Sasraya News

Digha Ratha Yatra | দীঘার রথযাত্রায় ইতিহাসের সাক্ষী, জগন্নাথদেবের আরতি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 

Listen

শংকর বৈরাগী ★ সাশ্রয় নিউজ, দীঘা : নির্ধারিত সময় মেনেই শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ দীঘার (Digha) রথের রশিতে প্রথম টান পড়ল (Digha Ratha Yatra)। রথযাত্রার এই বিশেষ মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোনার ঝাড়ু উপহার দিয়েছিলেন আগেই। সেই সোনার ঝাড়ু দিয়েই রথযাত্রার প্রারম্ভে রাস্তা ঝাঁট দিয়ে রথের সূচনা করলেন তিনি। এরপর তিনটি রথের সামনেই আরতি করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তার দুই ধারে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত ব্যারিকেড। আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, “রথযাত্রার সময়ে রাস্তায় কোনওভাবেই ভিড় হতে দেওয়া হবে না। পদপিষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকায় এই ব্যবস্থা।” সেই মতোই প্রশাসন ব্যারিকেডের বাইরে থেকে দর্শনার্থীদের রথদর্শনের সুযোগ করে দেয়।দীঘার রথযাত্রা ঘিরে মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই রথযাত্রার জন্য দীঘার রাস্তাঘাটে বাড়তি ভিড় লক্ষ্য করা যায়। দুপুর আড়াইটে নাগাদ রথের রশিতে টান পড়তেই, কীর্তনের ঢেউ উঠল জনসমুদ্রে। এক ঘণ্টার মধ্যেই রথ অর্ধেক পথ অতিক্রম করে। রাস্তার দু’পাশে উপচে পড়া ভিড় দেখেও প্রশাসনের প্রস্তুতি যথাযথ বলেই মনে করেন অনেকেই। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল দাস (Shyamal Das) জানালেন, ‘এবার রথে মুখ্যমন্ত্রীকে আরতি করতে দেখা আমাদের কাছে বিরাট পাওনা। নিরাপত্তার ব্যবস্থাও বেশ ভাল ছিল।”

উল্লেখ্য, রথযাত্রার নিয়ম মেনেই বলভদ্র (Balabhadra), সুভদ্রা (Subhadra) এবং সুদর্শনকে (Sudarsan) প্রথমে রথ থেকে নামিয়ে আনা হয় মাসির বাড়িতে। এরপর কীর্তন সহযোগে আনা হয় জগন্নাথদেবকে (Jagannath Deb)। জগন্নাথদেবের আরতি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মুহূর্তে তাঁকে বিশেষ আবেগপ্রবণ দেখায়। আরতি শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী কিছুক্ষণের জন্য ভক্তদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দীঘার রথযাত্রা বাংলার গর্ব। হাজার হাজার মানুষ আজ এখানে এসেছেন। সবার মঙ্গল হোক। বাংলার শান্তি ও সুস্থতা কামনা করি।” প্রসঙ্গত, রথযাত্রার জন্য সৈকত নগরী দীঘায় নিরাপত্তা আঁটসাঁট ছিল। এক আধিকারিক জানান, “দীঘার মতো পর্যটনকেন্দ্রে এই ধরনের উৎসবকে ঘিরে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থাকায় নিরাপত্তার বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।” অন্যদিকে, অন্যান্য বছরগুলির তুলনায় এদিনের দীঘায় মানুষের উপস্থিতি বেশি বলেই জানালেন স্থানীয় ব্যবসায়ী অরূপ পণ্ডা (Arup Panda)। তাঁর কথায়, “এবার পর্যটকও বেশি এসেছে। দোকানপাট, হোটেল, রেস্তোরাঁ সবেতেই ভিড়। রথযাত্রা আমাদের ব্যবসার জন্যও বড় উৎসব।”

রথযাত্রা উপলক্ষ্যে দীঘায় বেশ কিছুদিন ধরেই প্রস্তুতি চলছিল। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঝাড়াই-বাছাই, আলোকসজ্জা এবং রাস্তা মেরামতির কাজ শেষ হয় সময়মতো। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে উল্লেখ, ফেরার দিন অর্থাৎ উল্টোরথেও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এদিন আরতি শেষে মুখ্যমন্ত্রী সেখান থেকে নিজের হোটেলের উদ্দেশে রওনা দেন। তবে যাওয়ার আগে তিনি দীঘাবাসী ও ভক্তদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন। উপস্থিত এক মহিলা ভক্ত কৃষ্ণা পাল (Krishna Pal) জানালেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে এত কাছ থেকে আরতি করতে দেখা আমাদের জীবনে প্রথম। আমরা চাই উনিও সুস্থ থাকুন, আমাদের রাজ্যও ভাল থাকুক।” দিঘার রথযাত্রা এদিন শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকেও এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করল। মুখ্যমন্ত্রীর আরতি, প্রশাসনের সচেতনতা ও মানুষের অবিরাম উচ্ছ্বাস সব মিলিয়ে দিনভর উত্সবের রঙে রাঙানো থাকল দীঘা।

ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Rath Yatra : রাজসাজে জগন্নাথ, মাহেশে নবযৌবন উৎসব ঘিরে ভক্তিময় উন্মাদনা

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read