিসর্জনের পরে একাদশীর দিন থেকেই, কারণ, পুজোয় যা কিছু রোজগার হয়, তাই দিয়ে তাঁরা তাঁদের বাসায় ফিরে গিয়ে স্ত্রী সন্তানদের জন্য নতুন শাড়ি, জামাকাপড় কিনে দেন। ঢাক তৈরি করতে আম কাঠের গুঁড়ি, বাঁশের তৈরি চাঁক, ছোট আকারের রিং, ঢাক ছাইবার চামড়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ঢাকের উৎপত্তি হল কিভাবে ? পৌরাণিক মতে দ্বিতীয় প্রস্তর যুগে এই বাদ্যযন্ত্রের প্রথম আবির্ভাব ঘটে। সেইসময় এর নাম ছিল দামামা, যা বাজিয়ে মানুষ হিংস্র জানোয়ারের হাত থেকে রক্ষা করতো নিজেকে এবং অপরকে হুঁশিয়ারি দিত। সময় থেমে থাকেনি। তারপর বয়ে গেছে অনেক জল! রাজা বাদশার আমলে সৈন্যদের যুদ্ধে রত হবার নির্দেশ দেওয়া হত এই বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে। কালক্রমে এটি আকারে এবং দুটি ভিন্ন রূপে বিভক্ত হয়। প্রথমটা হল রণবাদ্য এবং দ্বিতীয় টি হল ঢ্যাড়া বা ঢাক! তদানীন্তন সময়ে রাজারা বিশেষ কোনও বার্তার প্রজাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতেন এই ঢ্যাড়া পিটিয়ে। ত্রেতা যুগে শ্রীরামচন্দ্র সীতা উদ্ধারকালে এবং রাবণ বধের জন্য যে অকাল বোধন করেছিলেন, সেই বার্তা সমস্ত দেবকুলে পৌঁছে দিতে এবং দেবতাদের আমন্ত্রণ জানাতে এই বিশেষ বাদ্যযন্ত্র ঢাকের সাথে কাঁসরেরও ব্যবহার করেছিলেন।
