



পিনাকী চৌধুরী ★ কলকাতা : প্রস্ফুটিত শিউলি ফুলের সুবাস, আন্দোলিত কাশফুল যেন জানান দিচ্ছে দেবীর বোধনের দিন আসন্ন। কিন্তু এই বোধন শব্দের অর্থ কী? বোধন শব্দের অর্থ হচ্ছে জাগরণ! পুরাণ অনুসারে পৃথিবীর একবছর হচ্ছে স্বর্গের একদিনের সমান। আর সূর্যের উত্তরায়ণ হল দেবতাদের দিন, আর দক্ষিণায়ণ হল দেবতাদের রাত্রিকাল। বিষুবরেখা থেকে সূর্য যখন ক্রমশ উত্তরে গমন করে তখন সেটা হল সূর্যের উত্তরায়ণ। ছয় মাস ধরে চলে এই উত্তরায়ণ আর ছয় মাস ধরে চলে দক্ষিণায়ণ। বিষুবরেখা থেকে সূর্য যখন ক্রমশ দক্ষিণ দিকে গমন করে, তখন সেটা হল সূর্যের দক্ষিণায়ণ। প্রসঙ্গত, উত্তরায়ণের সময় দেবতারা জাগ্রত থাকেন এবং এই সময়কালে দেবতাদের পুজো করবার বিধি প্রচলিত রয়েছে শাস্ত্র মতে। আর সূর্যের দক্ষিণায়ণ হল দেবতাদের রাত্রিকাল। এইসময় দেবতারা নিদ্রায় মগ্ন থাকেন। এইসময় দেবতাদের পুজো করবার বিধান নেই। তাই শরৎকালের এই দেবী দুর্গার পুজোকে অকাল বোধন আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
শরৎকালে চলে সূর্যের দক্ষিণায়ণ। শাস্ত্র অনুযায়ী এটি দেবতাদের রাত্রিকাল, তাঁরা নিদ্রিত অবস্থায় থাকেন। সুতরাং এই অকালে পুজো করতে হলে দেবীকে প্রথমেই জাগরিত করতে হয়।এই প্রক্রিয়াটি বোধন নামে সুপরিচিত। কালিকাপুরাণ অনুসারে রাবণ বধ করে রামচন্দ্র সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে দেবী দুর্গার আশীর্বাদ লাভ করতে এই অসময়ে দেবী দুর্গার পুজো করেছিলেন রামচন্দ্র। আর রামচন্দ্রকে সাহায্য করতে রাত্রিকালে দেবীর বোধন করেছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা। ঘুমন্ত দেবীকে জাগ্রত করবার জন্য ব্রহ্মা দেবীস্তুতি করেছিলেন- ‘ হে দেবী, রাবণ বধের জন্য রামকে অনুগ্রহ করুন এবং জাগ্রতা হোন !’ ব্রহ্মার এই অনুরোধে দেবী বেলগাছের একটি পাতায় কুমারী কন্যার রূপে আবির্ভূত হন। দেবীর সেই আবির্ভাবকে স্মরণ করে আজও তাঁর পুজোর প্রাক্কালে তাঁকে জাগ্রত করতে বেল গাছে উদ্ধোধন করবার যে রীতি, তাই হল বোধন। দেবী দুর্গার বোধনের পরে হয় আমন্ত্রণ ও অধিবাস।
ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Sasraya News Sunday’s Literature Special | Issue 32, September 15, 2024 | সাশ্রয় নিউজ রবিবারের সাহিত্য স্পেশাল | সংখ্যা ৩২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
